এ বার ফাঁসির রায় শুনলেন একাত্তরে চট্টগ্রামের মূর্তিমান আতঙ্ক, আল বদর বাহিনীর কম্যান্ডার মির কাসেম আলি। সরকার পক্ষের আনা খুন, ধর্ষণ, গণহত্যা, লুঠপাট, ডাকাতির ১৪টি অভিযোগের ১০টিই প্রমাণিত বলে ঘোষণা করে জামাতে ইসলামির এই প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতাকে প্রাণদণ্ড ও ৭২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত।
তিন দিন আগেই জামাতের আমির খালেদা জিয়ার সরকারের শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামির প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত। তাদের ডাকা হরতালের মধ্যেই আজ জামাতের আরও এক শীর্ষ নেতাকে চরম শাস্তি দিল আদালত। আর এখানেই শেষ নয়। কালই আর এক জামাত নেতা কামরুজ্জামানের আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। গণহত্যার দায়ে তাঁকেও প্রাণদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। কুখ্যাত তিন রাজাকার শিরোমণির বিচারের দিকেই এখন নজর সকলের।
একাত্তরে চট্টগ্রামের একটি হোটেল দখল করে নির্যাতন কেন্দ্র খুলেছিলেন জামাতের ছাত্র সংগঠনের তৎকালীন প্রধান মির কাসেম আলি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলা বিভিন্ন বয়সের মানুষকে তুলে এনে এখানে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে খুন করা হতো। দেহ ফেলে দেওয়া হতো কর্ণফুলি নদীতে। এলাকার সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুঠপাটেও নিজের বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মির কাসেম। স্বাধীনতার পরে তিনি দেশ ছেড়ে পালালেও জিয়াউর রহমানের আমলে ফের দেশে ফেরেন। জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি তিনি এই মৌলবাদী দলটির প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসেবে উঠে আসেন। ইবনে সেনা ট্রাস্টের ডিরেক্টর হওয়ার পাশাপাশি কেয়ারি শিল্পগোষ্ঠী ও দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনেরও মালিক ছিলেন মির কাসেম। এ দিন রায় পড়ার সময়ে তিনি তাচ্ছিল্যের হাসি মুখে নিয়ে বসে থাকলেও তা শেষ হওয়া মাত্র উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “সাজানো আদালত, মিথ্যে মামলা, মিথ্যে সাক্ষ্য, কালো আইন ও ফরমায়েসি রায়!” তিন সপ্তাহের মধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা যাবে।
রায় উপলক্ষে আজ রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষীদেরও মোতায়েন করা হয়। তবে জামাতের ডাকা হরতালে আজ দেশের কোথাওই কোনও সাড়া মেলেনি। শুধু দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy