বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের প্রধানকে ঢাকায় ডেকে পাঠিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসের প্রধানকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে, কিছু দিন আগেই নিরাপত্তা বেষ্টনী এড়িয়ে ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে প্রবেশ করেন কয়েক জন বিক্ষোভকারী। কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনেও সম্প্রতি বিক্ষোভ হয়েছে। যদিও উপদূতাবাসের থেকে কিছুটা দূরেই বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় কলকাতা পুলিশ। ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, বৃহস্পতিবারই ঢাকায় ফিরেছেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের প্রধান। ত্রিপুরায় সহকারী দূতাবাসের কর্তারও বৃহস্পতিতেই বাংলাদেশে ফেরার কথা।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, কলকাতা এবং আগরতলার পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্যই দুই কূটনৈতিক মিশনের কর্তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। তার আগে দুই কূটনৈতিক মিশনের প্রধানের থেকে রিপোর্ট নিতে চায় ইউনূস সরকারের বিদেশ মন্ত্রক।
গত সোমবার ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে নিলম্বিত করা হয়েছে তিন পুলিশকর্মীকে। ক্লোজ় হয়েছেন এক ডেপুটি পুলিশ সুপার। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র ‘প্রথম আলো’কে জানিয়েছে, মঙ্গলবারই দুই কূটনৈতিক মিশনের কর্তাকে দেশে ফিরে যেতে বলে ইউনূসের প্রশাসন। কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিকদার মহম্মদ আশরাফুর রহমান ঢাকায় ফিরে তদারকি সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। কলকাতার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর।
গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাস অভিযানের ডাক দেয় একটি সংগঠন। ওই কর্মসূচির জন্য শুরু থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। একাধিক ব্যারিকেড প্রস্তুত রাখা হয়। মিছিল এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতেও জড়িয়ে পড়েন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। বিক্ষোভ ঠেকাতে গিয়ে মাথা ফাটে এক পুলিশকর্মীর। কপালে চোট পান তিনি। তবে বিক্ষোভকারীদের বাংলাদেশ উপদূতাবাসের অনেক আগেই আটকে দেন পুলিশকর্মীরা। শেষে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধিদলকে উপদূতাবাসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁরা ভিতরে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসেন।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। সম্প্রতি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। তার পর থেকেই দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং চিন্ময়কৃষ্ণের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বলেছে ভারত। অন্য দিকে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের বক্তব্য, সংখ্যালঘুরা সে দেশে নিরাপদেই রয়েছেন। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ পছন্দ করছে না বাংলাদেশের প্রশাসন।
এরই মাঝে গত সোমবার এক দল উত্তেজিত জনতা ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে প্রবেশ করে। ওই ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিবৃতি দেয় বিদেশ মন্ত্রক। ঘটনার নিন্দা করে কেন্দ্র। বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, কোনও দেশের দূতাবাস বা উপদূতাবাসকে নিশানা করা কাম্য নয়, তা যে পরিস্থিতিই হোক না কেন। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধিও করা হয়। অন্য দিকে ত্রিপুরার ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ভারত বিরোধী স্লোগান ওঠে সোমবার রাতে। তার পরে সে দেশেও ভারতীয় দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy