দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের দফতর থেকে সোমবার বার হচ্ছেন বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরুল ইসলাম। ছবি: পিটিআই।
ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি স্থিতিশীল। সেখানে কোনও উত্তেজনা নেই বলে দাবি করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, সীমান্তে আর কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে না ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সম্প্রতি বাংলাদেশ দাবি করে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের খোলা অংশে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে বিএসএফ। এর পরে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠায় মুহাম্মদ ইউনূস সরকার। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সোমবার দিল্লি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠানো হয়। এ বার বাংলাদেশের তরফে জানানো হল, সীমান্তে কোনও উত্তেজনা নেই।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘‘বিএসএফ আর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে না। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী মাসে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এবং বিএসএফের বৈঠক রয়েছে। সেখানে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’’
ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল কাঁটাতার বিহীন রয়ে গিয়েছে এখনও। প্রায় ৫৩৮ কিলোমিটার এলাকায় কোনও কাঁটাতার নেই। সম্প্রতি ঢাকা দাবি করেছে, ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কিছু অঞ্চলে বিএসএফ কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করেছে। ইউনূস সরকারের আরও দাবি, এর ফলে ওই অঞ্চলে ‘শান্তিভঙ্গ’ হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও ভঙ্গ হচ্ছে।
এই আবহে রবিবার ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে ডেকে পাঠায় বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব জসীমউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদন অনুসারে, জসীমউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পর প্রণয় জানান, কাঁটাতারের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। সীমান্তে অপরাধদমনের ক্ষেত্রেও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করবে বলে জানান তিনি। প্রণয় বলেন, “নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা আশা করি, সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে সেই বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে।” প্রণয় আরও জানিয়েছেন, অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিত করতে ভারতের যে লক্ষ্য রয়েছে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে। পাশাপাশি, চোরাচালান, অপরাধীদের আসা-যাওয়া এবং পাচারের চেষ্টা রোখার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে তাঁদের।
তার পরেই রবিবার বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করে বিদেশ মন্ত্রক। পরে বিবৃতি দিয়ে তারা বলে, ‘‘ভারতের তরফে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কাঁটাতার-সহ সীমান্তের সমস্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে দুই সরকার এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে যে প্রোটোকল রয়েছে, তা ভারত বরাবর মেনে চলে। আপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিত করতে ভারত তার দায়বদ্ধতার কথা বাংলাদেশকে মনে করিয়ে দিয়েছে। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, চোরাচালান, জঙ্গিদের আনাগোনার মতো যে সব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলির সমাধান করতে নয়াদিল্লি বদ্ধপরিকর। সীমান্তকে নিরাপদ রাখতে কাঁটাতার, যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। ভারত আশা করে, প্রতিটি বিষয়কে বাংলাদেশ বাস্তবায়িত করবে। সীমান্তে অপরাধ রুখতে যৌথ সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ বার বাংলাদেশের তরফে জানানো হল, সীমান্তে স্থিতাবস্থা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy