বালোচিস্তানের মানবাধিকার কর্মী মেহরান বালোচকে গ্রেফতার করল পাকিস্তানের পুলিশ। শনিবার সকালে পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর। বালোচদের অধিকারের দাবিতে এবং তাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন দিন ধরে পাকিস্তানে সরব মেহরান।
তাঁর গ্রেফতারির বিষয়ে পাকিস্তানের প্রশাসন এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। তবে পাকিস্তানের পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক নাম গোপন রাখার শর্তে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে গ্রেফতারির কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মেহেরান-সহ ১৭জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে সাত জন মহিলাও রয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কী কী ধারায় মামলা করা হবে, তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে অন্যতম পরিচিত মুখ মেরহান। বালোচিস্তান প্রদেশে বিচার-বহির্ভূত হেনস্থা, গ্রেফতারি এবং হত্যার অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরে পাকিস্তান প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি কয়েক জন বালোচকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা সংস্থা আটক করেছে বলে অভিযোগ তোলে তাঁর সংগঠন। তাঁদের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার থেকে কোয়েটায় বালোচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসেন মেহরান এবং তাঁর সহযোগীরা। শনিবার সকাল জানা যায়, তাঁদের আটক করেছে কোয়েটার পুলিশ। পরে সংবাদ সংস্থা এএফপি পুলিশ সূত্রে জানায়, তাঁদের গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার বালোচিস্তানের সংগঠন বালোচ সংযুক্ত কমিটি এবং পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সময়ে তিন জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সংগঠনের। এ ছাড়া আরও ১৩ জন জখম হয়েছেন বলে দাবি তাঁদের। অন্য দিকে প্রশাসনের দাবি, ১০ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবারের ওই ঘটনার প্রতিবাদে বালোচ সংযুক্ত কমিটির নেত্রী মেহরান শনিবার বালোচিস্তান জুড়ে বন্ধের ডাক দেন। পাশাপাশি কোয়েটা শহরে ধর্নায় বসারও সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বালোচিস্তানের ঘটনায় পাকিস্তানের প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে ইমরান খানের দল পিটিআই-ও। শুক্রবার বালোচিস্তানের ঘটনাকে “শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের উপর মাত্রাতিরিক্ত এবং নৃশংস শক্তিপ্রয়োগ’ বলে ব্যাখ্যা করছে তারা। পিটিআই নেতা শেখ ওয়াক্কাস আক্রমের কথায়, “অত্যাচারী শাসক ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মরিয়া চেষ্টায় ফের বর্বরতার সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।” এক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।