অযোধ্যা। ফাইল চিত্র। পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে পদক্ষেপের পরই যেমনটি করা হয়েছিল, এ বারও ঘটল তেমনটি।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও অন্যান্য দেশকে ওই পদক্ষেপের বিষয়ে ওয়াকিবহাল করেছিল ভারত। অযোধ্যা জমি মামলার রায় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, বিশ্বের বহু দেশ এই বিষয়টির দিকে নজর রেখে চলেছে। এই কথা মাথায় রেখেই ভারতের তরফের বিভিন্ন দেশকে জানানো হল, দেশে ঠিক কী হচ্ছে। ঠিক কী বলছে সুপ্রিম কোর্ট। ভারত কী ভাবে শান্তির পথে মিলেমিশে এগোতে চাইছে।
রাশিয়া, ফ্রান্স, ইরান-সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেদের সঙ্গে আজ এ বিষয়ে কথা বলেন বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ সারির কর্তারা। অযোধ্যা রায় ও পরবর্তী পরিস্থিতির কথা জানান তাঁদের। বাদ যাননি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও উপসাগরীয় দেশগুলির রাষ্ট্রদূতেরাও। কিছু ক্ষেত্রে বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে নিজে কথা বলছেন। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে আমেরিকার সঙ্গেও। ভারতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের প্রতিনিধি হিসেবে ডোমিনিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূত হান্স ডানেনবার্গ কাস্তেলানোস বলেন, ‘‘বিষয়টি একান্তই ভারতের হলেও তাদের বিদেশ মন্ত্রক যে ভাবে আমাদের সব কিছু বিস্তারিত জানাল ও বুঝিয়ে বলল, আমরা তার প্রশংসা করছি।’’
আরও পড়ুন:দিল্লিকে দেখেও কি আমাদের হুঁশ ফিরবে না
সাধারণ ভাবে অন্য দেশের আদালতের রায় নিয়ে কথা বলাটা কূটনৈতিক অসৌজন্য শুধু নয়, এটা সেই দেশের সার্বভৌমত্বেও আঘাত। কিন্তু পাকিস্তান তার ধারেনি। গত কালই তারা প্রশ্ন তুলেছে, বেছে বেছে করতারপুর করিডর উদ্বোধনের দিনটিকেই কেন অযোধ্যা জমি মামলার রায় দানের জন্য বেছে নেওয়া হল। প্রশ্নটি তুলেছেন তাদের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের প্রশ্নে পাকিস্তানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সমালোচনা করেছিল তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়া। অযোধ্যা রায়ের ক্ষেত্রেও দেখা গেল তারা এক শিবিরে। পাকিস্তানের মতো এই দু’দেশের সংবাদমাধ্যমই ওই রায়কে ভারতীয় মুসলিমদের বিরোধী বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পরে আমেরিকা, এমনকি আরব দেশগুলিরও সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে বিফল হয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অযোধ্যা রায় নিয়েও আমেরিকা সংযত প্রতিক্রিয়াই জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের সব নেতাই কাল মন্তব্য করেছেন, এই রায়কে কারও হার বা জিত হিসেবে দেখা ঠিক নয়। মোদী ডাক দিয়েছেন সকলকে নিয়ে চলার। কেউ যেন পিছিয়ে না পরে, সে দিকে যত্নশীল হওয়ার। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং অন্য মুসলিম নেতরাও একে জয়-পরাজয় হিসেবে না-দেখার কথা বলে শান্তি বজায়ে রাখার কথাই বলেছেন এক সুরে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভারতীয় নেতারা শান্তি বজায়ে রাখা ও উত্তেজক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা বলছেন। আমরা এর প্রশংসা করছি।’’
আমেরিকার ও অন্য্যন্য পশ্চিমি প্রথম সারির সব ক’টি সংবাদমাধ্যমই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে অযোধ্যা রায়ের খবর। হারজিতের প্রশ্ন না তুলেও, এই রায় যে হিন্দুদের দীর্ঘদিনের দাবি মেটানোর রাস্তা সুগম করে দিল, সেটা সকলেই উল্লেখ করেছে। আমেরিকাবাসী হিন্দু ভারতীয়দের সংগঠন এইচএএফ জানিয়েছে, এই রায়কে তারা হিন্দু-মুসলিম, উভয় পক্ষের জয় হিসেবে দেখছে। ‘ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াস্পোরা স্টাডিজ়’-এর বক্তব্য, ‘‘এই রায় ভারসাম্যের। একে স্বাগত
জানাচ্ছি।’’ তবে সে দেশের মুসলিমদের সংগঠনগুলির তরফে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy