ঢাকার নয়া পল্টনে বুধবার বিএনপি-র সমাবেশ। ছবি: বুলবুল আহমেদ।
ঢাকার রাস্তায় এক কিলোমিটারের মধ্যে জনসভা ডেকে শক্তি প্রদর্শন বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী বিএনপি-র। পরস্পরের প্রতি এই আস্ফালনে বুধবার নাকাল হল জনজীবন। ছোটখাটো সংঘর্ষে কয়েক জন জখম হওয়া ছাড়া বড় কোনও অঘটন যে ঘটেনি, সে জন্য পুলিশ ও ঢাকাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তবে দুই জনসভা থেকেই যে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে এই সংঘর্ষের বীজ রয়ে গেল বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিএনপি-র ‘এক দফা’— শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পরেই নির্বাচন। পাল্টা শাসক দলের ‘এক দফা’— শেখ হাসিনা ছাড়া নির্বাচন নয়।
মাস ছয়েক পরে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে বিএনপি এবং তাদের কিছু সহযোগী দল দাবি করেছে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা তা মানবে না। এই সরকারের ইস্তফার পরে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই সরকার নির্বাচন পরিচালনা করবে। এ দিন সেই দাবিতেই নয়া পল্টনে নিজেদের দফতরের সামনে জনসভার ডাক দিয়েছিল বিএনপি। এই দাবির সমর্থনে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে আরও ৭টি জায়গায় সমাবেশের ডাক দিয়েছিল সহযোগী ১১টি দল ও জোট। পাল্টা হিসাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ ফটকের সামনে ‘শান্তি সমাবেশ’-এর ডাক দেয় শাসক দল আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর কমিটি।
আওয়ামী লীগের সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আর কোনও অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ছাড়া হবে না। আইনি ভাবেই সে সুযোগ নেই। বিশ্বের সব দেশে নির্বাচিত সরকারকে রেখে নির্বাচন কমিশন সাধারণ নির্বাচন করায়। বাংলাদেশেও তা-ই হবে। শেখ হাসিনা বা সরকারের পদত্যাগের কোনও কারণ নেই।” কাদেরের কথায়— “এর পরে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে ভাল, না নিলে আরও ভাল!” আওয়ামী লীগের সমাবেশ থেকে ‘এক দফা’ প্রস্তাব নেওয়া হয়, ‘শেখ হাসিনা ছাড়া নির্বাচন নয়’।
পাশাপাশি বিএনপির জনসভায় দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, “২০১৪ ও ২০১৮-র জালিয়াতির নির্বাচন প্রমাণ করেছে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব। তাই আমাদের এক দফা দাবি, এই সরকারকে ইস্তফা দিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। জালিয়াতির ভোটে তৈরি অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে।” ফখরুল জানান, সহয়োগী দলগুলিকে নিয়ে তাঁরা এই ‘এক দফা’ দাবিতে গণ আন্দোলন গড়ে তুলবেন। তার প্রথম কর্মসূচি হিসাবে মঙ্গলবার ঢাকা জুড়ে পদযাত্রা করা হবে। ফখরুলের দাবি, “এই পদযাত্রায় সরকারের পতন ত্বরান্বিত হবে।”
তবে দুই পক্ষের এই ‘এক দফা’য় সকাল থেকেই দফারফা হয়েছে ঢাকাবাসীর। মিছিলের যানজটে আজই পদযাত্রায় নামতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy