মাদক সংক্রান্ত অপরাধে দুই অস্ট্রেলীয়-সহ আট জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় নজিরবিহীন কূটনৈতিক পদক্ষেপ করল অস্ট্রেলিয়া।
বুধবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যান্ড্রু চান এবং মিউরান সুকুমারানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক আর স্বাভাবিক নেই। জাকার্তায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজই সাংবাদিক বৈঠক করে টোনি এই ঘটনাকে ‘অপ্রয়োজনীয় এবং নির্দয়’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জুলি বিশপ যৌথ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তাঁদের আশা ছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার অল্পবয়সি ওই যুবকদের ক্ষমা করবে। দীর্ঘ কারাবাসে ওরা খুব পরিশ্রম করেছে, নিজেদের শোধরানোর যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি সহবন্দিদের জীবনেও বদল এনেছে। ওই বিবৃতিতে সরকার দাবি করেছে, ‘‘দীর্ঘ কারাবাসই ওদের জন্য যথেষ্ট শাস্তি ছিল। নিজেদের নাগরিকদের জন্য ইন্দোনেশিয়া সচরাচর যে আর্জি জানায়, তা তারা বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে দেখাতে পারল না।’’ সেখানে জানানো হয়েছে, ‘‘আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অ্যান্ড্রু এবং মিউরানের মৃতদেহ তাঁদের পরিবারের কাছে এসে পৌঁছলে এই নিয়ে আমরা আলোচনা করব। বন্ধ থাকবে কূটনৈতিক স্তরের কথাবার্তা।’’
প্রসঙ্গত, মাদক সংক্রান্ত অপরাধে মোট ন’জনকে আগেই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার। তাদের মধ্যে চার নাইজেরীয়, এক ব্রাজিলীয়, এক জন ইন্দোনেশীয় এবং দুই অস্ট্রেলীয় নাগরিককে কাল রাতে ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারা হয়। শেষ মুহূর্তে স্থগিত রাখা হয় মেরি জেন ভেলোসা নামে এক মহিলার মৃত্যুদণ্ড। এই নিয়ে এ বছরেই দ্বিতীয় বার এমন মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা ঘটল ইন্দোনেশিয়ায়। গত জানুয়ারিতেই এক ব্রাজিলীয়-সহ ছ’জনকে একই অপরাধে গুলি করে মেরেছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার।
তার পর থেকেই আন্তর্জাতিক স্তরে এই নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠন এবং রাষ্ট্রনায়কেরাও ওই অপরাধীদের প্রাণদণ্ড স্থগিত রাখার আর্জি জানান। তবে গত বছর অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো দায়িত্ব নিয়েই ঘোষণা করেন, দেশে মাদক সংক্রান্ত অপরাধ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে জাতীয় স্তরে তৎপরতার প্রয়োজন। তখনই ৬৪ জনের ক্ষমাভিক্ষার আর্জি খারিজ করেন তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার এই পদক্ষেপে সুর চড়িয়েছে ব্রাজিলও। সে দেশের প্রশাসন জানিয়েছে, এই নিয়ে তিন মাসের ব্যবধানে তাদের দুই নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দিল ইন্দোনেশিয়া। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রউসেফের ব্যক্তিগত আর্জিতেও কর্ণপাত করেনি তারা। জানুয়ারিতেই সরকারি নির্দেশে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জাকার্তা ছেড়েছেন। গত কালের ঘটনার পরে ওই জায়গায় কোনও রাষ্ট্রদূতকে নতুন করে নিয়োগের যে কোনও প্রশ্নই নেই, তা-ও জানিয়েছে ব্রাজিল।
একটি বিবৃতি জারি করে ব্রাজিলের বিদেশমন্ত্রী সেরগেই ফ্রাঙ্কা ডেনিস বলেন, ‘‘আমাদের আর্জির কোনও জবাব আসেনি। প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। এ বার আমরা ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে কী ভাবে থাকব, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy