Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সারা বিশ্বেই ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা, সৌদির তেল ভাণ্ডারে জঙ্গিহানায় ব্যাহত হতে পারে সরবরাহ

মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো এই হামলার পিছনে সরাসরি ইরানকেই দায়ী করেছেন।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
রিয়াধ শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

সৌদির তেলভাণ্ডারে জঙ্গি হানায় সারা বিশ্বে তেল সরবরাহে টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হল। সৌদির শক্তি মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবারের হামলার পরে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন দিনে ৫০ লক্ষ ব্যারেল কমেছে। যা বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের ৫ শতাংশ। এর ফলে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আজ সকালে বাজার খোলার পরে সৌদির স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ৩ শতাংশ কমে যায়।

গত কাল ড্রোন হামলা চালিয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘আরামকো’-র একটি তেলের খনি ও বিশ্বের সব চেয়ে বড় তেল শোধনাগার কেন্দ্রে আগুন লাগিয়ে দেয় ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিরা। আজ মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো এই হামলার পিছনে সরাসরি ইরানকেই দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এই হামলা যে ইয়েমেনের মাটি থেকেই হয়েছে তেমন কোনও প্রমাণ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সরবরাহে যাতে ভাটা না পড়ে, তার জন্য মিত্র দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবে আমেরিকা। ইরান এই আগ্রাসনের শিক্ষা পাবে।’’ জবাবে ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাবী বলেছেন, ‘‘এরকম অর্থহীন ও মিথ্যে অভিযোগ ধারণাতীত।’’ তিনি দাবি করেন, ইরানের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করতেই এই রকম মন্তব্য করেছে আমেরিকা। যাতে ভবিষ্যতে ইসলামি দেশটির উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে সুবিধা হয়। সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন জানিয়েছেন, এই ‘সন্ত্রাস হানার’ জবাব দিতে তাঁরা ‘ইচ্ছুক ও সক্ষম’। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘বদলা নিতে’ এই মুহূর্তে ইরানের তেলভাণ্ডারে সৌদির হামলার সম্ভাবনা নেই। কারণ, ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না সৌদি।

ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে গত বছর দেশটির উপরে একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে। জুনে আবার তাদের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ায় একটি মার্কিন ড্রোনকে গুলি করে নামানোর কথা ঘোষণা করে তেহরান। ক্ষিপ্ত আমেরিকা হামলা চালানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে আসে। আজ আমেরিকার তোপের জবাবে ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাবী বলেছেন, ‘‘তেহরানের উপরে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ বাড়ানোর যে নীতি আমেরিকা নিয়েছিল তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন ‘সর্বোচ্চ মিথ্যা’ বলার নীতি নিয়েছে।’’ তেহরানকে দুষলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে ট্রাম্পের দেখা করার সম্ভাবনা এখনও বাতিল করছে না হোয়াইট হাউস।

একটি মার্কিন দৈনিকের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে গত কালের হামলায় বিশ্বের সব চেয়ে বড় তেল শোধনাগার আবকাইকের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকের ১৫টি নির্মাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দক্ষিণে অর্থাৎ ইয়েমেনের দিকে নয়। যে কারণে, হামলাটি ইরান বা তাদের শিয়া সঙ্গী ইরাকের দিক থেকে হওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে মার্কিন বিশেষজ্ঞেরা। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ একটি রিপোর্টে জানিয়েছিল, হুথিরা যে ‘কাতেফ-১’ আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করে তা ইরানের ‘আবাবিল-টি’ ড্রোনের ‘হুবহু নকল’। প্রযুক্তি তত উন্নত না হওয়ায় এই ড্রোনটি খুব বেশি হলে ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে সক্ষম। ফলে সৌদি-ইয়েমেনের সীমান্ত থেকে ড্রোন পাঠালেও তা ৭৭০ কিলোমিটার পেরিয়ে নিকটতম লক্ষ্যবস্তু খুরাইস খনিতে আঘাত করতে পারবে না। ইরাক আজ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের মাটি ব্যবহার করে এই হামলা হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Saudi Arabia Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy