Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
International News

‘পরিবেশ নেই’, জার্মানিতে মোদী-চিনফিং বৈঠক হবে না: ঘোষণা বেজিংয়ের

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ত্রিদেশীয় সীমায় চিন আগ্রাসন দেখাচ্ছে বলে ভারত এবং ভুটানের অভিযোগ। সীমানা চিহ্নিত না থাকার সুযোগ নিয়ে ভুটানের এলাকায় ঢুকে চিনা বাহিনী রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল বলে খবর।

সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার মাধ্যমে ভারতকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেওয়া শুরু করল চিন।— ফাইল চিত্র।

সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার মাধ্যমে ভারতকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেওয়া শুরু করল চিন।— ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ১৮:৩৬
Share: Save:

ভারত-চিন সঙ্কট আরও ঘনীভূত হওয়ার ইঙ্গিত মিলল। সিকিম সীমান্তে দু’দেশই সামরিক তৎপরতা বাড়ানোয় যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, কূটনৈতিক পথে তা প্রশমনের চেষ্টা চলছিল। কিন্তু সে পথও যে ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে, বেজিংয়ের ঘোষণায় তার আভাস মিলল। এ বারের জি-২০ শিখর সম্মেলনের ফাঁকে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে না। বৃহস্পতিবার এমনই জানাল বেজিং।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ত্রিদেশীয় সীমায় চিন আগ্রাসন দেখাচ্ছে বলে ভারত এবং ভুটানের অভিযোগ। সীমানা চিহ্নিত না থাকার সুযোগ নিয়ে ভুটানের এলাকায় ঢুকে চিনা বাহিনী রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল বলে খবর। ভুটান সরকারি ভাবে এর প্রতিবাদ জানায়। ভারতীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ আটকে দেয়। সেই থেকেই ডোকা লা অঞ্চলে মুখোমুখি অবস্থানে দু’দেশের বাহিনী। দু’পক্ষই সীমান্তে বিপুল সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে।

ভারত-চিন সীমান্তে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দু’দেশের বাহিনী যে ভাবে মুখোমুখি অবস্থানে, তাতে কূটনৈতিক পথে সমাধান না হলে সামরিক সঙ্ঘাতের আশঙ্কা প্রবল। ছবি: এএফপি।

চিনের দাবি, ভুটানের এলাকায় নয়, চিন নিজের এলাকাতেই রাস্তা তৈরি করছিল। ভারতীয় বাহিনীই চিনা এলাকায় ঢুকেছে বলে বেজিংয়ের অভিযোগ। কিন্তু নয়াদিল্লি বার বারই বেজিংয়ের দাবি নস্যাৎ করছে। চিন সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে। ভারতও জানিয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় বাহিনী প্রস্তুত। কিন্তু এই হুমকি-পাল্টা হুমকির পাশাপাশি কূটনৈতিক পথে রফায় পৌঁছনোর চেষ্টাও দু’দেশই চালাচ্ছিল। ৭ ও ৮ জুলাই জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ শিখর সম্মেলন বসছে। ভারত এবং চিন, দুই দেশই সেই সম্মেলনে হাজির থাকছে। ডোকা লায় চলতে থাকা অচলাবস্থা কাটাতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট চিনফিং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে পারেন বলে জল্পনা ছিল। সম্মেলন শুরুর আগের দিনেই সে জল্পনায় জল ঢেলে দিল বেজিং।

আরও পড়ুন: নাকের ডগায় ডুবোজাহাজ, হুঙ্কার চিনের

‘‘প্রেসিডেন্ট শি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার মতো পরিবেশ এখন নেই।’’ বৃহস্পতিবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা এমন মন্তব্যই করেছেন। গত কয়েক দিন ধরে চিনের শাসক দল তথা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে একের পর এক প্রতিবেদনে ভারতের কড়া সমালোচনা করা হচ্ছে। ডোকা লায় ভারতীয় বাহিনীর অবস্থানের নিন্দা করে নয়াদিল্লিকে বার বার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। ভারত সেনা না সরানো পর্যন্ত কোনও আলোচনাও হবে না বলে বেজিংয়ের তরফে জানানো হচ্ছে। তবে এত কিছুর মাঝেও কূটনৈতিক পথে পরিস্থিতি হালকা করার চেষ্টা চলছিল। সেই কারণেই জল্পনা ছড়িয়েছিল যে শুক্র ও শনিবার জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ শিখর সম্মেলনের ফাঁকে মোদী এবং চিনফিং এই বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন। বেজিং সে সম্ভাবনা নস্যাৎ করল।

বেজিংয়ের এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে সাউথ ব্লকের কর্তারা জানাচ্ছেন, হামবুর্গে মোদী-চিনফিং বৈঠক হতে পারে বলে যে সব কথা শোনা যাচ্ছিল, তা নেহাৎই জল্পনা ছিল। এমন কোনও বৈঠক হওয়ার কথা ছিল না। কোনও পক্ষই সরকারি ভাবে এমন কোনও বৈঠকের প্রস্তাব দেয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE