ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে নিউ জার্সি আশ্চর্য রঙিন। চোখ মেললেই দিগন্ত জুড়ে গাছের পাতায় পাতায় লাল-কমলা-হলুদের অপূর্ব সমারোহ। একে আমেরিকায় বলে ‘ফল কালার্স’। ও দিকে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা মানেই নীল, কারণ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক রং নীল। ৫ নভেম্বর নির্বাচনের পরে হ্যারিস সেই নীল রঙের জয়ধ্বজা ওড়াবেন, না রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মসনদে বসে আমেরিকাকে লালে লাল করে দেবেন, সে নিয়ে চলছে জল্পনা। আর মাত্র এক সপ্তাহ। ফলে, ‘ফল কালার্সের’ ছিটেফোঁটা অবশিষ্ট থাকতে থাকতেই ভোটের ফল এবং বিজয়ীর রং ঘোষিত হয়ে যাবে।
এই নির্বাচনে নিউ জার্সি প্রদেশের ফলাফল নিয়ে বিশেষ অনিশ্চয়তা নেই। ১৯৯২ সাল থেকে হওয়া আটটি নির্বাচনেই নিউ জার্সিতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা একাধিপত্য দেখিয়েছেন। ২০২০ সালে জো বাইডেন ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়ে এই প্রদেশের ১৪টি ইলেক্টোরাল ভোট ডেমোক্র্যাটদের ঝুলিতে তুলে দিতে পেরেছিলেন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু মোটামুটি সব সমীক্ষাই বলছে, সব প্রদেশ মিলিয়ে লড়াই এ বার জোরদার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সাতটি প্রদেশ— জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, মিশিগান, নেভাডা, অ্যারিজ়োনা এবং উইসকনসিন, এই প্রদেশগুলির ফলাফলেই নির্ধারিত হবে শেষ হাসিটি কে হাসবেন।
দু’হাজার কুড়ির কথা মনে পড়ে— সেই মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের দিনগুলি। রাস্তাঘাট শুনশান। জীবন আটকে ফোন, টিভি আর সমাজমাধ্যমে। অফিস-কাছারি যাওয়া নেই, বাজার যাওয়া নেই, সপ্তাহান্তে পার্টি বা দুর্গাপুজো নেই, সিনেমা বা রেস্তরাঁয় যাওয়াও নেই। সে বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। একটি টিভি চ্যানেলে আলোচনা চলছে, দূরদর্শী প্রেসিডেন্ট নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন এবং দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করছেন। চ্যানেল পাল্টে অন্য চ্যানেলে যেতেই দেখি, যে-প্রেসিডেন্ট কাপড় কাচার সাবানের ইঞ্জেকশন দিয়ে করোনাভাইরাস মারার কথা বলছেন, তাঁকে কী করে তাঁর দল ফের ভোটে দাঁড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে, তাই নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।
চার বছর আগের সেই উত্তেজনাটা যেন এ বার নেই। আমাদের বাঙালি তথা ভারতীয় বন্ধুবৃত্তে হ্যারিসের সমর্থক কিছুটা বেশি হলেও ট্রাম্পের সমর্থকের সংখ্যা যে শূন্যের কোঠায়, এমন মোটেই বলা যাবে না। বরং ২০২০ সালের তুলনায় ট্রাম্প সমর্থকের সংখ্যা বেশ কিছুটা বেড়েছে। বাইডেন-হ্যারিস জুটির কাছে প্রত্যাশা বেশি থাকা এবং তা পূরণ না হওয়াই এর কারণ বলে মনে হয়। একই ছবি সমাজমাধ্যমে। পরিচিত প্রবাসী বাঙালিদের রাজনৈতিক পোস্টের ঝাঁঝ চার বছর আগের তুলনায় যেন বেশ স্তিমিত। রোজ সকালে ঘুম ভাঙলেই ইনবক্সে অচেনা নম্বর থেকে কুড়িটা টেক্সট মেসেজ। তহবিলে চাঁদা দেওয়ার অনুরোধ। পিটিশনে সই করার আহ্বান। সমীক্ষায় অংশ নেওয়ার লিঙ্ক। একটা একটা করে মেসেজ ডিলিট করি। অচেনা নম্বরগুলো ব্লক করি। লাভ হয় না। পরের দিন মেসেজের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। কোথা থেকে এরা ফোন নম্বর পায়, কে জানে!!
কয়েক মাস আগে এক বন্ধু বলছিল, ‘‘লন্ডনে ঋষি। ক্যালিফোর্নিয়ায় পিচাই। ওয়াশিংটনে কমলা এলেই ভারত ফের ‘জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’!’’ ঋষির আসন টলে গিয়েছে। কমলাকি পারবেন মসনদ দখল করতে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy