নতুন ফাঁদ। বুধবার রাইকা পাহাড়ের ভাড়ারিয়ার জঙ্গলে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
কবে খিদেয় টিকতে না পেরে নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে বাঘিনি জ়িনত এগোবে ফাঁদের টোপের দিকে— আপাতত সেই মুহূর্তের অপেক্ষায় বনকর্মীরা। ভাবা হচ্ছে বিকল্প পথের কথাও। আজ, বৃহস্পতিবার ওড়িশার বন দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে এ রাজ্যের বনকর্তাদের।
ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলপথে এ রাজ্যে প্রবেশ জ়িনতের। রবিবার থেকে তার ঠিকানা পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল। বন দফতর সূত্রে খবর, গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডে থাকাকালীন টোপ হিসেবে দেওয়া একটি মোষ মেরে কিছুটা খেয়েছিল জ়িনত। সে দিনই তাকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করার পরিকল্পনা থাকলেও, সে ‘মড়ি’ (দেহাবশেষ)-তে আর ফেরেনি। বনকর্তারা জানান, সেই মোষের যা আকার ছিল, তাতে ক’টা দিন পেট ভর্তি থাকার কথা। রাইকার জঙ্গলেও হয়তো খাবার জুটছে। তাই টোপের জন্তুকে আমল দিচ্ছে না বাঘিনি।
বনকর্তাদের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে বাঘিনির জোরদার খিদে পাওয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া, উপায় নেই। তবেই সে নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে বেরোবে। মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “বাঘিনির ভুল করার অপেক্ষা আমাদের করতেই হবে।” তিন-চার দিন ধরে ফাঁদ পেতেও লাভ হয়নি। অন্য কিছু ভাবছে কি দফতর? বিশদ না জানালেও বিকল্প পথের কথা বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে রাইকা পাহাড় লাগোয়া রাহামদা গ্রামের কাছে একটি ছাগলের অর্ধাংশ মিলেছিল। বুধবার সেখান থেকে কিছুটা সরে তুলনায় জঙ্গলের গভীরে ছিল বাঘিনির শেষ অবস্থান। সুন্দরবন থেকে আনা নতুন দু’টি খাঁচা এ দিন বসানো হয়। খাঁচাগুলির চারপাশে কিছু ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানো হয়। ‘রিয়েল টাইম মনিটরিং’ও করা হচ্ছে। রেডিয়ো কলার থেকে যাতে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাঘিনির অবস্থানের ছবি সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ে।
মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুলন্দাইভেল বলেন, “পেটে খিদে থাকলে টোপ গিলবে, সে ভাবনা থেকে টোপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বাঘিনির যাতে কোনও শারীরিক ক্ষতি না হয়, তা-ও মাথায় রাখতে হচ্ছে।” যদিও আগে তৎপর হলে ওড়িশার সীমানাতেই জ়িনতকে আটকানো যেত বলে দাবি বাঘ বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁদের মত, ‘রেডিয়ো কলার’ থেকে বাঘিনির গতিবিধি অনুমান করতে কিছুটা ভুল হয়েছে ওড়িশা বন দফতরের। তার ফল এখন ভুগতে হচ্ছে।
জ়িনতের আতঙ্কে সমস্যায় জঙ্গলের সঙ্গে রুটিরুজি জড়িয়েথাকা রাইকা পাহাড় লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের একাংশ। স্থানীয় লেদাশাল গ্রামের পানমণি টুডু বলেন, “শালপাতা তুলতে প্রায়ই জঙ্গলে যেতে হয়। বাঘ এসেছে বলে যেতে পারছি না। বাড়িতে জ্বালানিও কমে এসেছে।” এ দিন ব্লক সদরে গ্রামীণ হাটেও যাননি অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy