পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি।
তিন দিন পরেই ভারতের নতুন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রথম চিন সফরে যাচ্ছেন। তার আগে তড়িঘড়ি নিজের চিন সফরের ব্যবস্থা করেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। উদ্দেশ্য, জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বন্ধু চিনকে পাশে পাওয়া।
বেজিংয়ে কুরেশির উপস্থিতিতেই চিনা বিদেশ মন্ত্রক আজ জানিয়ে দিল, ‘একতরফা’ সিদ্ধান্তে কেউ যেন ওই এলাকার স্থিতাবস্থা নষ্ট না করে। যা নয়াদিল্লির কাছে আরও একটা বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ। অবশ্য সেই সঙ্গেই বেজিংয়ের বক্তব্য, ভারত -পাকিস্তান দু’দেশেরই উচিত বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা। অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে প্রত্যাশামতো বেজিংকে পাশে পায়নি ইসলামাবাদও।
আজকের বিবৃতিতে চিন সরাসরি ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করেনি ঠিকই। তবে লাদাখ নিয়ে প্রথম দিন থেকেই নিজেদের আপত্তির কথা স্পষ্ট জানিয়ে এসেছে তারা। জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে লাদাখকেও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। সরাসরি বিবৃতিতে তখনই বেজিং জানিয়েছিল, এতে চিনের সার্বভৌমত্বে আঘাত লেগেছে। এই অবস্থায় পাক বিদেশমন্ত্রীকে পাশে রেখে চিনের এই বিবৃতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই পাকিস্তান ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত ‘বেআইনি’ এবং ‘একতরফা’ বলে ব্যাখ্যা করেছিল। এই ‘একতরফা’ শব্দটি আজ আরও একবার ব্যবহার করেছে বেজিংও। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার যার প্রেক্ষিতে সরকারি ভাবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ১১ তারিখ বেজিং পৌঁছে দ্বিপাক্ষিক ভাবে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন জয়শঙ্কর। দেওয়া হবে যৌথ বিবৃতিও। তবে সাউথ ব্লকের অনেকেরই ব্যাখ্যা, তিন দিনের সফরে গিয়ে বেজিংকে আলাদা করে বার্তা দেবেন জয়শঙ্কর।
ডোকলাম নিয়ে চাপানউতোরের পর থেকেই চিনের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটছে না নয়াদিল্লি। চিনকে তুষ্ট রাখতেই নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় বার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের প্রধানকে। কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা, এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি বেজিংকে বোঝাতে চাইবে, তারা যেমন চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে না, বেজিংও যেন ৩৭০ নিয়ে সে ভাবেই পদক্ষেপ করে।
সম্প্রতি হংকংয়ে চিন-বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন বিভিন্ন দেশের কনসুলেটে গিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আর্জি জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। মাত্র তিনটি দেশ চিন-বিরোধী সেই স্মারকলিপি গ্রহণ করেনি। রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তৃতীয় সেই দেশ ছিল ভারত। সাউথ ব্লকের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ভারত চিনকে বোঝাতে চায়, সরকার এখন কাশ্মীরি মানুষদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে চাইছে। তারা যেমন হংকংয়ের প্রতিবাদকারীদের পাশে দাঁড়ায়নি, নয়াদিল্লি এখন চাইবে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে বেজিংও যেন নাক না গলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy