Advertisement
০২ জানুয়ারি ২০২৫
Indian Workers in Israel

প্যালেস্টাইনিদের নেই প্রবেশাধিকার! ঘাটতি পূরণ করতে ইজ়রায়েলের ভরসা ১৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক

প্যালেস্টাইনি শ্রমিকদের ইজ়রায়েলে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যার জেরে ইজ়রায়েলের নির্মাণক্ষেত্রে কাজকর্ম পিছিয়ে পড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে এখন ইজ়রায়েলের ভরসা প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক।

ভিন্‌দেশে কাজ করতে যাওয়া ভারতীয় শ্রমিকেরা।

ভিন্‌দেশে কাজ করতে যাওয়া ভারতীয় শ্রমিকেরা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:২৫
Share: Save:

ইজ়রায়েলে কোনও নির্মীয়মাণ ভবনে লোহালক্কড়ের শব্দের মাঝে হিন্দি কথোপকথন বিরল নয়। কিংবা অন্য কোনও ভারতীয় ভাষা। এক বছর আগেও চিত্রটা এমন ছিল না। যুদ্ধ পরিস্থিতি অনেক কিছু বদলে দিয়েছে ইজ়রায়েলে। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না হলে হয়ত এ সব জায়গায় আরবি সংলাপই দস্তুর ছিল। থাকতেন প্যালেস্টাইনি শ্রমিকেরা। কিন্তু এখন সেই জায়গায় ভারতীয় শ্রমিকদের ভিড়।

গত বছরের অক্টোবরে হামাস গোষ্ঠীর হামলার পর থেকে ছবিটা বদলে যায় ইজ়রায়েলে। প্যালেস্টাইনি শ্রমিকদের ইজ়রায়েলে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন। নির্মাণক্ষেত্রে এখন শ্রমিকের সেই ঘাটতি পূরণ করছেন ভারতীয় শ্রমিকেরা। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত এক বছরে ১৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক যোগ দিয়েছেন ইজ়রায়েলের নির্মাণকাজে।

এই ১৬ হাজার জনের মধ্যেই একজন হলেন রাজু নিশাদ। বর্তমানে মধ্য ইজ়রায়েলের বিয়ার ওয়াকভ শহরে কাজ করেন নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে। বেশি টাকা উপার্জনের আশায় যুদ্ধের ভয় মুছে এখন দেশান্তরী। মাঝেমধ্যে আকাশপথে হামলার আগে সাইরেনের আওয়াজ শোনেন। তখন কোনও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়দৌড়ি করতে হয় তাঁকে। তবুও ভয়কে এক প্রকার জিতেই নিয়েছেন নিশাদ। এএফপিকে তিনি বলেন, “ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এক বার ওটা (সাইরেনের আওয়াজ) বন্ধ হয়ে গেলে, আমরা আবার কাজ শুরু করে দিই। আমি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চাই। পরিবারের জন্য কিছু করতে চাই।”

নিশাদের মতো এমন আরও অনেকেই রয়েছেন। সকলেরই প্রায় একই অবস্থা। কারণ ইজ়রায়েলে নির্মাণক্ষেত্রে কাজে অনেক বেশি উপার্জন করা যায়। এএফপি অনুসারে, নিজেদের দেশের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি উপার্জন করতে পারেন তাঁরা।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ওই হামলার জেরে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১১০০ জনের। শুধু তা-ই নয়, ২৫০ জন ইজ়রায়েলি নাগরিককে যুদ্ধবন্দিও করেছিল হামাস। তার পর গাজ়া ভূখণ্ডকে হামাসমুক্ত করতে পাল্টা অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের পর পর হামলায় বর্তমানে বিধ্বস্ত অবস্থা গাজ়া ভূখণ্ডের।

গত বছরের অক্টোবরে হামাস গোষ্ঠীর হামলার পর থেকে প্যালেস্টাইনিদের ইজ়রায়েলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। যার জেরে ইজ়রায়েলের নির্মাণক্ষেত্রে শ্রমিকের অভাব তৈরি হয়। এএফপি জানিয়েছে, ওই নিষেধাজ্ঞার আগে পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার প্যালেস্টাইনি শ্রমিক কাজ করতেন ইজ়রায়েলে।

নিষেধাজ্ঞার কারণে তৈরি হওয়া শ্রমিক ঘাটতির সরাসরি প্রভাব পড়ে ইজ়রায়েলের নির্মাণকাজের উপর। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির পর থেকে আবাসনের নির্মাণকাজ প্রায় ২৫ শতাংশ পিছিয়ে পড়ে। এই অবস্থায় শূন্যতা পূরণ করতে ভারতীয় শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়েছে নির্মাণকাজে।

ইজ়রায়েলে আগে থেকেই অনেক ভারতীয় কর্মরত। কেউ পরিচারকের কাজ করেন, তো কেউ আবার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী হিসাবে কাজ করেন। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির আগে পর্যন্ত নির্মাণক্ষেত্রে ভারতীয় শ্রমিকের সংখ্যা এতটা বেশি ছিল না। যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরুর পর নিয়োগ সংস্থাগুলি ইজ়রায়েলের নির্মাণকাজের জন্যও ভারতীয় শ্রমিকদের নিয়োগ করতে শুরু করে।

অন্য বিষয়গুলি:

israel hamas palestine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy