Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জোড়া মৃত্যুদণ্ড আরকানসাসে

বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় যে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে, তাতে ব্যবহার হয় তিনটি ওষুধ। তার মধ্যে একটি আর পাওয়া যাবে না ৩০ এপ্রিলের পর। তাই তার আগেই একই দিনে দু’জন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল আমেরিকার আরকানসাস প্রদেশে।

সংবাদ সংস্থা
লিটল রক শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় যে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে, তাতে ব্যবহার হয় তিনটি ওষুধ। তার মধ্যে একটি আর পাওয়া যাবে না ৩০ এপ্রিলের পর। তাই তার আগেই একই দিনে দু’জন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল আমেরিকার আরকানসাস প্রদেশে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে এক দিনে দু’জনের মৃত্যুদণ্ডের নজির গত ১৭ বছরে নেই। ঘটনার কড়া সমালোচনা করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ‘‘চরম লজ্জার দিন।’’

প্রাণদণ্ড রদের শেষ আবেদন খারিজ করে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বিষ ই়ঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় জ্যাক এইচ জোনস নামে এক বন্দির। তার তিন ঘণ্টার মাথায় বিষ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় মার্সেল উইলিয়ামসকে। চার দিন আগে, অর্থাৎ গত শুক্রবারও লেদেল লি নামে আর এক বন্দির চরম শাস্তি হয় আরকানসাসে। এরা প্রত্যেকেই খুনের আসামি। কেনেথ উইলিয়াম নামে আরও এক জনের সাজা কার্যকর হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার।

১৯৯৫ সালে মেরি ফিলিপ নামে ৩৪ বছরের এক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করে জ্যাক জোনস। মেরির মেয়ে ল্যাসির তখন বয়স ১১ বছর। প্রচণ্ড মার খেয়েও বেঁচে যায় ল্যাসি। ১৯৯৪ সালে স্ট্যাসি এরিকসন নামে ২২ বছরের এক যুবতীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও খুন করেছিল মার্সেল উইলিয়ামস। বৃহস্পতিবার যাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, সেই কেনেথ উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে ১৯৯৮ সালে আরকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে এক চিয়ারলিডারকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর বিচার চলাকালীন পালিয়েছিল কেনেথ। বেরিয়েই এক কৃষককে খুন করে তার ট্রাক চুরি করে। ধাওয়া করেছিল পুলিশ। সেই সময়েই ট্রাকের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় অন্য এক গাড়ির চালকের। ২০০৫ সালে কেনেথ স্বীকার করে, যে দিন সে ওই চিয়ারলিডারকে হত্যা করে, সে দিন ৩৬ বছরের আর এক ব্যক্তিও খুন হন তার হাতে।

আরও পড়ুন...
নিষেধাজ্ঞায় কি ব্রিটেনও

২০০০ সালে শেষ বার দুই আসামির একই দিনে মৃত্যুদণ্ড হয় টেক্সাসে। আরকানসাসেও গত ১২ বছরে কোনও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি ১০ দিনে মোট ৮ জনকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার পরিকল্পনা করে আরকানসাস। তার চারটি খারিজ করে আদালত। কেন এই তাড়াহুড়ো? প্রশাসনের দাবি, ‘বিষ’-এর ঘাটতি। প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনে যে তিন ওষুধ প্রয়োগ হয়, তার প্রথমটি দিয়ে অচেতন করা হয়। দ্বিতীয়টি শ্বাস থামিয়ে দেয়, তৃতীয়টি বন্ধ করে দেয় হৃৎপিণ্ডের কাজ। এই প্রথম ওষুধটি হল মিডাজোলাম। আরকানসাসে তা যত রয়েছে, তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ৩০ তারিখে। নতুন করে তা মিলবে না কারণ, মৃত্যুদণ্ডের জন্য ওষুধ বিক্রির ব্যাপারে বেঁকে বসেছে কিছু সংস্থা।

মিডাজোলাম প্রয়োগ নিয়েও আপত্তি তুলেছিলেন ওই দুই আসামির আইনজীবী। তাঁরা জানান, দু’জনের যা অবস্থা তাতে ওষুধটি কাজ না-ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড হবে প্রচণ্ড যন্ত্রণাদায়ক। সেই আপত্তি খারিজ হয়ে যায়। এক সাংবাদিক জানান, মৃত্যুর আগে মেরির মেয়ে ল্যাসির কাছে ক্ষমা চেয়ে জোনস বলেছিল, ‘‘আমি রাক্ষস নই। যা হয়েছিল তার পিছনে কারণ ছিল। আমি তোমায় সন্তানের মতোই ভালবাসি।’’ ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর এক বা দু’মিনিট ঠোট নেড়েছিল সে। তবে মুখে যন্ত্রণার ছাপ ছিল না।

অন্য বিষয়গুলি:

execution Arkansas death row Death Sentence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE