ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অতীতে খুব কম মার্কিন প্রেসিডেন্টকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সদাসক্রিয় দেখা গিয়েছে! সে দিক থেকে একা নাম আলো করে রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটার জোড়া ছড়ানো তাঁর সাম্রাজ্য ঘুরেফিরে একটি মার্কিন দৈনিক বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, কী ভাবে সময়ে সময়ে ‘টুইটাস্ত্র’ ছুড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তা সে নিজের প্রশাসনের নীতি পাল্টাতে হোক, অথবা তাঁর সমালোচকদের জবাব দিতে হোক কিংবা শুধু নিজের প্রশস্তির প্রয়োজনে, টুইটই বড় ভরসা ‘টুইটার-প্রেসিডেন্টের’।
ট্রাম্প-টুইট ঘেঁটে হোয়াইট হাউসে তাঁরই কাউন্সেলর কেলিয়ান কনওয়ে বলেছেন, ‘‘আমাদের যেমন খেতেই হয়, ওনার তেমন টুইটটা করতেই হয়!’’ এই সব করতে গিয়ে ট্রাম্প এমন কিছু অ্যাকাউন্টের টুইট ‘রিটুইট’ করেছেন, যে সেগুলির জনপ্রিয়তাও বেড়ে গিয়েছে পাল্লা দিয়ে। ট্রাম্পের টুইট-বিশ্লেষণের পাশাপাশি যে যে অ্যাকাউন্ট তিনি ফলো করেন, টুইটারের কিছু আধিকারিক ও বেশ কয়েক জন প্রশাসনিক আধিকারিক এবং সাধারণ মার্কিন নাগরিক— সবার সঙ্গে কথা বলে ওই দৈনিকটি বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে।
যেমন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ১১ হাজারেরও বেশি টুইটের মধ্যে প্রায় অর্ধেক ছিল রুশ তদন্ত এবং আমাজন-কর্তা জেফ বেজোসকে নিয়ে। দু’হাজারেরও বেশি টুইটে মন দিয়ে ট্রাম্প এক জনেরই প্রশংসা করে গিয়েছেন— কেবল নিজের! ওই দৈনিকটির দাবি, তাঁর টুইট-বন্যায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে প্রশাসনের শীর্ষ-কর্তারা এক বার নাকি ভেবেছিলেন, টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাবেন, যে প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্টটিতে যদি দু’টি টুইটের মধ্যে ১৫ মিনিটের একটা বিরতি যোগ করা যায়! তবে শেষমেশ সে পথে এগোতে সাহস পাননি তাঁরা। কারণ তাঁরা জানতেন, কোনও ভাবে সংবাদমাধ্যমে অথবা খোদ প্রেসিডেন্টের কাছে এই তথ্য যদি ফাঁস হয়ে যায়, মাথার উপরে রাজনৈতিক খাঁড়া নেমে আসবেই!
৩৩ মাসে
বিষয় টুইটের সংখ্যা
• কোনও ব্যক্তিকে আক্রমণ ৫৮৮৯
• কোনও ব্যক্তির প্রশংসা ৪৮৭৬
• ডেমোক্র্যাটদের আক্রমণ ২৪০৫
• বিভিন্ন তদন্ত-প্রক্রিয়াকে আক্রমণ ২০৬৫
• নিজের প্রশংসা ২০২৬
• তাঁর বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রের দাবি ১৭১০
• বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ ১৩০৮
• সংখ্যালঘুদের আক্রমণ ৮৫১
• দক্ষিণপন্থী সংবাদমাধ্যমদের প্রশংসা ৭৫৮
• শরণার্থীদের আক্রমণ ৫৭০
• আগের প্রেসিডেন্টদের আক্রমণ ৪৫৩
• হিলারি ক্লিন্টনকে আক্রমণ ২৫৬
• ‘আমি সব থেকে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট’ ১৬
(বেশির ভাগ টুইটেই একাধিক বিষয়ের উল্লেখ থাকে)
মার্কিন দৈনিকটি জেনেছে, চিন-ইরান-রাশিয়া থেকে ট্রাম্প-প্রশস্তির জন্য বেশ কিছু টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এগুলি থেকে ট্রাম্পের নীতির প্রশংসায় ভুরি-ভুরি টুইট হতে থাকে। এক বার লেখা হয়েছিল, ‘‘প্রেসিডেন্ট আমরা আপনাকে ভালবাসি।’’ ট্রাম্প সেটি রিটুইটও করেছেন।
শুধু প্রশস্তি নয়। ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ অথবা কট্টর-মতাদর্শের রিটুইটও করেই থাকেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, জানিয়েছে দৈনিকটি। যাচাই না করা এমন ১৪৫টি অ্যাকাউন্টের টুইট রিটুইট করেছেন ট্রাম্প। সেগুলি পরে টুইটার কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করেছেন। যার মধ্যে ছিল, শ্বেতাঙ্গ-জাতীয়তাবাদী এবং মুসলিম-অসহিষ্ণু বেশ কিছু গোষ্ঠী।
দৈনিকটি আর একটি প্রশ্নও তুলেছে। প্রকাশ্যে কেউ কখনও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে টুইট করতে দেখেছে কি? উত্তরটা, নিঃসন্দেহে না। দৈনিকটি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টকে তাঁর আইফোনে টুইট দেখতে হলে ‘রিডিং গ্লাসেস’ পরতে হয়। সেটি তাঁর না-পসন্দ। তাই হোয়াইট হাউসের সোশ্যাল মিডিয়া ডিরেক্টর ড্যান স্ক্যাভিনোকে টুইট-বয়ানের নির্দেশ দিয়ে দেন তিনি। বড় হরফে সে সবের প্রিন্ট দিয়ে ট্রাম্পকে দেখিয়ে নেন স্ক্যাভিনো। তবে ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক টুইটগুলি সাধারণত তাঁর হাত থেকেই আসে। যেগুলো হোয়াইট হাউস থেকে তাঁর পোস্ট করার সময় ভোর ছ’টা-সকাল দশটা। সে সময়ে তাঁর পাশে কোনও উপদেষ্টা থাকেন না বলেই দাবি দৈনিকটির।
এ ছাড়া, ট্রাম্পের টুইট-গবেষণা থেকে আরও বেশ কিছু তথ্য জুগিয়েছে দৈনিকটি। টুইটে ৫৭০ বার তিনি শরণার্থীদের আক্রমণ করেছেন, একনায়কদের প্রশংসা করেছেন ১৩২ বার, সংবাদমাধ্যমকে ‘গণশত্রু’ বলেছেন ৩৬ বার। ১৬ বার নিজেকে ‘জনতার প্রিয় প্রেসিডেন্ট’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy