স্বাভাবিক হচ্ছে মিশর।—ছবি রয়টার্স।
মরুভূমির বুকে তিন মাস একাই দাঁড়িয়ে ছিল সে। পর্যটকশূন্য। অবশেষে গত মাসে খুলে দেওয়া হয় মিশরের পিরামিড। মাস্ক মুখে অল্পবিস্তর ভিড়ও হচ্ছে। এ বার খুলছে দক্ষিণ আফ্রিকাও। ‘ওয়র্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজ়ম কাউন্সিল’-এর ‘নিরাপদ ভ্রমণের’ শংসাপত্র পেয়েছে কেপ টাউন। ছন্দে ফিরছে আফ্রিকা।
অতিমারি আতঙ্ক ছড়াতেই তড়িঘড়ি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল আফ্রিকার বহু দেশ। টিবি, এইচআইভি, ইবোলার মতো সংক্রমণের পুরনো অভিজ্ঞতা থেকেই জরুরি পদক্ষেপ করা হয়। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন ও তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ব্যবসাগুলি। আফ্রিকায় অন্তত আড়াই কোটি মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্যই হয়তো তাড়াতাড়ি সুস্থ হচ্ছে এই মহাদেশ। গত এক মাসে দৈনিক সংক্রমণ ক্রমশই কমছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) আরও ভাল খবর দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, আফ্রিকা হয়তো সংক্রমণের শীর্ষ পেরিয়ে এসেছে। হু-র আফ্রিকা বিষয়ক প্রধান মাতশিদিসো মোয়েতি জানিয়েছেন, সংক্রমণের রেখাচিত্র এখন নামছে। চার সপ্তাহে ১৭% কমেছে সংক্রমণ হার। তবে একই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছে হু— কড়াকড়ি পুরোপুরি তোলা যাবে না। কারণ রি-ইনফেকশন বা পুনরায় সংক্রমণের খবর মিলছে। আমেরিকার নেভাডায় যেমন। ২৫ বছর বয়সি এক যুবক এপ্রিল মাসে সংক্রমিত হন। দেড় মাস পরে ফের সংক্রমিত হন তিনি। ধরা পড়েছে, দ্বিতীয় বার তিনি করোনার অন্য স্ট্রেনে আক্রান্ত হন।
আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সংক্রমণ তালিকার প্রথম দশে রয়েছে একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ লক্ষ ২০ হাজার আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যার হিসেবে প্রথম দশে কেউ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩-য়। এ পর্যন্ত ১৩,৭৪৩ জন মারা গিয়েছেন। সংক্রমণে ৩১তম স্থানে রয়েছে মিশর। ৪৭-এ রয়েছে মরক্কো, নাইজিরিয়া ৫০-এ।
‘আফ্রিকা সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ (সিডিসি) অবশ্য জানিয়েছে, পূর্ব ও উত্তর আফ্রিকায় সংক্রমণের ঘটনা কিছুটা হলেও বাড়ছে। উগান্ডা ও রাওয়ান্ডায় সংক্রমণ বেড়েছে। উত্তর আফ্রিকার মরক্কো ও তিউনিশিয়ায় করোনা-আক্রান্ত হওয়ার খবর বাড়ছে। হু জানিয়েছে, লিবিয়াতেও সংক্রমণ বেড়েছে। ও দিকে, কেনিয়া ও সোমালিয়ায় কোভিড কমছে। মিশর, আলজেরিয়া, ঘানা, গ্যাবন, মাদাগাস্কার, জাম্বিয়াতেও করোনা কমেছে অনেকটাই।
তবে ‘ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’র মতে, আফ্রিকায় করোনা-পরীক্ষা কম হচ্ছে। তাই কম ধরা পড়ছে। তাদের এই বক্তব্যে পুরোপুরি অসম্মতি প্রকাশ করেনি হু। আফ্রিকার বেশ কিছু অঞ্চলে কোনও করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়লে, তবেই কড়াকড়ি হচ্ছে। আবার ইথিয়োপিয়ার মতো ব্যতিক্রমও আছে। করোনা-পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে এ দেশে।
এ দিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে করোনা-ত্রাসে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বিশ্বের মোট স্কুলপড়ুয়াদের এক-তৃতীয়াংশ প্রযুক্তির সাহায্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে না। বিশেষত, সাহারা মরুভূমির দক্ষিণাংশে, আফ্রিকার দেশগুলিতে প্রযুক্তির নাগাল না-পাওয়ায় অনলাইন ক্লাসের সুযোগ নেই কমপক্ষে ৫০ শতাংশ স্কুলপড়ুয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy