এ ভাবেই কাবুল বিমানবন্দর থেকে ‘উদ্ধার’ হয়েছিল কয়েক জন শিশু। ফাইল চিত্র।
ছবিটা এখনও স্পষ্ট অনেকের মনেই। সদ্য তালিবানের কবলে যাওয়া আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরে তখন থিকথিকে ভিড়। পালাতে চান সকলেই। বিমানবন্দরের পাঁচিলের বাইরে ভিড়ের মধ্যে এক জন তাঁর হাত দু’টি উপরে তুলে ধরেছেন। সেই হাতে ধরা রয়েছে একরত্তি শিশু।
এর পর পাঁচিলের উপরে দাঁড়িয়ে আমেরিকার এক সেনা হাত বাড়িয়ে দেন সে দিকে। কাঁটাতার বাঁচিয়ে সাবধানে কোলে তুলে নেন ওই আফগান শিশুটিকে। দ্রুত ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সেই ভিডিয়ো। চাপের মুখেও আমেরিকার সেনার এমন মানবিক তৎপরতা প্রশংসাও কুড়িয়েছিল। প্রায় আড়াই মাস আগে এ ভাবেই কাবুল বিমানবন্দর থেকে ‘উদ্ধার হয়েছিল’ বেশ কয়েক জন শিশু। তাঁদের মধ্যে অন্তত এক জনের খোঁজ মেলেনি এখনও!
মির্জা আলি আহমদি এবং তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া গত ১৯ অগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের ভিড়ে ছিলেন। সঙ্গে ছিল তাঁদের দু’মাসের শিশুপুত্র সোহেল-সহ পাঁচ সন্তান। বিমানবন্দরের প্রবেশপথ তখন মাত্র ১৬ ফুট দূরে। হঠাৎই শুরু হয় প্রবল ধাক্কাধাক্কি। সোহেলের প্রাণ বাঁচাতে তাকে পাঁচিলের উপরে দাঁড়ানো এক আমেরিকান সেনার হাতে তুলে দিয়েছিলেন মির্জা। ভেবেছিলেন ভিতরে ঢুকেই ছেলেকে ফেরত নেবেন।
কিন্তু সে দিন ওই ১৬ ফুটের ব্যবধান পেরোতে লেগে গিয়েছিল দেড় ঘণ্টা! ভিতরে ঢুকে সেই সেনাকে দেখতে পাননি মির্জা। খোঁজ পাননি সোহেলেরও। আমেরিকার দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষী হওয়ার সুবাদে সেনা মহলে কিছু যোগাযোগ ছিল মির্জার। আমেরিকার সেনার এক আধিকারিকের কাছে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, উদ্ধার হওয়া কয়েক জন শিশুকে বিমানবন্দরের অদূরে একটি জায়গায় রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও সোহেলের সন্ধান মেলেনি।
ইংরেজি না জানার কারণে সোহেলকে খোঁজার কাজে অসুবিধার মুখে পড়েন মির্জা। দূতাবাসের আফগান সহকর্মীদের সাহায্যে পরবর্তী তিন দিনে অনেকের সঙ্গে কথা বলেও শিশুপুত্রের খোঁজ পাননি তাঁরা। এরই মধ্যে উদ্ধারকারী বিমানে জায়গাও মিলে যায়। কাতার এবং জার্মানি হয়ে শেষ পর্যন্ত আমেরিকায় আশ্রয় পান ওই দম্পতি এবং তাঁদের চার সন্তান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy