Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan Crisis

Taliban: আশ্রয় পেতে বিভিন্ন দেশের কাছে মিনতি করছেন আফগান কূটনীতিকরা, তৈরি শরণার্থী হতেও

তালিবান সেনাপ্রধান কারি ফাসিহুদ্দিন একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, শীঘ্রই নিজেদের একটি ‘সুসংগঠিত’ সেনাবাহিনী তৈরি করা হবে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৪২
Share: Save:

সব জল্পনায় জল ঢেলে প্রকাশ্যে এলেন তালিবান নেতা তথা আফগান উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর। একটি ভিডিয়ো-বার্তায় তিনি জানালেন, কোনও গোষ্ঠী সংঘর্ষে তিনি আহত হননি। সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।

এক সময়ে মনে করা হয়েছিল বরাদরই তালিবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয় তাঁকে। এর পরেই হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যান তুলনায় ‘নরমপন্থী’ বলে পরিচিত এই নেতা। এ-ও শোনা যায়, তালিবানের হক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে তাঁর সমর্থকদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে প্রাণ হারিয়েছেন বরাদর। এর পরেই আজ তাঁর আত্মপ্রকাশ। দোহার একটি সরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘ওই সব কথা সত্যি নয়। আমি ভাল আছি, সুস্থ আছি।’’ সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে টুইটারে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মিডিয়া বলছে তালিবানের ভিতরে অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ কথা সত্যি নয়। আমাদের ভিতরে কোনও ঝামেলা নেই।’’

আরটিএ টিভিতে যে সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারিত হবে, সে কথা আগেই জানিয়েছিল তালিবানের সংস্কৃতি দফতর। তাদের বক্তব্য, এ সব গুজব ছড়ানো ‘শত্রুদের প্রোপাগান্ডা’। তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে বরাদরের বক্তব্য, তিনি কোনও সফরে গিয়েছিলেন। তাই এতদিন সামনে আসতে পারেননি।

তালিবান সেনাপ্রধান কারি ফাসিহুদ্দিন একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, শীঘ্রই নিজেদের একটি ‘সুসংগঠিত’ সেনাবাহিনী তৈরি করা হবে। আফগান সীমান্ত পাহারা দেওয়ার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সোনাপ্রধান ফাসিহুদ্দিন আরও বলেন, ‘‘কোনও গৃহযুদ্ধ তৈরি হতে দেওয়া হবে না। যাঁরা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবেন, স্থিতাবস্থা ভাঙার চেষ্টা করবেন, তালিবানের বিরোধিতা করবেন, তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’ পঞ্জশিরের দুই তালিবান-বিরোধী নেতা আহমেদ মাসুদ ও আমরুল্লা সালের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফাসিহুদ্দিন।

এক সময়ে আফগান সরকারের হাতে বন্দি হাজার হাজার তালিব জঙ্গির ঠিকানা ছিল কাবুলের প্রধান কারাগার। তালিবান ক্ষমতায় আসার পরেই জেল থেকে বার করেছে বন্দি ‘সতীর্থদের’। বন্দিদের নিয়েই নিরাপত্তাবাহিনী তৈরি হয়েছে। জেল পাহারা দিচ্ছে পুরনো বন্দিরা।

এ দিকে পুরনো সরকারের নিযুক্ত কূটনীতিকেরা চরম সঙ্কটে। তালিবান সরকার তাঁদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। দূতাবাসগুলোকে সেই মর্মে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কানাডা, জার্মানি, জাপান-সহ বেশ কিছু দেশের আফগান দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ অচলাবস্থা সেখানে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বার্লিনের এক আফগান কূটনীতিক বলেন, ‘‘বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা আমার সহকর্মীরা কাকুতি-মিনতি করছেন, যদি দেশগুলি তাঁদের আশ্রয় দেয়। আমিও কার্যত ভিক্ষা চাইছি।’’ তিনি জানান, কাবুলে তাঁর বাড়ি রয়েছে। সব সম্পত্তি বিক্রি করে সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। তাঁর সবচেয়ে আশঙ্কা স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে। তাঁরা কাবুলে রয়েছেন।

ব্রিটেনের নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ আফজল আশরফ বলেন, ‘‘আফগান দূতাবাসগুলো কী কাজ করবে? তারা তো কোনও সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছে না! তালিবান সরকারকে এখনও কোনও দেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে মান্যতা দেয়নি! বরং নিরাপত্তার খাতিরে আফগান কূটনীতিকেরা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন।’’ বার্লিনের ওই দূতাবাস কর্মীর মুখেও শোনা গিয়েছে একই কথা। তিনি বলেন, ‘‘আফগান কূটনীতিকেরা এখন শরণার্থী হতেও তৈরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan Crisis taliban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy