‘বানিজ বেনজ’-এ ছোটার প্রস্তুতি বানির। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়েছিল দু’টি পা। পোষ্যকে ওই অবস্থাতেই পথে ফেলে চলে গিয়েছিলেন তার মালিক। মেক্সিকোর রাস্তা থেকে সেই জখম কুকুরটিকে উদ্ধার করেছিল কুকুরপ্রেমীদের এক সংগঠন। সম্প্রতি কুকুরটিকে একটি হুইলচেয়ার বানিয়ে উপহার দিল বিলাসবহুল গাড়ি তৈরির নামী সংস্থা মার্সিডিজ বেনজ।
হুইলচেয়ার বানায় না মার্সিডিজ বেনজ। তবে এ ক্ষেত্রে তারা তাদের নিয়ম নীতির বাইরে গিয়েই ওই হুইলচেয়ার বানিয়েছে। তাই বিষয়টিকে স্রেফ হুইলচেয়ার বলতে নারাজ মার্সিডিজ সংস্থা। বিশেষ ‘গাড়ি’র নাম তারা দিয়েছে ‘বানিজ বেনজ’। বানি ওই দুর্ঘটনাগ্রস্ত কুকুরটির নাম। গাড়িটি তার কথা মাথায় রেখে তার সম্মানেই বানানো— এটা বোঝাতে এই নামকরণ।
কেন হঠাৎ বানির জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা? কেনই বা একটি কুকুরের কথা ভেবে নিজেদের কাজের নিয়ম বদলাল মার্সিডিজ বেনজের মতো সংস্থা? সেই কাহিনী ইনস্টাগ্রামে দু’টি পর্বে জানিয়েছে বানির উদ্ধারকারী সংস্থা।
দু’টি ধারাবাহিক ভিডিয়ো পার্ট ওয়ান এবং পার্ট টুতে বানির উদ্ধারকারী সংস্থার প্রতিনিধি বলেছেন, ‘‘আমরা অনেক কুকুরকে উদ্ধার করেছি। প্রত্যেকেটি উদ্ধারের ঘটনার নেপথ্যেই এক একটি গল্প রয়েছে। তবে বানির গল্পটি আমার সবচেয়ে প্রিয়।’’
এ বছরের গোড়ায় বানিকে মেক্সিকোর রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই সংস্থার কাছে বানির ঘটনাটি জানিয়ে ফোন যায়। তারা কুকুরটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু তার পায়ের জখম এতটাই গুরুতর ছিল যে, পিছনের দু’টি পা-ই বাদ দিতে হয়। তাতে বানি প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় তার হাঁটা চলা। কিন্তু সুস্থ হয়ে ওঠার পর সবাইকে চমকে দিয়েই বানি শুধুমাত্র তার দু’ পায়ের ভরে ছোটাছুটি শুরু করে। পাল্লা দিতে থাকে তার সমগোত্রীয় সুস্থ সবল কুকুরদের সঙ্গেও। তবে বানির জন্য মার্সিডিজের হুইল চেয়ারের কথা স্বপ্নেও মনে হয়নি তাঁদের।
সংস্থার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বানি ‘রেসকিউ ডগ’ প্রজাতির কুকুর। এদের ঘ্রাণ শক্তি তীব্র। যেকোনও কঠিন উদ্ধার কাজে এরা তুখোড়। বানির কথা জানিয়ে, তার সুস্থ হয়ে ওঠার ভিডিয়ো পোস্ট করে কিছু দিন আগে সংস্থাটি লিখেছিল, বানির এ বার একটা হুইলচেয়ার দরকার হয়ে পড়েছে। সেই পোস্টের নীচেই একজন লেখেন, ‘‘যে কোনও হুইলচেয়ার নয়, সাহসী বানির জন্য মার্সিডিজ বেনজের হুইলচেয়ার দরকার।’’ ওই সংস্থাটি জানিয়েছে, মজাচ্ছলে হলেও বিষয়টি বেশ নতুন ধরনের মনে হয় তাদের। সংস্থার তরফে এর পরেই যোগাযোগ করা হয় মার্সিডিজ বেনজের সঙ্গে। তাদের বানির কাহিনী জানিয়ে সংস্থাটি অনুরোধ করে তারা কি বানির জন্য হুইলচেয়ার বানাতে চায়? মার্সিডিজ রাজি হয়ে যায়।
এর পরেই আসে ভিডিয়োর দ্বিতীয় পর্ব। যেখানে দু’পেয়ে সারমেয়টি তার জন্য তৈরি হুইলচেয়ারে চেপে মজাসে দৌড়োচ্ছে। সেই আনন্দের দৌড় দেখে মুগ্ধ হয়েছেন নেটাগরিকেরা। বানিকে উদ্ধার করার জন্য এবং তাকে চলা ফেরার নতুন সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মার্সিডিজ বেনজ সংস্থাটিকেও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy