Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan

Taliban in Afghanistan: কুয়ো থেকে পাওয়া রাশি রাশি গুপ্তধন! প্রত্নসামগ্রীর ‘খনি’ থেকেই বিপুল আয় তালিবানের

কট্টরপন্থী তালিবানের বিশ্বাস, যে কোনও ধরনের মূর্তি তাদের অধিকৃত ভূমিতে রাখা মানেই তা ইসলামের অবমাননা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২১ ০৯:১২
Share: Save:
০১ ১৭
কট্টরপন্থী তালিবানের বিশ্বাস, যে কোনও ধরনের মূর্তি তাদের অধিকৃত ভূমিতে রাখা মানেই তা ইসলামের অবমাননা। সেই কারণে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পুরাতাত্বিক ক্ষেত্র ও প্রত্ন-নিদর্শনগুলিকে ধ্বংস করতে উদ্যত হয় তারা। প্রথম তালিব-শাসনে বামিয়ানের ধ্বংসলীলায় স্তম্ভিত হয়ে ওঠে বিশ্ব। দ্বিতীয় দফাতেও তারা বিধ্বংসী মনোভাব নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ইতিহাসবিদ ও পুরাতত্ত্ববিদরা।

কট্টরপন্থী তালিবানের বিশ্বাস, যে কোনও ধরনের মূর্তি তাদের অধিকৃত ভূমিতে রাখা মানেই তা ইসলামের অবমাননা। সেই কারণে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পুরাতাত্বিক ক্ষেত্র ও প্রত্ন-নিদর্শনগুলিকে ধ্বংস করতে উদ্যত হয় তারা। প্রথম তালিব-শাসনে বামিয়ানের ধ্বংসলীলায় স্তম্ভিত হয়ে ওঠে বিশ্ব। দ্বিতীয় দফাতেও তারা বিধ্বংসী মনোভাব নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ইতিহাসবিদ ও পুরাতত্ত্ববিদরা।

০২ ১৭
অতি প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন সংস্কৃতির লীলাভূমি আফগানিস্তান। বিভিন্ন পুরাণে উল্লেখ রয়েছে এই অঞ্চলের। ‘ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ’ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের ‘গন্ধর্ব’ হিসেবে উল্লেখ করে বলে মনে করেন পুরাণ বিশেষজ্ঞরা। সে দিক থেকে দেখলে মহাভারতের অন্যতম প্রধান চরিত্র গান্ধারীও আফগানিস্তানেরই কোনও রাজার কন্যা ছিলেন। ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণ’ থেকে ‘মহাভারত’— গান্ধার (গন্ধর্বদের বাসভূমি) অঞ্চলকে উন্নততর সভ্যতার উদাহরণ বলেই উল্লেখ করেছে। অধিকাংশ ইতিহাসবিদ গান্ধারকে আজকের আফগানিস্তান বলে চিহ্নিত করেন।

অতি প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন সংস্কৃতির লীলাভূমি আফগানিস্তান। বিভিন্ন পুরাণে উল্লেখ রয়েছে এই অঞ্চলের। ‘ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ’ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের ‘গন্ধর্ব’ হিসেবে উল্লেখ করে বলে মনে করেন পুরাণ বিশেষজ্ঞরা। সে দিক থেকে দেখলে মহাভারতের অন্যতম প্রধান চরিত্র গান্ধারীও আফগানিস্তানেরই কোনও রাজার কন্যা ছিলেন। ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণ’ থেকে ‘মহাভারত’— গান্ধার (গন্ধর্বদের বাসভূমি) অঞ্চলকে উন্নততর সভ্যতার উদাহরণ বলেই উল্লেখ করেছে। অধিকাংশ ইতিহাসবিদ গান্ধারকে আজকের আফগানিস্তান বলে চিহ্নিত করেন।

০৩ ১৭
পৌরাণিক কাল থেকে যদি ইতিহাসের নির্দিষ্ট সালতামামির যুগে প্রবেশ করা যায়, দেখা যাবে একের পর এক  সাম্রাজ্য ও সংস্কৃতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই ভূখণ্ডের ইতিহাস। এর মধ্যে পারসিক সম্রাট সাইরাসের সাম্রাজ্য, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের গ্রিক সাম্রাজ্য, ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্য, কুষাণ যুগ এবং অবশ্যই বিভিন্ন কালপর্বের ইসলামি সাম্রাজ্য অন্যতম। সেই কারণে এই ভূমির উপরে ব্যকট্রিয়ান-গ্রিক, কুষাণ, হুন, ঘোরি, মুঘল এবং দুররানি সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে।

পৌরাণিক কাল থেকে যদি ইতিহাসের নির্দিষ্ট সালতামামির যুগে প্রবেশ করা যায়, দেখা যাবে একের পর এক সাম্রাজ্য ও সংস্কৃতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই ভূখণ্ডের ইতিহাস। এর মধ্যে পারসিক সম্রাট সাইরাসের সাম্রাজ্য, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের গ্রিক সাম্রাজ্য, ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্য, কুষাণ যুগ এবং অবশ্যই বিভিন্ন কালপর্বের ইসলামি সাম্রাজ্য অন্যতম। সেই কারণে এই ভূমির উপরে ব্যকট্রিয়ান-গ্রিক, কুষাণ, হুন, ঘোরি, মুঘল এবং দুররানি সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে।

০৪ ১৭
এই সব সাংস্কৃতিক প্রভাবের চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে গোটা আফগানিস্তান জুড়ে। সে দেশের রাষ্ট্রীয় সংগ্রহশালায় সযত্নে রাখা রয়েছে গান্ধার শিল্পের নিদর্শন থেকে শুরু করে অনতি অতীতের ইসলামি পুরাতত্ত্বের নিদর্শনও। এর বাইরে সারা দেশেই ছড়িয়ে রয়ছে অসংখ্য পুরাতাত্ত্বিক ক্ষেত্র।

এই সব সাংস্কৃতিক প্রভাবের চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে গোটা আফগানিস্তান জুড়ে। সে দেশের রাষ্ট্রীয় সংগ্রহশালায় সযত্নে রাখা রয়েছে গান্ধার শিল্পের নিদর্শন থেকে শুরু করে অনতি অতীতের ইসলামি পুরাতত্ত্বের নিদর্শনও। এর বাইরে সারা দেশেই ছড়িয়ে রয়ছে অসংখ্য পুরাতাত্ত্বিক ক্ষেত্র।

০৫ ১৭
১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান আক্রমণ করে। এবং ১৯৯২ সালের মধ্যে বেশ কিছু প্রত্নক্ষেত্রে সোভিয়েত বাহিনী বা স্থানীয় বাসিন্দারা হানা দিতে থাকেন ‘গুপ্তধনের’ সন্ধানে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে প্রাচীন সভ্যতার বেশ কিছু নির্দশন-ক্ষেত্র। তালিবান শাসনে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান আক্রমণ করে। এবং ১৯৯২ সালের মধ্যে বেশ কিছু প্রত্নক্ষেত্রে সোভিয়েত বাহিনী বা স্থানীয় বাসিন্দারা হানা দিতে থাকেন ‘গুপ্তধনের’ সন্ধানে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে প্রাচীন সভ্যতার বেশ কিছু নির্দশন-ক্ষেত্র। তালিবান শাসনে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

০৬ ১৭
পূর্ব আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরের কাছে হাড্ডায় রয়েছে মহাযান বৌদ্ধ আমলের বেশ কিছু প্রত্নক্ষেত্র। কুষাণ সম্রাট কনিষ্কের পৃষ্ঠপোষকতাতেই ভারতের সীমা ছাড়িয়ে মহাযানবাদ বিস্তৃত হয় বিশ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। হাড্ডার টাপা শোতোর বৌদ্ধ স্তূপ ও মঠে হানা দেয় তালিবান বাহিনী। সেই প্রত্নক্ষেত্রের বিপুল ক্ষতি করে তারা।

পূর্ব আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরের কাছে হাড্ডায় রয়েছে মহাযান বৌদ্ধ আমলের বেশ কিছু প্রত্নক্ষেত্র। কুষাণ সম্রাট কনিষ্কের পৃষ্ঠপোষকতাতেই ভারতের সীমা ছাড়িয়ে মহাযানবাদ বিস্তৃত হয় বিশ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। হাড্ডার টাপা শোতোর বৌদ্ধ স্তূপ ও মঠে হানা দেয় তালিবান বাহিনী। সেই প্রত্নক্ষেত্রের বিপুল ক্ষতি করে তারা।

০৭ ১৭
হাড্ডায় অবস্থিত অন্যান্য প্রত্নক্ষেত্রেও হানা দিতে থাকে তালিবান বাহিনী। খাইবার গিরিপথের লাগোয়া এই অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে গান্ধার শিল্পের অজস্র নিদর্শন। তথাকথিত পৌত্তলিকতা বিরোধী তালিবান নির্বিচারে ভাঙতে শুরু করে এই সব মূর্তি। খ্রিস্টীয় প্রথম থেকে চতুর্থ শতকের মধ্যে নির্মিত বহু মূর্তিই তালিবানের রোষের সামনে পড়ে।

হাড্ডায় অবস্থিত অন্যান্য প্রত্নক্ষেত্রেও হানা দিতে থাকে তালিবান বাহিনী। খাইবার গিরিপথের লাগোয়া এই অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে গান্ধার শিল্পের অজস্র নিদর্শন। তথাকথিত পৌত্তলিকতা বিরোধী তালিবান নির্বিচারে ভাঙতে শুরু করে এই সব মূর্তি। খ্রিস্টীয় প্রথম থেকে চতুর্থ শতকের মধ্যে নির্মিত বহু মূর্তিই তালিবানের রোষের সামনে পড়ে।

০৮ ১৭
উত্তর আফগানিস্তানের তাখার প্রদেশে দিগ্বিজয়ী গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার এক নগরীর পত্তন করেছিলেন বলে জানা যায়। পরে সেই নগরীর উপরে গড়ে ওঠে ব্যাকট্রীয় গ্রিক বা ইন্দো-গ্রিক সভ্যতার কেন্দ্র। উজবেকরা পরে সেই শহরের নাম দেন আই-খানোউম। এখানে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায় বিপুল প্রত্নসামগ্রী। তালিবদের হাত ঘুরে আই-খানোউম থেকে বহু কিছুই চলে আসতে শুরু করে পাকিস্তানের বাজারে। ব্যক্তিগত প্রত্ন সংগ্রাহকরা তা বিপুল দামে কিনে নিতে থাকেন। তালিবানের হাতে বেশ ভাল পরিমাণে অর্থ সরবরাহ করে এই আই-খানোউমের প্রত্নভান্ডার। তালিবদের প্রথম দফার শাসন শেষ হলে বেশ কিছু প্রত্নবস্তু উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তালিবানের কাণ্ডে গোটা আই-খনোউমই বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে।

উত্তর আফগানিস্তানের তাখার প্রদেশে দিগ্বিজয়ী গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার এক নগরীর পত্তন করেছিলেন বলে জানা যায়। পরে সেই নগরীর উপরে গড়ে ওঠে ব্যাকট্রীয় গ্রিক বা ইন্দো-গ্রিক সভ্যতার কেন্দ্র। উজবেকরা পরে সেই শহরের নাম দেন আই-খানোউম। এখানে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায় বিপুল প্রত্নসামগ্রী। তালিবদের হাত ঘুরে আই-খানোউম থেকে বহু কিছুই চলে আসতে শুরু করে পাকিস্তানের বাজারে। ব্যক্তিগত প্রত্ন সংগ্রাহকরা তা বিপুল দামে কিনে নিতে থাকেন। তালিবানের হাতে বেশ ভাল পরিমাণে অর্থ সরবরাহ করে এই আই-খানোউমের প্রত্নভান্ডার। তালিবদের প্রথম দফার শাসন শেষ হলে বেশ কিছু প্রত্নবস্তু উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তালিবানের কাণ্ডে গোটা আই-খনোউমই বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে।

০৯ ১৭
আফগান-পাক সীমান্তে অবস্থিত মির জাকাহ্‌ অঞ্চলে ব্যাকট্রীয়-গ্রিক আমলের প্রচুর মুদ্রা পাওয়া যায়। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫-এর মধ্যে এক কুয়ো থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ রুপো ও ব্রোঞ্জ মুদ্রার সন্ধান মেলে। সেই দুর্মূল্য মুদ্রার এক বড় অংশ তালিবানের হাত হয়ে পাচার হয়ে যায় আন্তর্জাতিক বাজারে।

আফগান-পাক সীমান্তে অবস্থিত মির জাকাহ্‌ অঞ্চলে ব্যাকট্রীয়-গ্রিক আমলের প্রচুর মুদ্রা পাওয়া যায়। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫-এর মধ্যে এক কুয়ো থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ রুপো ও ব্রোঞ্জ মুদ্রার সন্ধান মেলে। সেই দুর্মূল্য মুদ্রার এক বড় অংশ তালিবানের হাত হয়ে পাচার হয়ে যায় আন্তর্জাতিক বাজারে।

১০ ১৭
সোভিয়েত অধিকার এবং তালিবানের প্রথম শাসনে কাবুলের জাতীয় সংগ্রহালয় থেকে প্রচুর মূল্যবান সামগ্রী লুঠ হয় বলে জানা যায়। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সময়কালের বিস্তর পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহ এখান থেকে উধাও হয়ে যায়, এ কথা অনেক পুরাতাত্বিকই বলেন। ১৯৯২ সালে তালিবরা লুঠপাট চালায় জাতীয় সংগ্রহালয়ে। সংগ্রহের প্রায় ৭০ শতাংশই ধ্বংস হয় বা খোয়া যায় এই কাণ্ডে।

সোভিয়েত অধিকার এবং তালিবানের প্রথম শাসনে কাবুলের জাতীয় সংগ্রহালয় থেকে প্রচুর মূল্যবান সামগ্রী লুঠ হয় বলে জানা যায়। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সময়কালের বিস্তর পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহ এখান থেকে উধাও হয়ে যায়, এ কথা অনেক পুরাতাত্বিকই বলেন। ১৯৯২ সালে তালিবরা লুঠপাট চালায় জাতীয় সংগ্রহালয়ে। সংগ্রহের প্রায় ৭০ শতাংশই ধ্বংস হয় বা খোয়া যায় এই কাণ্ডে।

১১ ১৭
১৯৯৮-এর ১১ অগস্ট তালিবান ধ্বংস করে পুলি কুমরি গ্রন্থাগার। ধ্বংস করে ৫৫ হাজার বই এবং প্রাচীন পাণ্ডুলিপি।

১৯৯৮-এর ১১ অগস্ট তালিবান ধ্বংস করে পুলি কুমরি গ্রন্থাগার। ধ্বংস করে ৫৫ হাজার বই এবং প্রাচীন পাণ্ডুলিপি।

১২ ১৭
২০০১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে সংগ্রহালয়ের স্টোররুম খুলে দেওয়ার নির্দেশ আসে তালিবান শাসকদের পক্ষ থেকে। এই সময়ে মোল্লা খারি ফইজ উর-রহম নামে এক তালিব জনসমক্ষে এক বোধিসত্ত্ব মূর্তিকে চড় মারেন।

২০০১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে সংগ্রহালয়ের স্টোররুম খুলে দেওয়ার নির্দেশ আসে তালিবান শাসকদের পক্ষ থেকে। এই সময়ে মোল্লা খারি ফইজ উর-রহম নামে এক তালিব জনসমক্ষে এক বোধিসত্ত্ব মূর্তিকে চড় মারেন।

১৩ ১৭
তালিবানি অপকীর্তির সব থেকে কদর্য উদাহরণ হল বামিয়ানের বিশাল বুদ্ধমূর্তিগুলির ধ্বংসসাধন। ২০০১ সালের মার্চে তালিবান নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমর এক ফতোয়া জারি করে দেশের যাবতীয় মূর্তি ধ্বংসের নির্দেশ দেন। তাঁর মতে, এই সব কিছুই আফগানিস্তানের প্রাক-ইসলামি পৌত্তলিকতার উদাহরণ। ২০০১-এর মার্চ মাসে কয়েক সপ্তাহ ধরে ধ্বংস করা হয় ষষ্ঠ শতকে নির্মিত ১২৫ ফুট এবং ১৮০ ফুট উচ্চতার দু’টি বুদ্ধ মূর্তি। পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয় গান্ধার শৈলীতে নির্মিত সব থেকে বড় শিল্প নিদর্শন।

তালিবানি অপকীর্তির সব থেকে কদর্য উদাহরণ হল বামিয়ানের বিশাল বুদ্ধমূর্তিগুলির ধ্বংসসাধন। ২০০১ সালের মার্চে তালিবান নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমর এক ফতোয়া জারি করে দেশের যাবতীয় মূর্তি ধ্বংসের নির্দেশ দেন। তাঁর মতে, এই সব কিছুই আফগানিস্তানের প্রাক-ইসলামি পৌত্তলিকতার উদাহরণ। ২০০১-এর মার্চ মাসে কয়েক সপ্তাহ ধরে ধ্বংস করা হয় ষষ্ঠ শতকে নির্মিত ১২৫ ফুট এবং ১৮০ ফুট উচ্চতার দু’টি বুদ্ধ মূর্তি। পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয় গান্ধার শৈলীতে নির্মিত সব থেকে বড় শিল্প নিদর্শন।

১৪ ১৭
সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায় তালিবানের এই কীর্তিতে। নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে এই কাজকে ‘ইসলামি আদর্শের বিরোধী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ওই বিবৃতিতে পবিত্র কোরান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দেখানো হয়, এমন ধ্বংসলীলাকে ইসলাম সমর্থন করে না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু সেই সময়ের তালিবানি রাজ সে সবে কর্ণপাত করেনি।

সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায় তালিবানের এই কীর্তিতে। নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে এই কাজকে ‘ইসলামি আদর্শের বিরোধী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ওই বিবৃতিতে পবিত্র কোরান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দেখানো হয়, এমন ধ্বংসলীলাকে ইসলাম সমর্থন করে না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু সেই সময়ের তালিবানি রাজ সে সবে কর্ণপাত করেনি।

১৫ ১৭
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তালিবানের অর্থভান্ডারকে পুষ্ট করেছে আফগান প্রত্নবস্তুর চোরাচালান এবং লুঠতরাজ। বামিয়ানের ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি চর্চা শুরু হয়। ২০০১-এর অক্টোবরে আমেরিকান বাহিনী তালিবান শাসনকে উৎখাত করে। কিন্তু সে দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের নিদর্শনগুলির যা ক্ষতি হওয়ার তত দিনে তা হয়ে গিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তালিবানের অর্থভান্ডারকে পুষ্ট করেছে আফগান প্রত্নবস্তুর চোরাচালান এবং লুঠতরাজ। বামিয়ানের ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি চর্চা শুরু হয়। ২০০১-এর অক্টোবরে আমেরিকান বাহিনী তালিবান শাসনকে উৎখাত করে। কিন্তু সে দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের নিদর্শনগুলির যা ক্ষতি হওয়ার তত দিনে তা হয়ে গিয়েছে।

১৬ ১৭
আবার তালিবানি শাসনে আফগানিস্তান। কাবুলের জাতীয় সংগ্রহালয়ের অধিকর্তা মহম্মদ ফাহিম রহিমি জানিয়েছেন, জাদুঘরের বাইরে সশস্ত্র রক্ষী বসিয়েছে তালিবান। আর যাতে বামিয়ান-কাণ্ড না ঘটে, তেমন নির্দেশও নাকি দেওয়া হয়েছে তালিব যোদ্ধাদের। কিন্তু সত্যিই কি সেই নির্দেশ কার্যকর হবে?

আবার তালিবানি শাসনে আফগানিস্তান। কাবুলের জাতীয় সংগ্রহালয়ের অধিকর্তা মহম্মদ ফাহিম রহিমি জানিয়েছেন, জাদুঘরের বাইরে সশস্ত্র রক্ষী বসিয়েছে তালিবান। আর যাতে বামিয়ান-কাণ্ড না ঘটে, তেমন নির্দেশও নাকি দেওয়া হয়েছে তালিব যোদ্ধাদের। কিন্তু সত্যিই কি সেই নির্দেশ কার্যকর হবে?

১৭ ১৭
আপাতত বিশ্বের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ঐতিহ্য সংরক্ষকদের বড় অংশের চোখ আফগানিস্তানের পরিস্থিতির দিকে। শক-হুন-পাঠান-মুঘল যে ভূমিতে সত্যিই এক দেহে লীন হয়েছিল, যে ভূমিতে কনিষ্ক শেষ বৌদ্ধ মহাসঙ্গীতি আহ্বান করে মহাযান ধর্মের সহিষ্ণুতাকে বিশ্বজনীন করে তুলতে চেয়েছিলেন, সেখানে আবার কি ঘটতে চলেছে ধ্বংসলীলা? আপাতত রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় সকলেই।

আপাতত বিশ্বের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ঐতিহ্য সংরক্ষকদের বড় অংশের চোখ আফগানিস্তানের পরিস্থিতির দিকে। শক-হুন-পাঠান-মুঘল যে ভূমিতে সত্যিই এক দেহে লীন হয়েছিল, যে ভূমিতে কনিষ্ক শেষ বৌদ্ধ মহাসঙ্গীতি আহ্বান করে মহাযান ধর্মের সহিষ্ণুতাকে বিশ্বজনীন করে তুলতে চেয়েছিলেন, সেখানে আবার কি ঘটতে চলেছে ধ্বংসলীলা? আপাতত রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় সকলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy