— প্রতীকী ছবি।
একসঙ্গে অনেকগুলো খুনের সাক্ষী তিনি। শুধু সাক্ষীই নন, গণহত্যাতে জড়িতও বটে। জনান রেহবোগেন তখন কিশোর। সেই বয়সেই হয়ে উঠেছিলেন স্টাটহফে হিটলারের ওই নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের পাহারাদার।
আজ নবতিপর জনান। তাতে কি! আইন তাঁকে ছাড়েনি। বার্লিনের একটি জুভেনাইল আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৯৪ বছরের ওই বৃদ্ধের।
১৯৪২ সালের জুন থেকে ১৯৪৪-র সেপ্টেম্বর। ওই দু’বছরই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রক্ষীর কাজ করেছেন জনান। যে হেতু তখন তিনি কিশোর ছিলেন, আজও তাই জুভেনাইল আদালতেই বিচার হচ্ছে তাঁর। এখানে দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছর সাজা ভোগ করতে হবে তাঁকে। তাতেই খুশি ওই ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা পরিবারের সদস্যরা।
বল্টিক সাগরের উপকূল-সংলগ্ন স্টাটহফ ক্যাম্পে জনান থাকাকালীন খুন করা হয়েছিল অন্তত ১০০ জন পোলিশ বন্দিকে। আর কত জন যে ইহুদি ছিলেন, তার কোনও হিসেবই নেই।
রেকর্ড বলছে, ১৯৪৩-৪৪ মধ্যে অন্তত ১৪০ জন ইহুদি মহিলা ও শিশুকে সরাসরি গ্যাস ইঞ্জেকশন করে খুন করা হয়েছিল। অনেককে ঠান্ডায় ফেলে রেখে মারা হয়। গণহত্যার আরও হাজারটা নির্মম পন্থা ছিল ওই ক্যাম্পে। সেই সব ভয়াবহ পদ্ধতিকেই হাতে-কলমে সফল করার কাজ করতেন জনান। এ দিন আদালতে জনানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি পড়ে শোনান আইনজীবী আন্দ্রিয়াস ব্রেন্ডেল। আদালতে তখন হাজির কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা ১৭টি পরিবার।
জুডি মেইজ়েল নামে এক ৮৯ বছরের বৃদ্ধা জানালেন, মাত্র ১২ বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে স্টাটহফের সেই ক্যাম্পে এসেছিলেন। তাঁর স্পষ্ট মনে আছে, গ্যাস চেম্বারে ঢোকার লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু ঠিক শেষ মুহূর্তে এক রক্ষী জানান, তিনি ফিরে যেতে পারেন। মা চিৎকার করছিলেন, ‘‘দৌড়ো, জুডি দৌড়ো!’’ আর মাকে দেখেননি জুডি। গ্যাস চেম্বারেই হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
জুডির কথায়, ‘‘মানবতার বিরুদ্ধে ওই অভাবনীয় নৃশংস তাণ্ডবের দায় ওই খুনিকে নিতেই হবে। আমার প্রিয় মা, যাকে গোটা জীবন আমি কাছে পেলাম না, তাঁকে খুনে সাহায্য করার জন্য শাস্তি পেতেই হবে জনানকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy