ছবি: সংগৃহীত।
গাজ়ার মূল হাসপাতাল আল শিফায় চিকিৎসা চলছিল ওই সমস্ত সঙ্কটজনক শিশুর। কিন্তু সোমবার সকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়ে দিয়েছে, গাজ়ার এই মূল হাসপাতাল আর হাসপাতাল হিসাবে কাজ করছে না। হু-এর প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস জানিয়েছেন, হাসপাতালের ভিতর ক্রমাগত ভেসে আসছে গুলি এবং বোমার শব্দ।
হু-এর তরফে ওই ৩৬টি শিশুর কথা জানিয়ে, ইজ়রায়েল সেনার কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তারা ওই শিশুদের নিরাপদে বার করে আনার ব্যাপারে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঠিকই। তবে এই প্রক্রিয়ায় হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে তারা যে হাসপাতালে পাল্টা হামলা চালাবে না, সেই প্রতিশ্রুতি দেয়নি। অন্য দিকে, প্যালেস্তিনীয়দের জন্য চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার সংস্থা ‘মেডিক্যাল এইড ফর প্যালেস্তানিয়ানস’ জানিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া ওই শিশুদের অন্য হাসপাতালে বা কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে পারলে বাকিটা তারা সামলাতে পারবে। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া ওই কাজ কী ভাবে হবে, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না চিকিৎসকেরা।
রাজধানী গাজ়া শহরের মূল হাসপাতাল আল-শিফা হাসপাতালই। গাজ়ার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে অন্তত ২০০০ মানুষ রয়েছেন ওই হাসপাতালেন ভিতরে। এর মধ্যে রোগীরা ছাড়াও রয়েছেন চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীরা। হু জানিয়েছে, বহু রোগীর চিকিৎসা চলছে জীবনদায়ী ব্যবস্থার সাহায্যে। এমনকি, হাসপাতাল শেষ নিরাপদ আশ্রয় ভেবে যুদ্ধে ঘর হারানো বহু মানুষও আশ্রয় নিয়েছিলেন হাসপাতালের ভিতরে। গাজ়ার বহু শিশুও এই মুহূর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ওই হাসপাতালে। তার মধ্যে সদ্যোজাত ওই ৩৬ জনও রয়েছে। প্রত্যেকেরই নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে হু। টেড্রস জানিয়েছে, গাজ়ার পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর, আরও আশঙ্কাজনক করে তুলেছে এই ঘটনা।
শনিবার রাত থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। রবিবার হু জানিয়ে দেয়, গাজ়ার আল শিফা হাসপাতালের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করে উঠতে পারছে না তারা। ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধে ছারখার গাজ়া শহরে কোনওমতে টিকে ছিল এই হাসপাতালগুলিই। যুদ্ধে জখম হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসা করছিল তারা। তাদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলছিল হু। কিন্তু শনিবার রাতের পর আল-শিফার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করতে না পেরে তারা আরও বিশদে খবর নেয়। জানতে পারে, গাজ়ার এই হাসপাতালটির চারপাশে ঘিরে ফেলেছে ট্যাঙ্কার।
এক্স হ্যান্ডলে খবরটি জানিয়ে টেড্রস লেখেন, ‘‘পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক এবং ভীতিপ্রদ! হাসপাতালটির ভিতরে কয়েকশো রোগী রয়েছেন। রয়েছেন চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীরা। কিন্তু হাসপাতালের চৌহদ্দি পেরিয়ে কেউ পালানোর চেষ্টা করলেই তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি নির্বিচারে চালানো হচ্ছে।’’
উদ্বিগ্ন হু রবিবারই অনুরোধ করেছিল গাজ়ায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার। টেড্রস লিখেছিলেন, ‘‘তা না হলে ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর আবেদন ছিল, ‘‘যাঁরা এই মুহূর্তে হাসপাতালে পণবন্দি, তাঁরা যেন কোনও ভাবেই ওষুধ, খাবার এবং চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন।’’ কিন্তু সোমবার টেড্রসই জানিয়ে দিলেন, গাজ়ার আল-শিফা হাসপাতাল আর হাসপাতাল হিসাবে কাজ করছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy