Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

উপজেলা ভোটে জিতে ফের অস্বস্তিতে বিএনপি

বাংলাদেশে প্রথম দফার ৯৫টি উপজেলা নির্বাচনে সব চেয়ে বেশি আসন পেল বিএনপি। ৪৪টি উপজেলা চেয়্যারম্যানের পদে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের শরিক জামাতে ইসলামি জিতেছে ১২টি উপজেলায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের প্রার্থীরা ৩৩টি উপজেলায় জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে বিএনপি-র এই সাফল্যের পরে জানুয়ারির ৫ তারিখে তাদের সাধারণ নির্বাচন বর্জনের যৌক্তিকতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:২৮
Share: Save:

বাংলাদেশে প্রথম দফার ৯৫টি উপজেলা নির্বাচনে সব চেয়ে বেশি আসন পেল বিএনপি। ৪৪টি উপজেলা চেয়্যারম্যানের পদে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের শরিক জামাতে ইসলামি জিতেছে ১২টি উপজেলায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের প্রার্থীরা ৩৩টি উপজেলায় জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে বিএনপি-র এই সাফল্যের পরে জানুয়ারির ৫ তারিখে তাদের সাধারণ নির্বাচন বর্জনের যৌক্তিকতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

সাধারণ নির্বাচনের আগে ১০টি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সব ক’টিতেই জয়ী হয় বিএনপি। কিন্তু নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি করে তারা ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন বয়কট করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের জোট কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই নির্বাচনে জিতে বাংলাদেশে সরকার গড়ে। ভোটের পরে বিএনপি ও তার শরিক জামাতে ইসলামি আন্দোলনের ডাক দিলেও তা জমেনি। তার পরে একই সরকার, একই নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি-জামাত। কাল প্রথম দফার নির্বাচনে প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পড়ে। সেই নির্বাচনে আওয়ামি লিগের চেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন বিএনপি-জামাত প্রার্থীরা। কাল নির্বাচনের সময়েও কারচুপি ও জালিয়াতির নানা অভিযোগ করেছিল বিএনপি। দেখা গিয়েছে, যে সব জায়গায় এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার অনেকগুলিতেই জিতেছেন বিএনপি প্রার্থীরা।

আওয়ামি লিগের প্রবীণ নেতা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু প্রশ্ন তুলেছেন, “ওরা নির্বাচনে অংশ নিল। জয়ীও হল। এ বার কী বলবে?” আমু বলেন, এর আগে সিটি কর্পোরেশনেও কারচুপির অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। দেখা গিয়েছে সব জায়গাতে ওরাই জিতেছে। এ বার উপজেলা নির্বাচনেও সেই একই কাহিনি। আমু বলেন, “তারা বলেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কিন্তু উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে এই প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই অবাধ নির্বাচন সম্ভব।” তা হলে সাধারণ নির্বাচন কেন বয়কট করল বিএনপি জোট? আওয়ামি লিগের এই প্রবীণ নেতার দাবি, “অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতা দখলের ছক করেছিল বিএনপি-জামাত জোট। ভোটে তাদের আস্থা নেই। তারা চক্রান্তে বিশ্বাসী।” আমুর কথায়, আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব তাদের সেই চক্রান্ত বানচাল করে বাংলাদেশকে সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। এ জন্য শেখ হাসিনাকে অনেক ঝুঁকিও নিতে হয়েছে।

বিএনপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে অবশ্য তাদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তকেই সঠিক বলে দাবি করছে। দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি বলেন, সিটি কপোর্রেশন ও উপজেলা নির্বাচনে বিরোধীরা জিতলেও দেশের শাসন আওয়ামি লিগের হাতেই থাকবে। এ সব ক্ষেত্রে ছাড় দিলেও নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ব্যবহার করে তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে সাধারণ নির্বাচনে ভয়াবহ কারচুপির পরিকল্পনা করেছিল। রিজভি বলেন, “সেই খবর পেয়েই আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনড় ছিলাম। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে না-গিয়ে আমাদের দাবিকেই সমর্থন করেছেন।” রিজভি বলেন, তা ছাড়া উপজেলা নির্বাচন দলীয় ব্যানারে হয় না। কিন্তু মানুষ যে ওদের চান না, তা আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গেল।

বিএনপি কি ফের গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরল? রিজভির মতে, বিএনপি গণতন্ত্রের পথে চিরকাল থেকেছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আর আমু বলছেন, “আদৌ নয়। ফের তারা চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করতে পারে। হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ সেনাশাসকের হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলেই বিশ্বাসী।” আমু বলেন, এখন তো উদ্বেগ আরও বেড়েছে। কারণ আল কায়দা ও বিএনপি-জামাত এখন এক সুরে কথা বলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

vote
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy