Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

অপরিণত গর্ভ, চিকিৎসার জোরে যমজের মা

এ জীবনে মা হতে পারবেন না। কারণ তিনি নাকি পুরোপুরি মেয়েই নন। শরীরে না আছে জরায়ু, না আছে ফ্যালোপিয়ান টিউব, না গর্ভ। উনিশের কোঠায় পৌঁছে ডাক্তারদের মুখে এ হেন জবাব শুনে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল হেলে হেনেস-এর। ৯ বছর পরে সেই মেয়েই মা হলেন! তা-ও যমজ সন্তানের। চেহারা থেকে গলার স্বর, আদ্যপান্ত মেয়ে।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৬
Share: Save:

এ জীবনে মা হতে পারবেন না। কারণ তিনি নাকি পুরোপুরি মেয়েই নন। শরীরে না আছে জরায়ু, না আছে ফ্যালোপিয়ান টিউব, না গর্ভ।

উনিশের কোঠায় পৌঁছে ডাক্তারদের মুখে এ হেন জবাব শুনে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল হেলে হেনেস-এর।

৯ বছর পরে সেই মেয়েই মা হলেন! তা-ও যমজ সন্তানের।

চেহারা থেকে গলার স্বর, আদ্যপান্ত মেয়ে। কিন্তু বয়ঃসন্ধিক্রমে পৌঁছেও আর পাঁচটা মেয়ের থেকে আলাদা হেলে। ঋতুচক্র হতো না তাঁর। এ দিকে শরীরে বাড়বৃদ্ধির সব মেয়েলি লক্ষণই ছিল। চিকিৎসকদের কথা মেনে সবুর করতে করতে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে মেয়ে। এর পরই স্ক্যান রিপোর্টে ধরা পড়ে, মা হওয়ার জন্য যে অঙ্গগুলোর প্রয়োজন, একটাও তাঁর শরীরে নেই। একে বলে ‘অ্যান্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি সিন্ড্রোম’।

“ডাক্তারদের মুখে যখন প্রথম বার শুনি, আকাশ ভেঙে পড়েছিল মাথায়। মনে হয়েছিল, শরীরের একটা অংশ যেন কেউ কেটে ফেলেছে। বিয়ে-সংসার-সন্তান, বাদ পড়ে যাব সব সুখ থেকেই। কোনও ছেলে বন্ধুত্ব করবে না,” দুই সন্তানকে কোলে নিয়ে ন’বছর আগের সেই কাহিনি শোনালেন লন্ডনের বাসিন্দা হেলে-ই। একমাত্র ছেলেবেলার প্রিয় বন্ধু স্যামকে জানিয়েছিলেন নিজের অবস্থার কথা। পরিবারের পাশাপাশি বন্ধুকেও সঙ্গে পান লড়াইয়ের ময়দানে। ঠিক করেন হাল ছাড়বেন না কিছুতেই। একের পর এক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে শুরু করেন। কিন্তু কেউই কিছু সুবিধা করতে পারেননি। শেষে আশার আলো দেখান লন্ডনের রয়্যাল ডার্বি হাসপাতালের ডাক্তাররা। স্ক্যান করে তাঁরা জানান, একটা ছোট্ট অপরিণত গর্ভ রয়েছে হেলের শরীরে। যা আগের স্ক্যানে ধরা পড়েনি।

“মাপে মাত্র কয়েক মিলিমিটার। কিন্তু সেটাই দিশা দেখায়...”, বললেন হেলে। ওই ছোট্ট গর্ভকেই হরমোন থেরাপির মাধ্যমে পরিণত চেহারা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন চিকিৎসকরা। কারণ, এক বার যদি সেটা করা সম্ভব হয়, তা হলেই পরীক্ষাগারে কৃত্রিম উপায়ে (আইভিএফ পদ্ধতিতে) মা হওয়া সম্ভব। অন্তত ৬০ শতাংশ সেই সম্ভাবনা রয়েছে। শুরু হয় ওষুধের মাধ্যমে প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ পালা। শরীরও সাড়া দেয় চিকিৎসায়। পরিকল্পনা মাফিকই চলতে থাকে সব কিছু। কিন্তু হেলে যখন ছ’সপ্তাহের সন্তানসম্ভবা, রিপোর্টে ফের চমক। যমজ সন্তানের মা হতে চলেছেন হেলে।

“এমনটাও হতে পারে, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না...। উত্তেজনায় হাত-পা অসাড় হয়ে গিয়েছিল। এক সঙ্গে জোড়া উপহার!” হেলে যখন এ কাহিনি শোনাচ্ছেন, মায়ের কোলে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আভেরি ও ডার্সি। পাশে, হেলের সেই ছোট্টবেলার বন্ধু স্যাম। দুই খুদের বাবা।

অন্য বিষয়গুলি:

London androgen insensitivity syndrome
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy