Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
IPL 2025 Auction

একা বেঙ্কটেশের জন্য খরচ ২৩.৭৫ কোটি! পকেটে টান পড়লেও প্রথম একাদশ প্রায় পাকা করে ফেলল কলকাতা

প্রথম দিনের শুরু থেকে একের পর এক ভাল ক্রিকেটার হাতছাড়া। প্রথম ক্রিকেটার বেঙ্কটেশ আয়ারকে পেতেই খরচ তহবিলের অর্ধেক। তবু দল গোছাতে সমস্যা হল না শাহরুখের দলের।

cricket

কেকেআরের পাঁচ ক্রিকেটার কুইন্টন ডি’কক, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী, বেঙ্কটেশ আয়ার, রহমানুল্লাহ গুরবাজ় এবং অনরিখ নোখিয়া। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০৭
Share: Save:

ডেভন কনওয়ে, কেএল রাহুল, জস বাটলার, ডেভিড মিলার, এডেন মার্করাম, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ঈশান কিশন, মহম্মদ শামি।

যে টাকা দিয়ে রবিবার বেঙ্কটেশ আয়ারকে কিনল কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর), তাতে উপরোক্ত নামগুলির মধ্যে এক বা একাধিক ক্রিকেটারকে কিনে ফেলতে পারত তারা। তবে না, একজন ক্রিকেটারের জন্য অতিরিক্ত খরচের রাস্তা থেকে এ বারও সরতে দেখা গেল না কেকেআরকে। গত বার মিচেল স্টার্ককে আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম দিয়ে কেনার পর এ বার প্রচুর খরচ হল বেঙ্কটেশের পিছনে। তবে দিনের শেষে কেকেআরের বাকি ক্রিকেটার কেনা দেখে বোঝা গিয়েছে, প্রথম দিনই দল মোটামুটি গোছানো হয়ে গিয়েছে। বাকি শুধু কয়েকটি জায়গা।

নিলামে নামার আগে কেকেআরের দরকার ছিল একজন ভাল ওপেনার, দেশি-বিদেশি মিলিয়ে মিডল অর্ডারের কিছু ব্যাটার, ভাল মানের জোরে বোলার। আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, রিঙ্কু সিংহ, রমনদীপ সিংহ, হর্ষিত রানা এবং বরুণ চক্রবর্তীকে আগেই ধরে রেখেছিল তারা। বাকি যে জায়গাগুলি খালি ছিল সেগুলির অনেকটাই ভর্তি করা গিয়েছে। তবে পুরোপুরি ভর্তি হয়নি। যে ছ’জন ক্রিকেটারকে ধরে রেখেছে কেকেআর তাঁদের প্রত্যেকেই প্রথম একাদশের। বাকি পাঁচ জনের দরকার ছিল। সেখানেও দলের পুরনো ক্রিকেটারদের ধরে রাখার দিকে গেল তারা। নেওয়া হল বেঙ্কটেশ, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী এবং রহমানুল্লাহ গুরবাজ়কে। ফিল সল্টকে হারালেও ওপেনিংয়ে কুইন্টন ডি’কক চলে এলেন। নারাইনের সঙ্গে তিনি ওপেন করতে পারবেন। না হলে গুরবাজ়ও রয়েছেন।

দেশি বোলারদের মধ্যে শেষ বেলায় কেনা হল বৈভব অরোরাকে। তবে গত বার বৈভব সব ম্যাচে খেলেননি। তাঁকে হর্ষিত রানার সঙ্গে খেলানো হয়েছে একই ম্যাচে। কিন্তু দেশি বোলারদের মধ্যে বৈভব যে অনেক উপরে থাকবেন তা নয়। তবে একদম শেষে কেনা মায়াঙ্ক মারকান্ডে কেকেআরের বাজি হতে পারেন। দেশি-বিদেশি বোলার মিলিয়ে কেকেআরের আর খান দুয়েক বোলার হলে মন্দ হবে না। সে ক্ষেত্রে নিলামের দ্বিতীয় দিনে আকাশ দীপ, মুকেশ কুমার, জেরাল্ড কোয়েৎজ়িদের দিকে ঝাঁপানো যায়। তবে তহবিলে টাকা কম থাকায় কতটা সম্ভব হবে সেটাই প্রশ্ন।

এত কিছু সত্ত্বেও বেঙ্কটেশকে প্রায় ২৪ কোটি টাকা দেওয়ার যুক্তি কোনও ভাবেই মানা যাচ্ছে না। হাতে ৫১ কোটি নিয়ে নামা সত্ত্বেও তারা পকেট প্রায় অর্ধেক খালি করে ২৩.৭৫ কোটি টাকা দিয়ে কিনল কাকে? না বেঙ্কটেশকে। এই দামে তারা নিতে পারত রাহুলকে। তাতে অধিনায়ক এবং উইকেটকিপারের জায়গা পূরণ হত। বাটলার, মিলারও অনায়াসে চলে আসতেন। সব ছেড়ে শেষে কিনা বেঙ্কটেশ? ২০২১ সালে দলকে ফাইনালে তুলতে সাহায্য করেছিলেন ঠিকই। দুই মরসুম আগে শতরানও করেছেন। তাই বলে তিনি রাহুলের থেকেও বেশি দাম পাবেন? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলবেন, কখনওই না। জাতীয় দল থেকে যে বেঙ্কটেশ শতহস্ত দূরে চলে গিয়েছেন, তিনি রাহুলের থেকে যে কোনও দিন এগিয়ে থাকবেন। সস্তায় রাহুলকে কেনার সুযোগ থাকলেও কেকেআরের কর্তারা তা হারালেন। তা হলে কি টি-টোয়েন্টির রাহুল কোনও গুরুত্ব পেলেন না কেকেআর কর্তাদের কাছে?

নিলামের প্রথম দিন কেকেআরের কেনা ক্রিকেটারদের তালিকা।

নিলামের প্রথম দিন কেকেআরের কেনা ক্রিকেটারদের তালিকা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

নিলামের প্রথম দিনে শুরু থেকে নামীদামি ক্রিকেটারদের পিছনে ঝাঁপিয়েছিল কেকেআর। যত দূর সম্ভব চেষ্টা করেছে গত মরসুমের দল ধরে রাখার। তবে কেকেআর চাইলেই বাকিরা দেবে কেন? ওপেনার খোঁজার লক্ষ্যে প্রথমে বাটলারের দিকে ঝাঁপানো হল। ১০ কোটির অঙ্ক ছুঁতেই কেকেআর ‘আউট’। এর পর শ্রেয়স। শুরুটা করল কেকেআর। আবারও ১০ কোটিতেই ‘আউট’। সেই শ্রেয়স রেকর্ড দামে গেলেন পঞ্জাবে। এর পর রাহুলের পিছনেও ছুটেছিল কেকেআর। সেখানেও বেশি দূর দৌড়তে পারেনি। চেষ্টা হয়েছিল প্রাক্তনী রাহুল ত্রিপাঠি, মহম্মদ শামিকে নেওয়ার। সেখানেও ব্যর্থতা। কনওয়ে, মিলার, মার্করামরাও একে একে বেরিয়ে গেলেন। বেঙ্কি মাইসোর, জয় মেহতারা তখন নিলামের টেবিলে দর্শকের ভূমিকায়।

কে জানত তখন বেঙ্কটেশের পিছনে ও ভাবে ছুটবে কেকেআর! দীর্ঘ ক্ষণ লড়াই চলল বেঙ্গালুরুর সঙ্গে। এক সময় তারা হাল ছেড়ে দিল। বেঙ্কির হাত থেকে ‘প্যাডল’ নামছিলই না। যে যা-ই দর হাঁকুক, বেঙ্কটেশকে নেবেন বলে যেন মনস্থির করেই ফেলেছিলেন। তবে এত টাকা খসাতে হবে তা বোধহয় ভাবতে পারেননি। প্রশ্ন উঠছে, বেঙ্কটেশ যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হবেন তা হলে তাঁকে ধরে রাখা হল না কেন? সে ক্ষেত্রে ১৮ কোটিতেই কাজ হাসিল হত। এ সব ভেবেই বোধহয় বেঙ্কটেশ নিশ্চিত হওয়ার পর বেঙ্কির মুখে যে হাসি দেখা গিয়েছিল তা অস্তাচলে যাওয়া চাঁদের মতোই ম্লান। তবে দিনের শেষে কিছুটা হলেও হাসি ফিরল তাঁর মুখে।

অতীতে বার বার নিলামের টেবিলে ব্যর্থতা উপহার দিয়েছে কেকেআর। গত বারও স্টার্ককে কেনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। তবু স্টার্ক দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। কে না জানত অভিজ্ঞতার দাম রয়েছে। তাই বলে যে ক্রিকেটার জাতীয় দল থেকে বাইরে, রাজ্য দলে খেললেও নজরে আসেন না, তার পিছনে ২৩ কোটি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। এই দামের প্রতি আস্থা রাখতে হলে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে বেঙ্কটেশকে।

বেঙ্কটেশকে নিয়ে এক লাফে টাকা অর্ধেক হয়ে যাওয়ার অভিঘাতেই নিলামের টেবিলে এর পর বেশ কিছু ক্ষণ চুপচাপ ছিল কেকেআরের টেবিল। এর পর ডি’কককে নিয়ে ওপেনারের জায়গা পূরণ হল। তার পর এলেন নোখিয়া, যিনি স্টার্কের পরিবর্ত। তবে চোট পাওয়ার ইতিহাস দেখলে ৬.৫ কোটির নোখিয়াকে নিয়ে বিশেষ আশান্বিত হওয়া যাচ্ছে না। গত বার অঙ্গকৃশ বেশ কিছু ম্যাচে তিনে নেমে ভরসা দিয়েছিলেন। তাঁকে তিন কোটিতে কিনল কেকেআর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy