শ্রমিক অসন্তোষ ও বাজার মন্দার কথা জানিয়ে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’ নোটিস ঝোলানো হল দু’টি কারখানায়। হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ায় জে এন মুখার্জি রোডের একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানা এবং হুগলির ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস জুটমিলে যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা লগন ইঞ্জিনিয়ারিং ঝাঁপ ফেলল সোমবার। পুজোর মুখে কর্মহীন হলেন প্রায় সাড়ে সাতশো শ্রমিক।
মালিপাঁচঘড়ার পঁচিশ বছরের কারখানাটিতে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় তিনশো। সেটির মালিক শ্রীপ্রকাশ ঝুনঝুনওয়ালার বক্তব্য, বিপুল বিনিযোগ করে আধুনিকীকরণের পরেও শ্রমিকরা উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করছেন না। কাজে অনীহা দেখাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যের শ্রম দফতরকে এক মাস ধরে শ্রমিক অসন্তোষের কথা জানিয়ে আসছি। ওদের পরামর্শ মেনে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।” শ্রমিকরা উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করলে এবং পুরনো চুক্তি মতো কাজ করলে তবেই কারখানা ফের চালু হবে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।
কারখানার সিটু, আইএনটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত তিন শ্রমিক সংগঠন অবশ্য কাজে অনীহার অভিযোগ মানতে রাজি নয়। আইএনটিইউসি-র অরুণবরণ নন্দন বলেন, “কম বেতনে এত দিন কাজ করানো হয়েছে। তার প্রতিবাদ করাতেই এই ঘটনা।” সিটু-র পঞ্চানন মান্না বলেন, “উনি যদি আলোচনায় বসতে চান আমরা, রাজি। সরকারকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেও যোগ দেব।” আইএনটিটিইউসি-র সুব্রত চন্দর অভিযোগ, “চক্রান্ত করে মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ করেছে। সরকারের কাছে সব জানানো হচ্ছে।”
হুগলির কারখানাটিতেও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একজোট শ্রমিকেরা। অ্যাঙ্গাস জুটমিল তথা লগন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক সঞ্জয় কাজোরিয়ার বক্তব্য, বেশ কিছু দিন আগে সংস্থার সপ্তগ্রাম শাখায় কোনও অনুমতি ছাড়াই কাজ বন্ধ করে দেয়। তা নিয়ে সমস্যা ছিলই। চটশিল্পে যে সঙ্কট চলছে, তাতে যন্ত্রাংশ তৈরির ক্ষেত্রেও নানা অসুবিধা রয়েছে। সঞ্জয়বাবুর কথায়, “যন্ত্রাংশ বিক্রি না হলে সংস্থা চালানো অসম্ভব।”
সিটু অনুমোদিত সংগঠনের সম্পাদক পুরুষোত্তম প্রামাণিক পাল্টা বলেন, “কারখানা বন্ধের যে কারণ দেখানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। এখান থেকে মাসে ১৪-১৫টা যন্ত্র তৈরি হত। কিন্তু ঠিক সময়ে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল। শ্রমিকদের উপরে জুলুম বাড়ছিল।” কারখানাটিতে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় চারশো। সেটির আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ইউনিয়নের সম্পাদক সন্দীপ দাসের হুঁশিয়ারি, “কর্তৃপক্ষ যদি মিথ্যা অভিযোগ তোলেন এবং ক্রমাগত শ্রমিকদের সঙ্গে তুঘলকি আচরণ করেন, নর্থব্রুকের মতো কোনও ঘটনা ঘটে গেলে তার কিন্তু দায় ওঁদেরই নিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy