খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে এ বার তিন জনকে এক সঙ্গে বসিয়ে জেরা শুরু করলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এমন তিন জন, যারা ভিন্ন তিনটি দেশের নাগরিক। ভিন্ন সময়ে ধরা পড়েছে ভারতের তিনটি ভিন্ন জায়গা থেকে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তিন জনকে জেরা শুরু করেন দু’দেশের গোয়েন্দা।
ওই ত্রয়ীর এক জন ভারতীয়। দ্বিতীয় জন বাংলাদেশের নাগরিক। তৃতীয় জন মায়ানমারের। প্রথম জন, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল হাকিম ২ অক্টোবর বিস্ফোরণস্থলে ধরা পড়ে। দ্বিতীয় জন, ভারতে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর চাঁই সাজিদ ওরফে শেখ রহমতুল্লা ওরফে মাসুদ রানাকে গত ৮ নভেম্বর কলকাতা বিমানবন্দরের কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তৃতীয় জন, খালিদ মহম্মদকে গত ১৮ নভেম্বর হায়দরাবাদ থেকে ধরা হয়েছে।
এনআইএ সূত্রের খবর, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে সাজিদ ও খালিদকে জেরা করে এই ঘটনার পিছনে আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কের যোগ মিলেছে। তাই তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা দরকার। এই তদন্তে বৃহস্পতিবারই শহরে এসেছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা দল।
শুক্রবার সাজিদ ও খালিদকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক মুমতাজ খানের এজলাসে হাজির করে এনআইএ। আব্দুল হাকিমকেও জেল থেকে আদালতে হাজির করানো হয়। এনআইএ হেফাজতে সপ্তাহ দুয়েক থাকার পর হাকিম প্রেসিডেন্সি জেলে ছিল।
আদালতে এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানান, খাগড়াগড় কাণ্ডের শিকড় অনেক গভীরে। ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে রয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে ওই তিন জনকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে চান তাঁরা। ধৃতদের পক্ষে এ দিনও কোনও আইনজীবী সওয়াল করেননি। তিন জনকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক । এ দিন সন্ধ্যা থেকেই সল্টলেকের সিআরপি ক্যাম্পে তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা শুরু করেছেন এনআইএ এবং বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এনআইএ সূত্রে বক্তব্য, বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের জন্যই তিন জনকে এক সঙ্গে হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়। সাজিদ ও খালিদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু তথ্য তাদের মুখ দিয়েই হাকিমের সামনে ফের বলিয়ে যাচাই করে দেখা হবে।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, সাজিদ ও খালিদের থেকে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে। সবই জাল। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বিদেশ থেকে এ দেশে ঢুকে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করেছে জঙ্গিরা। সাজিদ ও খালিদের মতো কয়েক জন ধরা পড়লেও অনেকই অধরা। তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে এই ব্যাপারেও জেরা করা হবে বলে এনআইএ সূত্রের খবর। এক তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য, “জেলে তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা সম্ভব নয়। তাই হেফাজতে নিয়েই এ বার জেরা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy