Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

মমতার পুরভোট কবে, গেরোয় সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস

সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস কবে হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিলে সুবিধা হয়! রসিকতা নয়! বাস্তবে পরিস্থিতিটা প্রায় তেমনই! আগামী বছর সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস কোন মাসের কত তারিখে কোথায় হবে, তা চূড়ান্ত করতে গিয়ে প্রকাশ কারাট-বিমান বসুদের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে! সাধারণত মার্চ বা এপ্রিলেই সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস হয়ে থাকে। আগামী বছর কলকাতা-সহ একগুচ্ছ পুরসভারও নির্বাচন। সেখানেই ভয় কারাট-বিমানদের। তাঁদের আশঙ্কা, তাঁরা যে সময়ে পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ ধার্য করবেন, ঠিক সেই সময়েই পুরভোট ফেলতে চাইবেন মুখ্যমন্ত্রী!

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২০
Share: Save:

সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস কবে হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিলে সুবিধা হয়!

রসিকতা নয়! বাস্তবে পরিস্থিতিটা প্রায় তেমনই! আগামী বছর সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস কোন মাসের কত তারিখে কোথায় হবে, তা চূড়ান্ত করতে গিয়ে প্রকাশ কারাট-বিমান বসুদের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে! সাধারণত মার্চ বা এপ্রিলেই সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস হয়ে থাকে। আগামী বছর কলকাতা-সহ একগুচ্ছ পুরসভারও নির্বাচন। সেখানেই ভয় কারাট-বিমানদের। তাঁদের আশঙ্কা, তাঁরা যে সময়ে পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ ধার্য করবেন, ঠিক সেই সময়েই পুরভোট ফেলতে চাইবেন মুখ্যমন্ত্রী! সিপিএমকে প্যাঁচে ফেলার এই ‘দারুণ সুযোগ’ তিনি কোনও ভাবেই হাতছাড়া করবেন না!

দিল্লিতে শুক্রবার থেকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে। সেখানেই পার্টি কংগ্রেসের স্থান-কাল নিয়ে আলোচনা হবে। গত মাসে পলিটব্যুরোয় আলোচনায় উঠে আসে তেলঙ্গানা, অন্ধ্র, কর্নাটক ও পশ্চিমবঙ্গের নাম। এ বার কি স্থান-কাল চূড়ান্ত হবে? কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে পলিটব্যুরোর এক সদস্যের জবাব, “কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ ঘোষণা করব, মমতা ঠিক ওই সময় পুরভোট ঘোষণা করে দেবেন! তখন কী হবে?”

পলিটব্যুরোর ওই নেতার ব্যাখ্যা, মমতা কবে ভোটের দিনক্ষণ ধার্য করবেন, তার জন্য অপেক্ষা করে তার পরে সিপিএম তারিখ ঠিক করবে সেই উপায় নেই। কারণ, পার্টি কংগ্রেসের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নিতে হয়। পার্টি কংগ্রেসের সময় বা তার আশেপাশে যদি মমতা পুরভোট ফেলতে চান, তা হলে প্যাঁচে পড়ে যাবেন বিমান-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যেরা। কলকাতার বাইরে পার্টি কংগ্রেস হলে সেখানে যাবেন না, রাজ্যেই থেকে যাবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে! আবার কলকাতাতেই পার্টি কংগ্রেস হলে ভোটের প্রস্তুতি নেবেন না পার্টি কংগ্রেসের আয়োজনে মন দেবেন, সেই চাপ! যদিও দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, পুরভোটের নির্ঘণ্ট যে হেতু তাঁদের হাতের বাইরে, তাই নিতান্তই কাছাকাছি সময়ে পার্টি কংগ্রেস পড়ে গেলে কষ্ট হলেও চাপ সামাল দিতে হবে।

সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের সম্ভাব্য স্থান হিসাবে এখনও দক্ষিণ ভারতই এগিয়ে। পশ্চিমবঙ্গে পার্টি কংগ্রেস করার প্রস্তাবে আলিমুদ্দিন প্রাথমিক ভাবে রাজি হয়নি। যে কোনও সময়ে কর্মীদের উপরে শাসক দলের হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কার পরিবেশে পার্টি কংগ্রেস আয়োজন যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন না বিমানবাবুরা। এই সময়ে পার্টি কংগ্রেসের খরচের ব্যবস্থা করাও বঙ্গ সিপিএমের পক্ষে উদ্বেগের প্রশ্ন। পলিটব্যুরোর ওই সদস্য বলেন, “শুধু তা-ই নয়। পুরসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় আবার পার্টি কংগ্রেসের আয়োজন করতে হলে কর্মীদের উপরেও চাপ তৈরি হবে।” এই অবস্থায় তেলঙ্গানা, অন্ধ্র কিংবা কর্নাটকের মধ্যে কোনও একটা পার্টি কংগ্রেসের স্থান হিসাবে বিবেচিত হবে। হায়দরাবাদে দলের যে নিজস্ব পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে পার্টি কংগ্রেস আয়োজন করা কঠিন হবে না।

সিপিএমের নেতারা বলছেন, ২০১২ সালে কোঝিকোড়ে, ২০০৮ সালে কোয়ম্বত্তূরে কিংবা ২০০৫ সালে দিল্লিতে, প্রত্যেক বারই পার্টি কংগ্রেস হয়েছে এপ্রিলে। পাঁচ বছর আগে, ২০১০ সালে কলকাতা-সহ পুরসভার ভোট হয় মে মাসের একেবারে শেষে। ২০০৫ সালেও একই বছরে পার্টি কংগ্রেস ও পুরসভার নির্বাচন পড়েছিল। কিন্তু সে বার ভোট হয়েছিল জুন মাসে। এপ্রিলে পার্টি কংগ্রেস সেরে ফেলে পুরসভা নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিলেন তৎকালীন শাসক দল সিপিএমের নেতৃত্ব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE