ভোটের মেরুকরণ হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। মাঝে জমি হারাচ্ছে বামেরা। সীমান্ত এলাকায় সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের ভিত্তিতে ভোটে মেরুকরণের প্রবণতা স্পষ্ট। উপনির্বাচনে বিপর্যয়ের ব্যাখ্যায় এমনই মত উঠে আসছে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে।
তিন বছর আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাল ধরেন গৌতম দেব। তাঁর জমানায় জেলা সিপিএমের কর্মপদ্ধতি আমূল বদলেছে। মিছিল-সমাবেশে ভিড় হচ্ছে। যে সব জায়গায় কিছু দিন আগেও শাসক দলের ভয়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা গুটিয়ে ছিলেন, সেখানে ধীরে ধীরে তাঁদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কিন্তু ভোট-ভাগ্যে পরিবর্তন আসেনি! কয়েক মাস আগে জেলার বসিরহাট (দক্ষিণ) বিধানসভা ও সম্প্রতি বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিধ্বস্ত দল। ভোট বেড়েছে তৃণমূল ও বিজেপির। এই প্রেক্ষিতেই এ বারের সম্মেলনে উঠে এসেছে মেরুকরণের প্রসঙ্গ।
সদ্য ভোট হওয়ায় বনগাঁর বিষয়টি সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে রাখার সুযোগ ছিল না। বহু বছর বাম দখলে থাকা বসিরহাটের বিধানসভা আসন বিজেপি-র কাছে খোয়ানোটা যে উদ্বেগের, তা আছে প্রতিবেদনে। সম্মেলনে একাধিক প্রতিনিধিই দুই উপনির্বাচনে ব্যর্থতা নিয়ে মত জানিয়েছেন। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত স্বরূপনগর বিধানসভা এলাকায় ভোটের রকম পরিবর্তনকে তুলে ধরেছেন তাঁদের একাংশ। তফসিলি সংরক্ষিত বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে একমাত্র স্বরূপনগরই সংখ্যালঘু-প্রধান। গত লোকসভা ভোটে সেই আসনে ‘লিড’ রেখেছিল সিপিএম। এ বার উপনির্বাচনে ভোট বাড়িয়ে প্রথম স্থানে তৃণমূল। ভোট বেড়েছে বিজেপি-রও। সিপিএমের জেলা নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, মোদী জমানায় সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। তাই আঁকড়ে ধরছেন তৃণমূলকে। বিপরীতে সংখ্যাগুরুদের একাংশের সমর্থন যাচ্ছে বিজেপি-র দিকে। তুলনায় মতুয়া-প্রধান গাইঘাটায় সিপিএমের ফল ভাল। জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, “উত্তর ২৪ পরগনার নানা জায়গায় কয়েক মাসে কিছু দখল হয়ে-যাওয়া কার্যালয় পুনরুদ্ধার করেছি। মিছিল-সমাবেশ ভাল হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মেরুকরণেই সীমান্তবর্তী এলাকায় ভোটে সাড়া মিলছে না।”
কিছু প্রতিনিধির অভিযোগ, সিপিএম নেতৃত্বের মধ্যে আক্রমণাত্মক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। পানিহাটিতে সম্মেলন-মঞ্চে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে এ দিন মুখ খোলেননি। বরং, তাঁর দাড়ি-মুখের ছবি তুলতে উৎসাহী হয়ে পড়েছিলেন প্রতিনিধিদের একাংশ! সম্মেলনের শেষ দিনে আজ, শনিবার গৌতমবাবুর ফের জেলা সম্পাদক হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy