সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা গেল না মঙ্গলবারও। কারণ সেই একটাই। আদালতের পাঠানো সমন গ্রহণ করেও সাক্ষীদের এজলাসে অনুপস্থিত থাকা।
এ দিন নিহতের পরিবারের তিন নিকট আত্মীয় তন্ময় ঘোষ, অনুপ পাল, চঞ্চল মণ্ডলদের সাক্ষ্য দেওয়ার দিন ধার্য হয়েছিল। কিন্তু কোনও আবেদন ছাড়াই সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকায় জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্ত ওই তিন সাক্ষীর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এ কথা জানিয়েছেন, মামলার সরকারি আইনজীবী রণজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। সরকারি আইনজীবী আরও জানান, চলতি মাসের ২৪ তারিখ ওই সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার দিন ধার্য করছেন বিচারক। প্রসঙ্গত, আদালত থেকে পাঠানো সমন গ্রহণ করেও সোমবার সাক্ষ্য দানে অনুপস্থিত থাকায় নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষ ও পুত্রবধূ শিবানী ঘোষের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল সিউড়ি জেলা আদালত। নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দেবীকেও সোমবার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। তিনি আসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে আবেদন জানানোয় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়নি।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন হন পাড়ুইয়ের বাঁধ নবগ্রামের বাসিন্দা সাগর ঘোষ। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ওই হত্যা মামলার বিশেষ তদন্তকারি দল(সিট) গত ১৬ জুলাই আদালতে যে চার্জশিট পেশ করেছিল, তার ভিত্তিতে সিউড়ি জেলা আদালতে গত ৮ জানুয়ারি ওই মামলায় চার্জ গঠিত হয়েছে। সিউড়ির জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্তের এজলাসে ওই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার কথা ছিল সোমবার থেকেই। কিন্তু তা হয়নি। হল না দ্বিতীয় দিনও। আসলে প্রথম থেকেই এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বিপক্ষে ছিলেন নিহতের পরিবার। তাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদালত সমন পাঠানোয় প্রথমে তা গ্রহণ করতে চাননি সাগর ঘোষের পরিবার। নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষের দাবি ছিল, বাবার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারি দল সিটের দেওয়া যে চার্জশিটের ভিত্তিতে জেলা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে সেই তদন্তই পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁদের ওই তদন্তের উপর আস্থা নেই। সে জন্যই তাঁদের পরিবার সিবিআই চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে।
এ দিন আদালতে প্রথমে কোনও সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় বিচারকের কাছে সময় চান রণজিত্বাবু। কিন্তু দ্বিতীয় অর্ধে কাউকেই উপস্থিত করাতে না পেরে অনুপস্থিত সাক্ষ্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিত আর্জি জানান সরকারি আইনজীবী। সেমবার অবশ্য হৃদয় ঘোষ আদালতে এসেও সাক্ষ্য দেননি। এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য ছিল, সাক্ষ্য দিতে এলেও সরকারি আইনজীবী তাঁর সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেননি। দ্বিতীয়ত মা অসুস্থ ছিলেন এবং আদালত চত্বরে তাঁর বাবার খুনে অভিযুক্তদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন যাঁরা পুলিশের চোখে অভিযুক্ত নন, তাঁদেরকে দেখে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। যদিও সরকারি আইনজীবী সে দাবি মানেননি। সরাকরি আইনজীবীর দাবি ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে যদি কিছু বলার থাকত সে কথা তো বিচারকের সামনেই বলতে পারতেন হৃদয়বাবু। এটা বাহানা ছাড়া কিছু নয়।
মঙ্গলবার রণজিত্বাবু বলেন, “হৃদয়বাবু নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখানোয় এ দিন পাড়ুই থানার একজন এএসআই ও এক কনস্টেবলকে পাঠানো হয়েছিল, সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো ও তাঁদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য। দুই সাক্ষীকে বাড়িতে পাওয়াই যায়নি। তন্ময় ঘোষকে বাড়িতে পান পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু বাসে যাব বলে পুলিশকর্মীদের ফিরিয়ে দেন তন্ময়বাবু। পরে তিনি আসেননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy