জমিদাতাদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।
জিন্দলদের কারখানা চালুর দাবিতে এ বার আসরে নেমে পড়ল তৃণমূলও। দলীয় পতাকা না থাকলেও বৃহস্পতিবার শালবনিতে জমিদাতাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দেখা গেল ব্লক তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকে। জমিদাতাদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি, প্রকল্প স্থগিত হয়ে যাওয়ার দায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উপরেই চাপান তাঁরা।
কারখানাটি দ্রুত চালুর দাবিতে ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছে বিজেপি। গত রবিবার কলকাতায় জিন্দল গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সজ্জন জিন্দল শালবনিতে ইস্পাত প্রকল্পের কাজ আপাতত স্থগিত থাকছে বলে ঘোষণা করার পরেই, সোমবার কারখানার গেটের সামনে বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভে অবশ্য জমিদাতাদের কাউকে সে ভাবে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার আবার এলাকায় মিছিল করে ডিওয়াইএফ। জমিদাতা ও স্থানীয় মানুষের ক্ষোভকে পুঁজি করে বিরোধীরা যাতে শক্তি বাড়াতে না পারেন, সে জন্যই তৃণমূল তড়িঘড়ি কৌশলে আসরে নেমেছে বলে জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকের একাংশের ধারণা।
দ্রুত কারখানা চালু, জমিদাতাদের চাকরি, কারখানা না হলে জমি ফেরত দেওয়া, জমি ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত মাসে ৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ-সহ নানা দাবিতে এ দিন ‘জেএসডব্লিউ ল্যান্ড লুজার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ জিন্দলদের শালবনির প্রকল্পের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট অলোক ভট্টাচার্যকে স্মারকলিপি দেয়। অলোকবাবু জানান, আকরিক লোহা এবং কয়লার সংস্থান হলেই কারখানা গড়ার কাজ ফের শুরু করা হবে। জমিদাতারা অবশ্য তাতে মানছেন না। আজ, শুক্রবার থেকে কারখানার গেটের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করার কথা তাঁদের।
এ দিনের বিক্ষোভে জমিদাতা সংগঠনের ব্যাজ পরেই হাজির ছিলেন ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তারকনাথ মোদক, দলের ব্লক স্তরের নেতা শ্যামল ঘোষ। তাঁরা বলেন, “কারখানা তৈরির শুরু থেকেই জমিদাতাদের পাশে ছিলাম। হঠাৎ দেখছি, বিজেপি এখানে রাজনীতি করতে আসছে। আকরিক লোহা ও কয়লার জন্য কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। এই সমস্যা কেন্দ্রের মেটানোর কথা।” বিক্ষোভে সামিল না হলেও তৃণমূলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, “কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্যই এই অচলাবস্থা। জমিদাতাদের আন্দোলনকে সমর্থন করছি।”
তা হলে দলের পতাকা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে না কেন?
জিন্দলদের কারখানার সামনে জমিদাতাদের বিক্ষোভে বক্তব্য রাখছেন শালবনি
ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তারকনাথ মোদক।—নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক (কারখানা এলাকাটি মেদিনীপুর বিধানসভার মধ্যে পড়ে) মৃগেন মাইতি জানান, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে দলের পতাকা নিয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পক্ষান্তরে বিজেপি-র দাবি, তাদের আন্দোলনকে বাধা দিতেই তৃণমূল ‘চক্রান্ত’ করছে। দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরা পিছু হটছি না। শনিবার থেকে কারখানার গেটে লাগাতার অবস্থানে বসব।” লাগাতার আন্দোলন চালানোর কথা জানিয়েছে ডিওয়াইএফ-ও।
জমিদাতারা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। জমিদাতা সংগঠনের সম্পাদক পরিষ্কার মাহাতো এ দিন বলেন, “আমাদের দাবির সঙ্গে সহমত হয়ে যে সাহায্যের হাত বাড়াবে, তাকেই স্বাগত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy