চলছে নৈশভোজের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার ইকো পার্কে। ছবি: শৌভিক দে
পারতপক্ষে তিনি পা রাখেন না পাঁচতারায়। বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলন উপলক্ষে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আড়াই দিন পাঁচতারা হোটেলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু নিজে থাকাই নয়, সেখানে বসিয়ে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর অস্থায়ী দফতরও। আগামী ক’দিন সেখান থেকেই তিনি নিয়ন্ত্রণ করবেন গোটা রাজ্যের প্রশাসন।
নিজের যাবতীয় পুরনো রেকর্ড ভেঙে মমতা হঠাৎ পাঁচতারায় রাত্রিবাসের এমন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? প্রশাসন সূত্রে বক্তব্য, তাঁর কালীঘাটের বাড়ি থেকে সম্মেলনস্থলে যাতায়াতের জন্য যে সময় নষ্ট হবে, তা-ও এড়াতে চান মমতা। সে কারণেই পাঁচতারায় ঘাঁটি গেড়ে সম্মেলন সফল করতে চান তিনি।
কিন্তু সম্মেলন কি সফল হবে? সম্মেলনের আগের রাতে অর্থাৎ মঙ্গলবার ইকো পার্কে অতিথি-অভ্যাগতদের ভোজে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার ব্যবসায়ী মহলের যাঁরা সব সময় মমতাকে ঘিরে থাকেন, এ দিনও তাঁদেরই দেখা গেল। আর ছিলেন কয়েকটি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অল্প ক্ষণের জন্য এসেছিলেন। ব্যস, এর বাইরে আর কোনও চমকপ্রদ মুখ এ দিনের ভোজসভায় দেখা যায়নি।
শিল্প দফতরের অবশ্য দাবি, আগের রাতে না এলেও দেশের শিল্পজগতের একাধিক বড় মাথাদের অনেকেই আজ, বুধবার শিল্প সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসবেন। থাকবেন ১৯টি দেশের প্রতিনিধিও। সরকারের দাবি, ১৪টি দেশের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল দু’দিন ধরে থেকে এ রাজ্যে ব্যবসা করার সুলুকসন্ধান করবে।
এ দিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে আনতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন। জেটলি বিশ্ববাংলার ‘ব’ লেখা লোগোটির প্রশংসা করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানান, এই লোগোটি তিনিই তৈরি করেছেন। এর পরেই মমতা তাঁর ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পটি নিয়ে বলতে শুরু করেন। জেটলি কিছুক্ষণ সে সব শোনেন। তার পরেই শহরে অন্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলে যান।
আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলন শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রী লগ্নির খোঁজে নেমে পড়েছেন বলে দাবি নবান্নের। এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে ইউকে-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের তরফে টুইট করে বলা হয়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দারুণ আলোচনা হল। বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে এ রাজ্যের উদার নীতির কথায় উৎসাহিত বোধ করছি’। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীও টুইট করে জানান, ‘৫টি প্রাক্-সম্মেলন শিল্প বৈঠক করলাম। প্রথমেই ইউকে-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন প্যাট্রিসিয়া হিউইট এবং তাঁর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হল। তার পর আদি গোদরেজ, নিরঞ্জন হিরানন্দানি, কাইনেটিক গোষ্ঠীর সুলজ্জা ফিরোদিয়া মোতওয়ানির সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বললাম’।
এ দিন ফ্রান্স, ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূতেরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। নৈশভোজে টিসিএস, টেক-মাহিন্দ্রার সিইও-দের পাশাপাশিই হাজির ছিলেন কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটের অফিসারেরাও। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই ফেরিতে তাঁরা ইকোপার্কের লেক পারাপার করেন। চিন, মালয়েশিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নৈশভোজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy