Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

গরহাজির, ফের দিন ধার্য করল আদালত

নিহতের পরিবারের সদস্য-সহ অধিকাংশ সাক্ষীই সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হননি। বৃহস্পতিবার তাই পাড়ুইয়ের সাগর ঘোষ হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ এবং গরহাজির সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফের দিন ধার্য করল সিউড়ি জেলা আদালত। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আগামী মাসের ২৩-২৫ তারিখ তিন দিন নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী, ছেলে হৃদয় ঘোষ ও বৌমা শিবানী ঘোষ-সহ ছয় সাক্ষীকে ফের আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

নিহতের পরিবারের সদস্য-সহ অধিকাংশ সাক্ষীই সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হননি। বৃহস্পতিবার তাই পাড়ুইয়ের সাগর ঘোষ হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ এবং গরহাজির সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফের দিন ধার্য করল সিউড়ি জেলা আদালত। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আগামী মাসের ২৩-২৫ তারিখ তিন দিন নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী, ছেলে হৃদয় ঘোষ ও বৌমা শিবানী ঘোষ-সহ ছয় সাক্ষীকে ফের আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন হন পাড়ুইয়ের বাঁধ নবগ্রামের বাসিন্দা সাগর ঘোষ। ওই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল জেলাসভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর মতো তৃণমূল নেতার। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ওই হত্যা মামলার দায়িত্ব পায় বিশেষ তদন্তকারি দল সিট।

গত ১৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিট। যদিও সেই চার্জশিটে অনুব্রত বা বিকাশের নাম ছিল না। তবে তৃণমূলের সাত্তোর অঞ্চল কমিটির সম্পাদক শেখ মুস্তফা, তৃণমূলের কসবা অঞ্চাল সভাপতি শেখ ইউনুস-সহ মোট আট জনের নাম ছিল। চার্জশিটে নাম থাকা একমাত্র শেখ আসগর (শেখ মুস্তফার ছেলে) ছাড়া সাত জনই গ্রেফতার হয়েছিলেন। ভগীরথ ঘোষ ও সুব্রত রায় ছাড়া বাকিরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন। সিটের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতে সিউড়ি জেলা আদালতে গত ৮ জানুয়ারি ওই মামলায় চার্জ গঠিত হয়েছে। সিউড়ির জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্তের এজলাসে ৯ ফেব্রুযারি থেকে শুরু হয়েছিল সাক্ষ্যগ্রহণ। ২৬ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ দিন ছিল এই মামলার।

এই মামলায় মোট ৫১ জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা থাকলেও দুই চিকিৎসক, পাঁচ পুলিশ কর্মী এবং নিহতের দূর সম্পর্কের আত্মীয় ও পড়শি মিলিয়ে ১৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে নিহতের স্ত্রী, ছেলে ও বৌমা, নিকট আত্মীয়দের অনুপস্থিতির কারণে প্রথম তিন দিন বিচার প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি আদালত। কোনও কারণ ছাড়াই সমন নিয়েও আদালতে অনুপস্থিত থাকায় জামিনযোগ্য ধারায় মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। তা সত্ত্বেও অবস্থা পরিবর্তিত হয়নি।

আসলে প্রথম থেকেই এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বিপক্ষে ছিলেন নিহতের পরিবার। তাই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করে আদালত সমন পাঠানোয় প্রথমে তা গ্রহণ করতে চাননি নিহতের পরিবার। নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষের দাবি ছিল, বাবার হত্যাকাণ্ডে নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল সিটের দেওয়া যে চার্জশিটের ভিত্তিতে জেলা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে, সেই তদন্তই পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁদের ওই তদন্তের উপর আস্থা নেই। সে জন্য তাঁদের পরিবার সিবিআই চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত জেলা আদালতের পাঠানো সমন গ্রহণ করেন হৃদয়বাবুরা। কিন্তু আদালতে হজির হচ্ছেন না। কখনও আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন, কখনও বা সরকারি আইনজীবীর বদলের চেয়ে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী। কিন্তু সাক্ষ্য দেননি। আজ, শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টে এই মামলার শুনানি।

এ দিন বিচারক সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কোন কোন সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেওয়াতে চান তার তালিকা তাঁকে দিতে। দিন ধার্য হয় ২৩-২৫ মার্চ। আইনজীবী সেই তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ ৬ জনের নাম দিলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

অন্য বিষয়গুলি:

sagar ghosh parui
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE