বাতিল ১০৫০টি আসনের মধ্যে প্রথম দফায় ৪০০টি ফেরত পাওয়া গিয়েছে। বাকি ৬৫০টি মেডিক্যাল আসন আজ, শনিবারেই উদ্ধারের আশা দেখছে পশ্চিমবঙ্গ। আসন-জট কাটাতে আজ দিল্লিতে শুধু বাংলা নয়, অন্যান্য রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তা এবং বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদেরও বৈঠকে ডেকেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)।
পরিকাঠামো যথাযথ না-থাকায় সারা দেশে প্রায় ১৫ হাজার মেডিক্যাল আসন বাতিল করে দিয়েছিল এমসিআই। পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হয়ে গিয়েছিল ১০৫০টি আসন। তার মধ্যে ৪০০ আসন ফেরত পাওয়া গেলেও অন্য ৬৫০টি আসনের ভাগ্য এখনও ঝুলে আছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, শনিবারের বৈঠকে ওই সব আসনও ফেরত পাওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারে এমসিআই। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে মেডিক্যালে ভর্তির দ্বিতীয় কাউন্সেলিং রয়েছে। তার আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। যথাযথ পরিকাঠামোর অভাবের দরুন যে-সব আসন বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো ফেরত না-দেওয়ার ব্যাপারে এ বার বদ্ধপরিকর ছিল এমসিআই। “শেষ পর্যন্ত মূলত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের উদ্যোগেই তারা ওই সব মেডিক্যাল কলেজকে আরও এক বার সুযোগ দিতে চলেছে,” বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা। তবে এটাই যে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির শেষ সুযোগ, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পরবর্তী পরিদর্শনে এসে যথাযথ পরিকাঠামো দেখতে চায় কাউন্সিল। সেটা দেখতে না-পেলে এমসিআই আগামী বছর আর কোনও ভাবেই যে সুর নরম করবে না, সেটাও শনিবার রাজের স্বাস্থ্যকর্তাদের জানানো হবে। একমাত্র এই শর্তেই বাতিল হওয়া ৬৫০টি আসন ফেরত পেতে পারে পশ্চিমবঙ্গ।
রাজ্যের তরফে স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে, স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিভিন্ন কলেজের ডিন ও অধ্যক্ষেরা শনিবারের বৈঠকে থাকবেন। এমসিআইয়ের তরফে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন ডেপুটি সেক্রেটারি রিনা নায়ার। স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্তবাবু বলেন, “আমরা আশা করছি, যাবতীয় জট শনিবারেই কেটে যাবে। সে-ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ওই সব আসনে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারব।”
এমসিআইয়ের এথিক্যাল (নিয়মনীতি বিষয়ক) কমিটির সদস্য সুদীপ্ত রায়ও জানান, রাজ্যের হারানো আসনগুলি ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা। তিনি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ব্যাপারে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন। আশা করা হচ্ছে, রাজ্যের কলেজগুলি দ্রুত তাদের পরিকাঠামোগত সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে।”
বিভিন্ন রাজ্যের ডাক্তারির আসন উদ্ধারে দফায় দফায় মুচলেকার পালা চলছিল। শেষ দফায় রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের তরফেও মুচলেকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। রাজ্যগুলির দেওয়া মুচলেকায় কাজ হয়নি বলে জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা। তিনি বলেন, “আমরাই রাজ্যগুলির তরফে এমসিআই-কে রাজি করিয়েছি। তাই এ বার যদি রাজ্যের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না-হয়, তা হলে ভবিষ্যতে আমাদের পক্ষে মুখ রক্ষা করা কঠিন হবে।” এর আগে, গত ৮ জুলাই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের দিল্লিতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামোর ঘাটতি পূরণ প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফে সেখানে শুধু পরিকাঠামো নির্মাণ সংক্রান্ত অগ্রগতির কথা জানানো হয়েছিল। ফলে খানিকটা হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছিল অধ্যক্ষদের। শনিবারের বৈঠকের পরে সেই হতাশা কেটে যাবে বলেই আশা করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy