মা শিবানী মণ্ডলের সঙ্গে বিশাখ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
তিন বছর বয়স থেকে একা লড়াই করে তাঁকে মানুষ করেছেন মা। এ-হেন বিশাখ মণ্ডল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে প্রায় একই সঙ্গে ফেসবুক ও গুগলের কাছ থেকে বিপুল বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন। তাঁকে এক কোটি তিরাশি লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজের ‘অফার’ বা কাজের প্রস্তাব দিয়েছে ফেসবুক। তাঁকে কাজে যোগ দিতে হবে ফেসবুক-লন্ডনে। আর গুগলের কাছ থেকে বিশাখ পেয়েছেন এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজের চাকরির প্রস্তাব।
রামপুরহাটের ছেলে বিশাখ শুক্রবার বললেন, ‘‘আমার সাফল্যের পিছনে মায়ের অবদান বলে বোঝানো যাবে না।’’ জানান, রামপুরহাটের জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন থেকে তিনি মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে তাঁর স্থান ছিল দ্বাদশ। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হন যাদবপুরে। বিশাখের মা শিবানীদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। প্রথমে গুগল লন্ডন থেকে এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজের চাকরির প্রস্তাব পান বিশাখ। তার পরে, গত মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ পান ফেসবুক-লন্ডনের প্রস্তাব। বিশাখ বললেন, ‘‘মা ঘুমোচ্ছিল। ঘুম থেকে তুলে খবরটা দিলাম। খুব খুশি হয়েছে মা। পরিবারের অন্যেরাও খুব খুশি। সারা রাত আমি আর ঘুমোতে পারিনি।’’ অগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ কাজে যোগ দেওয়ার কথা বিশাখের।
বিশাখকে নিয়ে যাদবপুরের মোট ১০ জন এ বার বার্ষিক এক কোটি টাকার বেশি প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন। সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাস বলেন, ‘‘যাদবপুরে পড়ে ওরা এমন সফল হয়েছে। পড়ুয়াদের এমন সাফল্যে আমরা আপ্লুত।’’ তিনি চান, এই সব পড়ুয়া যেন নিজের মতো করে যাদবপুরকে কিছু ফিরিয়ে দেন।
বিশাখের বয়স যখন সবে তিন, মা-ছেলের সংসার টানতে শিবানীদেবী চাকরি নেন অঙ্গনওয়াড়িতে। শুরুতে ভাড়ার ঘরে থাকতেন, পরে আত্মীয়-পরিজনের সহযোগিতায় ছোট ফ্ল্যাটে উঠে যান তাঁরা। ছেলে ফেসবুকে এমন চাকরি পেয়েছেন শুনে মা খুব খুশি। শিবানীদেবী বলেন, ‘‘ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সামান্য বেতনে কুলোতে পারতাম না। বাপের বাড়ির সাহায্য ছাড়া এই জায়গায় পৌঁছনো মুশকিল ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy