Advertisement
E-Paper

Yaas: ইয়াস ফিরিয়েছে হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছ

ডুবিয়েছে মৎস্যজীবীদের। উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ কয়েক কোটি টাকার মাছ চাষিদের হাতের বাইরে করে দিয়েছে।

বাজারে  বেশি করে দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া  দেশি মাছের। নিজস্ব চিত্র

বাজারে বেশি করে দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছের। নিজস্ব চিত্র

আরিফ ইকবাল খান

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৮
Share
Save

ডুবিয়েছে মৎস্যজীবীদের। উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ কয়েক কোটি টাকার মাছ চাষিদের হাতের বাইরে করে দিয়েছে। পুকুর উপচে চাষ করা মাছ পালিয়েছে। আবার সেই ‘ইয়াস’ই ফিরিয়ে এনেছে হারিয়ে যাওয়া, হারাতে বসা বহু দেশি মাছ। সেই মাছ অঢেল পাতে পেয়ে খুশি মৎস্যপ্রেমীরা। মৎস্যজীবীরাও।

কোন পথে ফিরেছে হারানো মাছেরা? ‘ইয়াস’-এ নদীর জল ঢুকেছে বিভিন্ন জলাভূমিতে। বেশ কিছু জায়গায় জল জমে থেকেছে দীর্ঘদিন। তাতেই নানা দেশি মাছের প্রজনন বেড়েছে বহুগুণ। বাজারে এর সুফল আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন গবেষকেরা।

কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ফিশারিজ এডুকেশনের মুখ্য মৎস্যবিজ্ঞানী বিজয়কালী মহাপাত্র বলছেন, ‘‘সুন্দরবন থেকে শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মীনদ্বীপে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বহু হারিয়ে যাওয়া মাছ আসতে শুরু করেছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন করেই আমরা চণ্ডীপুরে একটি সংস্থার সহযোগিতায় হারিয়ে যাওয়া বাংলার দেশীয় মাছের একটি প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ করেছি। কাজ শুরু হয়েছে।’’

মৎস্যবিজ্ঞানী জানান, বাজারে প্রচুর পরিমাণে সোনা ট্যাংরা, মিঠা ট্যাংরা, খয়রা, বেলে, পায়রা চাঁদা, মুক্তোগাছা, বক মাছ, পাঁকাল মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এই সব মাছের প্রজননের জন্য দরকার জমা জল। ‘ইয়াস’-এ জমা জলের এলাকা বেড়ে যাওয়ায় কোথাও দশগুণ বেশি প্রজনন হচ্ছে। মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের সূত্র অনুযায়ী, সুন্দরবনের খাঁড়িতেও মাছ বেড়েছে। একটি সমীক্ষা করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রতাপদিঘি-সহ আশেপাশের এলাকায়। সেখানেও ইতিবাচক চিত্র পেয়েছেন গবেষকেরা।

‘ইয়াস’-এর ফলে চলে এসেছে বিভিন্ন ধরনের মাছও। হলদিয়া মহকুমার মীনদ্বীপে রয়েছে কয়েক হাজার ফিশারি। ঘূর্ণিঝড়ে জলভাসি হয়েছিল নয়াচর। ভেসে গিয়েছিল পুকুরের মাছ। কিন্তু জল সরতে চাষিরা দেখেন, তাঁদের মাছ চাষের পুকুর ভরেছে চিতল, গুড় চাকলি, ভেটকি, গলদা চিংড়িতে। এগুলো তাঁরা চাষ করেননি। মীনদ্বীপের বিভিন্ন মৎস্য সমবায়ের মাছ চাষিরা জানান, ইয়াসের ফলে দ্বীপের পুকুরে মিলছে বড় চিতল, ট্যাংরা। এগুলো নদী থেকে এসেছে বলে অনুমান। মৎস্যজীবীরা জানান, এই দ্বীপের দক্ষিণ দিকের পাড় ভাঙছে। এই পাড় বরাবর মিলছে প্রচুর সামুদ্রিক কাঁকড়া। একটা কাঁকড়া ধরলেই প্রায় ১০০ টাকা করে মেলে। হলদি নদীর ধারে নিত্যদিন জলপথে নয়াচর থেকে মাছ এনে বিক্রি করেন স্বপন মণ্ডল। স্বপন বলেন, ‘‘নয়াচরের পুকুরগুলোয় ভেটকি, চিতল পাওয়া যাচ্ছে।’’ ভগবানপুরের অসীম মাইতি বলেন, ‘‘জলা জমিতে অনেক পাঁকাল দেখা যাচ্ছে। আগে ভাবা যেত না।’’

তবে ইয়াস স্থায়ী ক্ষতিও করেছে। হলদিয়া ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন সাহুর দাবি, ‘‘লবণাক্ত জল ঢুকে উপকূলের বেশ কিছু পুকুরের চরিত্র নষ্ট করেছে।’’

Cyclone Yaas

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}