Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

অফিসে যৌন হেনস্থা, আত্মহত্যা মহিলার

সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিতে কেটে যায় বেশ কয়েকটা দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share: Save:

সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিতে কেটে যায় বেশ কয়েকটা দিন। ইতিমধ্যে আত্মঘাতী হন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ট্রেজারি অফিসের ওই মহিলা কর্মী। চারজনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে যৌন হেনস্থা, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বুধবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী।

ট্রেজারি অফিসটি চলে বনগাঁ মহকুমাশাসকের অফিস ভবনে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রেজারি অফিসার সঞ্জিত মণ্ডলের কাছে লিখিত অভিযোগে মহিলা জানান, তাঁর টেবিলের কম্পিউটারে এক সহকর্মী কিছু অশ্লীল ছবি রেখেছেন। কম্পিউটর অন করলেই সেই ছবি ভেসে উঠছে মনিটরে। মহিলার স্বামী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বনগাঁ শহরেই বাসা ভাড়া করে থাকেন ওই দম্পতি। মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিহিত চেয়েছিলেন তাঁরা। মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেন। কম্পিউটার পরীক্ষা করে অশালীন ছবি মেলে। তা মুছেও ফেলা হয়। সুদীপবাবু বলেন, ‘‘তদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

১২ নভেম্বর ভোরে মহিলার ঝুলন্ত দেহ মেলে বাড়িতে। তাঁর স্বামীর কথায়, ‘‘শুধু রজত নয়, অফিসের কয়েকজন মিলে স্ত্রীকে ক্রমাগত উত্যক্ত করত। কিন্তু বিভাগীয় ভাবে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্রমশ ভেঙে পড়ছিল ও।’’

প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি নিয়ম মোতাবেক রজতের ঊর্ধ্বতন আধিকারিক জেলাশাসক। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন ‘‘অভিযোগের তদন্ত চলছে। ওঁর মৃত্যুর পিছনে যদি কোনও সরকারি কর্মীর ভূমিকা থাকে, তা হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’ বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’ কিন্তু বিভাগীয় তদন্ত নিয়ে এত গড়িমসি কেন প্রশাসনের? একটি সূত্র জানাচ্ছে, উৎসবের মরসুমে ছুটি থাকায় কিছুটা সময় লেগেছে।

বৃহস্পতিবার বার তিনেক অফিসে গিয়েও মূল অভিযুক্তের দেখা মেলেনি। ফোন করলে লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। তবে কথা হয়েছে আর এক অভিযুক্ত ওই অফিসেরই কর্মী দেবব্রত মণ্ডলের সঙ্গে। তাঁর বিরুদ্ধেও স্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন মহিলার স্বামী।

দেবব্রতবাবু অফিসের কর্মী তৃণমূল সমর্থিত সংগঠনের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘কেন এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন মহিলার স্বামী, তা বলতে পারব না। ক’দিন আগেও তো স্বামী-স্ত্রী আমার মেয়ের বিয়েতে নিমন্ত্রণ খেয়ে গেলেন!’’

অন্য বিষয়গুলি:

suicided sexual assault
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE