প্রতীকী ছবি
স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে ১৭ বছর ধরে বন্দিনী মা মুর্শিদা বেগমের মুক্তির আশায় হাইকোর্টে গিয়েছিলেন পুত্র শেখ মুরসালিন। দেড় যুগে আগে স্বামীর খুনি সাব্যস্ত মুর্শিদার জন্য হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেও রাস্তা মিলছে না। অতিমারি-পরিস্থিতিতে বন্দিদের প্যারোল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকলেও মুর্শিদার বিষয়ে সদুত্তর মিলছে না কারাকর্তাদের থেকে।
যাবজ্জীবন সাজার পরে আলিপুর মহিলা জেলের বন্দি ৪৭ বছরের মুর্শিদা দুটো জটিল ক্যানসারের ধাক্কা সামলেছেন। তিন বছর চিকিৎসার শেষে এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর ছুটি হতে চলেছে। কিন্তু আলিপুর জেলে ফিরলে বা হাসপাতালে পড়ে থাকলে এ যাত্রা, কোভিড সংক্রমণেরও বিপদশঙ্কা তাঁর। সংশোধনাগারের আধিকারিকদেরও জেল হাসপাতালে মহিলার সেবা ও সুরক্ষা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বাস্তবিক নবান্নের হস্তক্ষেপেই মুর্শিদার চিকিৎসা হয়েছে। এসএসকেএমে তাঁর চিকিৎসক কার্ডিয়োথোরাসিক ও ভাস্কুলার শল্যবিশারদ শান্তনু দত্ত বলছিলেন, "মুর্শিদার শ্বাসনালিতে ক্যানসারপ্রবণ একটি টিউমার ছিল। অস্ত্রোপচারে এক দিকের ফুসফুস বাদ পড়ত। বাঁচানো কঠিন হতো! এর মধ্যে জরায়ুর ক্যানসারও ধরা পড়ে।" এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষের দাবি, মুর্শিদা ক্যানসারমুক্ত। সাধারণত এই অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়। আলিপুরের মহিলা জেল সুপার শকুন্তলা সেন বলেন, "মুর্শিদার কথা জানি। তাঁর বিষয়টি প্রশাসনের উপরমহলও ওয়াকিবহাল।" হাসপাতালে পড়ে-থাকা বন্দিনীর বিষয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানাচ্ছেন শকুন্তলাদেবী।
"মা বার বার বলেছে, বাঁচি, মরি এ বার বাড়ি ফিরতে চাই। "--- শুক্রবার হাইকোর্ট থেকে হাসপাতালে গিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করে বলছেন, মুর্শিদার বড় ছেলে মুরসালিন। ১৭ বছর আগে মুরসালিন ও তাঁর ভাই মৈনুদ্দিন ১৩ ও ১০ বছরের বালক। হাওড়ার শ্যামপুর বালিচাতুরি মার্কেটের দরজি তাঁর স্বামী শেখ ইলিয়াসকে খুনের মূল অভিযুক্ত আলতাবুর আলির সঙ্গে যোগসাজশে মুর্শিদার নামও জড়িয়ে দেওয়া হয়। মুরসালিন বলছিলেন, ‘‘পরে জেনেছি, বাবার দোকানটা দখল করতেই খুন করা হয়েছিল। মা কিছুই জানত না। কিছু আত্মীয় ভুল বোঝানোয়, আমরা মা-ও জড়িত বলে সাক্ষ্য দিই। বিরাট ভুল করেছি।’’ ছেলেদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই সাজা হয় মুর্শিদার। মায়ের অপবাদ ঘোচাতে সেই ছেলেরাই এখন কারা দফতর থেকে হাইকোর্ট ছোটাছুটি করছেন। হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুর্শিদার জামিনের আবেদন নিয়েও মামলা চলছে। দীর্ঘদিন বন্দি অনেকেই অসুস্থ হয়ে জেলে পড়ে। তাঁদের মুক্তির জন্যও তৎপরতা দরকার।’’ একদা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, সুপ্রিম কোর্টে বেকসুর খালাস অপরাজিতা গঙ্গোপাধ্যায়ও কোভিড-পরিস্থিতিতে বন্দি গুরুতর অসুস্থদের মুক্তির দাবিতে এ দিন হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy