গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
অভিযুক্তের সঙ্গে সত্যিই কি বিয়ে হয়েছিল কৃষ্ণনগরের ‘নির্যাতিতা’ তরুণীর? গত জুন মাসে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে ‘বিয়ে হয়ে গিয়েছে’ বলেই দাবি করেছিলেন তিনি। যদিও তরুণীর মা শুক্রবার দাবি করেছেন, ওই পোস্টের বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। তবে ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ের ঠিক যে হয়েছিল তা তিনি মেনে নিয়েছেন। অভিযুক্ত যুবকের বাবাও ‘বিয়ে হয়েছিল’ বলে মানতে চাননি। তাঁর দাবি, মাস কয়েক আগে বেঙ্গালুরুতে তাঁর ছেলের কাছে চলে গিয়েছিলেন তরুণী। দিন পনেরো সেখানে ছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সেই সময়েই ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন ওই তরুণী।
তরুণীর পরিবার সূত্রে খবর, তিনি মিউজ়িক ভিডিয়ো তৈরি করে ইউটিউবে পোস্ট করতেন। অভিযুক্ত তরুণ বাইক চালানোর ‘ভ্লগ’ তৈরি করতেন। দু’জনেই সমাজমাধ্যমে ‘ডিজিটাল ক্রিয়েটর’দের একটি গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। দু’জনের পরিচিতদের একটি অংশ বলছেন, প্রায় এক বছর আগে ওই গোষ্ঠীর মাধ্যমেই তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অভিযুক্তের। তরুণীর মা যদিও দাবি করেছেন, চার মাস আগে দু’জনের পরিচয় হয়েছে। সমাজমাধ্যমে অভিযুক্তকে ট্যাগ করে একাধিক পোস্ট করতেও দেখা গিয়েছে তরুণীকে। যদিও তরুণীর মায়ের দাবি, মেয়ের সঙ্গে ধৃত যুবকের সম্পর্ক তাঁরা শুরুতে মেনে নেননি। পরে মেয়ের কথা ভেবেই সম্পর্ক মেনে নিতে হয়েছিল তাঁদের।
অভিযুক্ত তরুণ বেঙ্গালুরুতে একটি হোটেলে কাজ করতেন। তাঁর বাবা দাবি করেছেন, মাস কয়েক আগে তাঁর ছেলের কাছে বেঙ্গালুরুতে চলে গিয়েছিলেন তরুণী। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে বেঙ্গালুরুতে হোটেলে কাজ করে। মাস কয়েক আগে এই মেয়েটি আমার ছেলের সঙ্গে ওখানে চলে গিয়েছিল। দিন পনেরো ছিল সেখানে।’’ প্রশ্ন উঠছে, সেই সময় কি বেঙ্গালুরুতে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন? কারণ, দেখা গিয়েছে বেঙ্গালুরুতে থাকার সময়ই ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে পোস্ট করেছিলেন তরুণী। ২৫ জুন পোস্ট করে তিনি জানিয়েছিলেন, ২৪ জুন তাঁদের বিয়ে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের বাবা দাবি করেছেন, তাঁদের বিয়ে হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘ও (তরুণী) বাড়ির লোকজনের চাপে ফিরে আসে। তবে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়নি।’’ ‘নির্যাতিতা’র মা যদিও দাবি করেছেন, এই পোস্টের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে বিয়ে হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনিও। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওই সব (পোস্ট) কিছু জানি না। তবে ওদের বিয়ের ঠিক হয়েছিল। ও (অভিযুক্ত যুবক) বলেছিল, পাঁচ বছর পরে বিয়ে করবে।’’
এমনিতেই ওই তরুণী সমাজমাধ্যমে ভীষণই সক্রিয় ছিলেন। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেছিলেন তিনি। ১৪ অগস্ট, মেয়েদের ‘রাত দখল’-এর দিনও একটি পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। সেই পোস্টে লেখা ছিল, ‘‘মেয়েকে কালী তৈরি করুন, এই সমাজ লক্ষ্মীর যোগ্য নয়।’’
গত বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরের এক মণ্ডপের সামনে তরুণীর অর্ধদগ্ধ, অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তিনি আঙুল তোলেন মেয়ের প্রেমিকের দিকে। ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করেছে রাজ্য পুলিশ। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে সিআইডির। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে তরুণীর। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জীবিত অবস্থায় দগ্ধ হন তরুণী। তবে অ্যাসিড বা অন্য কোনও রাসায়নিকের প্রমাণ মেলেনি। আরও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা বাকি আছে বলেও বৃহস্পতিবার জানান ওই চিকিৎসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy