Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Firing at Cops in North Dinajpur

বাংলাদেশ পালানোর মরিয়া চেষ্টায় ফের পুলিশকে গুলি! পলাতক সাজ্জাককে কী ভাবে ‘এনকাউন্টার’ করা হল?

গত বুধবার সাজ্জাকের গুলিতে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। হাসপাতালে তাঁদের দেখতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বলেছিলেন, এর জবাব দেবে পুলিশ।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ইনলাইন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ইনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৩
Share: Save:

আদালত চত্বর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিলেন খুনের মামলায় বিচারাধীন সাজ্জাক আলম। ইসলামপুর আদালত থেকে তাঁকে রায়গঞ্জ জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকে গুলি করে পালান ওই আসামি। তাঁকে ধরতে শনিবার ভোরে যখন সীমান্তে ঘিরে ধরে পুলিশ, তখনও গুলি ছোড়েন তিনি। এমনই তথ্য মিলল পুলিশ সূত্রে। শেষমেশ পুলিশের ‘এনকাউন্টার’-এ নিহত হয়েছেন গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়াকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সাজ্জাক আলম।

পুলিশের দাবি, গোয়ালপোখর থানার সাহাপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীপুরে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন সাজ্জাক। সেই সময় তিন রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের গুলি লাগে সাজ্জাকের গায়ে। জখম অবস্থায় তাকে লোধন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

গত বুধবার সাজ্জাকের গুলিতে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। হাসপাতালে তাঁদের দেখতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বলেছিলেন, এর জবাব দেবে পুলিশ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা যদি পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি গুলি চালায়, তা হলে পুলিশ চারটি গুলি চালাবে।’’ এর পর উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ডিজি। কথা হয় উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে। তার পরেই সরাসরি ‘অ্যাকশন’-এ নামে পুলিশ।

বস্তুত, দুই পুলিশকর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেয় রাজ্য পুলিশ। উপরমহল থেকে বার্তা আসে, যে ভাবেই হোক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযুক্ত দু’জনের মধ্যে এক জনের বাংলাদেশ যোগ প্রকাশ্যে আসায় চাপেই পড়ে যায় পুলিশ। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক এবং পরিস্থিতিতে কোনও বাংলাদেশি দুষ্কৃতীর ভারতে এসে অপরাধ সংগঠিত করার ঘটনা যে ভুল বার্তা দেবে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারে প্রশাসন। তাই পরিকল্পনাও হয় তাড়াতাড়ি। তার পরেই এই ‘এনকাউন্টার’।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বুধবার রায়গঞ্জ থানার পুলিশ কয়েক জন আসামিকে নিয়ে ইসলামপুর আদালত থেকে রায়গঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় করণদিঘির খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক শৌচাগারে যেতে চেয়ে গাড়ি থামানোর অনুরোধ করেন পুলিশকে। একাধিক বার অনুরোধের পর পুলিশ পাঞ্জিপাড়ার কাছে গাড়ি থামিয়ে সাজ্জাককে শৌচকর্ম করতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফেরত আসার সময় দুই পুলিশকর্মী নীলকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্যের উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান সাজ্জাক।

এই ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে কিছু তথ্য। জানা যাচ্ছে, যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশকর্মীকে জখম করা হয়েছিল, সেটি ইসলামপুর কোর্ট লকআপেই সাজ্জাকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কেউ। তদন্তে উঠে এসেছে আব্দুল হুসেন নামে আরও এক আসামির নাম। তিনিই সাজ্জাককে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন বলে খবর। দু’জনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

সাজ্জাক ও আব্দুলকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয় পুলিশের তরফে। পুলিশ সূত্রের খবর, সাজ্জাকের খোঁজে একাধিক টিম তল্লাশিতে নেমেছিল। নজর রাখা হচ্ছিল সিসিটিভিতেও। সীমান্তের কাছে তিনটি গ্রাম শুক্রবার রাতেই ঘিরে ফেলে পুলিশ। এর পরই সাজ্জাকের গতিবিধি জানতে পারেন তদন্তকারীরা। ফের পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Firing at Cops in North Dinajpur Goalpokhar militant Bangladesh Crime India Bangladeh Border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy