কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মীনুর বাপেরবাড়ির লোক। নিজস্ব চিত্র।
ব্লেড দিয়ে বৌদির গলার নলি কেটে খুন করার পর আত্মঘাতী হলেন দেওর। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের রতুয়া থানার মকাইয়া গ্রামে। এই ঘটনায় মহিলার স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম মিনু ঘোষ (২০)। এবং তাঁর দেওরের নাম শিবশঙ্কর।
বৌদির সঙ্গে দেওরের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই কি এই খুন? যদিও মিনুর বাপের বাড়ির লোকেদের দাবি, এমন কোনও সম্পর্ক ছিল না দু’জনের মধ্যে। প্রশ্ন উঠছে তা হলে কেন বৌদিকে খুন করলেন দেওর। কেনই বা নিজে আত্মঘাতী হলেন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে সেই রহস্যের কিনারা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে হরিশ্চন্দ্রপুরের ২ নম্বর ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পেমাই গ্রামের তরুণী মিনুর সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল রতুয়ার যুবক শুভঙ্কর ঘোষের। পেশায় দিনমজুর শুভঙ্কর। তাঁদের বছর দুয়েকের একটি মেয়ে আছে। শুভঙ্করের দাবি, রবিবার দুপুরে অন্যের জমিতে কাজ করছিলেন। তখন তিনি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীর গলায় ব্লেডের কোপ মেরে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছে ভাই শিবশঙ্কর। বাড়ির লোকেদের বিষয়টি নজরে আসার পরই তাঁরা চিৎকার শুরু করে দেন। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। খবর পেয়ে মীনুর বাপেরবাড়ির লোকেরাও আসেন। খবর দেওয়া হয় রতুয়া থানায়। পুলিশ এসে দেহ দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ব্লেডটি।
কী কারণে এই খুন, তা ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশকে। খুনের কারণ জানতে শুভঙ্করকে জেরা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। মিনুর এক দাদা মুকেশ ঘোষ বলেন, “ফোনেই শুনলাম, মিনুকে ওর দেওর খুন করেছে। খবরটা পেয়ে মাকাইয়া গ্রামের এক আত্মীয়কে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হই। পরে শুভঙ্করও ফোনে গোটা ঘটনা জানায়। খবর পেয়ে আমরা প্রথমে মাকাইয়া গ্রামে যাই। ওখানে কেউ কিছু বলছিল না। তাই থানায় এসেছি।” মুকেশের অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে শুভঙ্কর, তাঁর বাবা-মা এবং তার ছোট ভাইও জড়িত। এমনও হতে পারে, মিনুকে খুন করার পর সকলের নজর অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে ওঁরাই শিবশঙ্করকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
মিনুর মা রেখা ঘোষের অভিযোগ, “জামাই আমার মেয়েকে দেখতে পারত না। বিয়ের পর থেকেই অশান্তি করত মেয়ের সঙ্গে। এই সব ঝামেলার জন্য মেয়েকে এক বছর বাড়িতে এনে রেখেছিলাম। শুভঙ্কর নেশা করে হামেশাই মীনুকে মারধর করত। ওদের ঝামেলার কারণে আমার দু’বছরের নাতনিকে নিজের বাড়িতেই রাখতাম। রবিবার দুপুরে মীনু আমাকে ফোন করে বলেছে আমাকে গলা কেটে মেরে ফেলে দেবে ওরা।” তবে শিবশঙ্কর কী ভাবে মারা গেছেন তা জানেন না বলেই জানিয়েছেন মীনুর মা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রতুয়া থানার আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, “আপাতত খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ দায়ের হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy