ফাইল চিত্র।
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে ফের সম্মুখসমরে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি এই প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি আটকাতে নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্র। নতুন এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে স্মার্টফোনে কর্মরত শ্রমিককে হাজিরার জানান দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি অ্যাপে আপলোড করতে হবে শ্রমিকের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার ছবি। সঙ্গে জুড়তে হবে জিয়ো ট্যাগ। এক বার কাজের শুরুতে, এক বার কাজের শেষে। কোথায় কাজ হচ্ছে? কখন হচ্ছে? কে কাজ করছেন? সব তথ্য জানাতে হবে কর্মরত শ্রমিককে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নতুন এই নির্দেশিকা নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য সঙ্ঘাত অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কারণ ১০০ দিনের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে এই মর্মে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে। নতুন করে এই নিয়ম কার্যকর করা নিয়ে সঙ্ঘাত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বিধানসভার বাদল অধিবেশনে নিজের বক্তৃতায় পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা সাত হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বরের পর থেকে কোনও টাকা দেয়নি নরেন্দ্র মোদীর সরকার।’’ এমনকি রাজ্যের পাওনা মেটাতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিল তৃণমূলের সংসদীয় দল। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং সেই পরিস্থিতিতে নতুন নির্দেশ চাপানোর চেষ্টা হলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্ঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা। সম্প্রতি রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনারকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ডিরেক্টর ধর্মবীর ঝা।
দিল্লির কৃষি ভবন থেকে পাঠানো এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ বার থেকে ন্যাশনাল মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম (এনএমএমএস) অ্যাপে শ্রমিকদের কাজের জায়গা থেকে ছবি তুলে হাজিরা দিতে হবে। আর এই হাজিরার ভিত্তিতেই মিলবে কাজের পারিশ্রমিক। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, গত আট মাস ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা না পাওয়া পশ্চিমবঙ্গ কি আদৌ এই নির্দেশ কার্যকর করতে উদ্যোগী হবে? প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল অ্যাপে স্পট থেকে জিয়ো ট্যাগ জুড়ে হাজিরার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। কারণ চলতি বছরের শুরুতে এই বিষয়টি পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু হয়েছিল। তখন বিষয়টি রাজ্যগুলির জন্য ঐচ্ছিক করা হয়েছিল। এ বার তা বাধ্যতামূলক বলেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ মানবে? তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy