বি ভি নাগরত্না।
প্রায় দু’বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ বন্ধ। শীর্ষ আদালতের প্রবীণতম পাঁচ বিচারপতির কলেজিয়ামে ঐকমত্যের অভাবে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। ফলে গত দু’বছর কলেজিয়াম কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও নাম সুপারিশ করতে পারেনি। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য গত কাল তিন জন মহিলা-সহ ন’জনের নাম সুপারিশ করেছে শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম। ওই তালিকায় রয়েছেন কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্না। কেন্দ্র কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে তাঁকে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করলে বি ভি নাগরত্না ২০২৭ সালে দেশের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হতে পারেন।
গত সপ্তাহে বিচারপতি রোহিংটন এফ নরিম্যানের অবসরের পরে কলেজিয়ামে এলেন বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও। তার পরেই কলেজিয়াম সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য ন’জনের নাম সুপারিশ করল। ওই ন’জনের মধ্যে আট জন বিভিন্ন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বা বিচারপতি, এক জন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। এ বার তিন জন মহিলা বিচারপতির নাম সুপারিশ করা হয়েছে। একসঙ্গে এত জন মহিলা বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশও এই প্রথম। আজ কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার আগেই তা সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে আজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা।
আইনজীবীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম যে ন’জনের নাম সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে ত্রিপুরা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অকিল আব্দুল হামিদ কুরেশির নাম নেই। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের আমলে বিচারপতি কুরেশিকে নিয়ে মতভেদের জেরে কলেজিয়ামে ঐকমত্য হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিচারপতি কুরেশি গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি হিসেবে অমিত শাহকে সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষের মামলায় পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কলেজিয়াম তাঁকে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করলেও কেন্দ্র তাতে বাধা দেয়। শেষে তাঁকে ত্রিপুরায় পাঠানো হয়। একই ভাবে, কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ এস ওকাকে টপকে বিচারপতি নাগরত্নার নাম সুপারিশ নিয়েও মতানৈক্য ছিল বলে সূত্রের দাবি।
২০০৮ সালে কর্নাটক হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন বি ভি নাগরত্না। তার বছর দুয়েক পরে তিনি স্থায়ী বিচারপতি হন। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম যে ন’জনের নাম সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে তিন জন বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের মেয়াদ কালে দেশের প্রধান বিচারপতি হতে পারেন। ২০২৭ সালে এক মাসের জন্য হলেও প্রধান বিচারপতি পদে আসীন হতে পারেন বি ভি নাগরত্না। তাঁর বাবা বিচারপতি ই এস বেঙ্কটরামাইয়া ১৯৮৯ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের প্রধান বিচারপতি ছিলেন।
বিচারপতি হিসেবে যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে বি ভি নাগরত্নার। প্রয়োজনে কড়া মন্তব্য করতেও দ্বিধা করেন না তিনি। সম্প্রতি একটি মামলার শুনানির সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমতাশালী নারীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হয়, তা ভারতের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ জানে না।’’ চলতি বছরের প্রথম দিকে মিড ডে মিল নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘খালি পেটে কেউ পড়াশোনা করতে পারে না।’’ কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা কলেজিয়ামের তালিকায় অন্য দুই মহিলা বিচারপতি হলেন হিমা কোহালি এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy