Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

স্বামী মৃত করোনায়, রেললাইনে ঝাঁপ স্ত্রীর

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা এবং দুই শিশু সন্তানের অবস্থা গুরুতর। ট্রেনের ধাক্কায় শিশুদের হাত, পায়ের একাংশ কাটা দিয়েছে।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৭:২১
Share: Save:

করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক স্বামীর। মঙ্গলবার ভোরে পরিবারের কাছে সেই খবর পৌঁছয়। এর পরে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে এনজেপিতে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন স্ত্রী। মঙ্গলবার বেলা দু’টোর সময় এনজেপি স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল ডাউন আগরতলা-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস। তার সামনে ওই মহিলা সন্তানদের নিয়ে ঝাঁপ দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। ঘটনায় গুরুতর জখম হন মহিলা এবং ৮ ও ৩ বছরের দুই শিশুকন্যা। হইহই করে ওঠে লোকজন। রেলপুলিশ, রেলের কর্তারা ছুটি গিয়ে তাদের উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করান। পরে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে মহিলা ও শিশুদের খোঁজ নেন। দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব আলিপুরদুয়ারে গিয়েছেন। তিনি সেখান থেকে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলাশাসকও গিয়েছেন হাসপাতালে।’’ শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ রায় এবং তৃণমূলের শিক্ষা সেলের কর্মকর্তারা হাসপাতালে রয়েছেন।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা এবং দুই শিশু সন্তানের অবস্থা গুরুতর। ট্রেনের ধাক্কায় শিশুদের হাত, পায়ের একাংশ কাটা দিয়েছে। মহিলার মাথায় ও পায়ে গুরুতর চোট রয়েছে। সেই সময়ে প্ল্যাটফর্মে ছিলেন জগন্নাথ সাহা। তিনি জানান, অনেক ক্ষণ ধরে মহিলা প্ল্যাটফর্মে বসেছিলেন। ট্রেন ঢোকার সময় আচমকা দৌড়ে গিয়ে লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে তাঁর কথায়, এনজেপি-তে রাজধানীর স্টপ আছে বলে ট্রেনের গতি কম ছিল।

পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীর মারা যাওয়ার খবর পেয়ে স্ত্রী আবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সকালে তাঁদের বাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে গিয়েছিলেন পুরকর্মীরা। তাঁদের ওই মহিলা ঘরে ঢুকতে দিতে চাননি বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, তিনি চেঁচিয়ে জানতে চান, কেন ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা এসেছেন! স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ির লোকদের বাইরে যেতে নিষেধ করেন। ওই বাড়িতে ওই শিক্ষকের দুই ভাই এবং তাঁদের পরিবারও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষকের স্ত্রী। পরিবারের লোকেরা কিছু বলছেন না দেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত খড়িবাড়ির একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ২ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি জ্বর নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় ওই দিনই। ৫ জুলাই থেকে তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। সোমবার বিকেলে তার করোনার সংক্রমণ রয়েছে বলে জানা যায়। সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ওই শিক্ষক মারা যান। মৃত শিক্ষকের শ্যালক বলেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছিলেন না আমার বোন। তবে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিতে গেলেন কেন, বুঝতে পারছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health COVID-19 Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy