Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

চাঁদার পুজোয় কর কিসের? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

দুর্গাপুজো যে বাংলার বৃহত্তম সামাজিক উৎসব, তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, নির্বাচনী তহবিল তো আয়কর ছাড় পায়।

সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০২:৫০
Share: Save:

অতীতে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে আয়কর দফতরের ‘চাপ’ অগ্রাহ্য করার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার কোন এক্তিয়ারে পুজো কমিটিগুলির কাছ থেকে আয়কর চাওয়া হচ্ছে, সরাসরি সেই প্রশ্ন তুললেন তিনি। সোমবার জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই বিষয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনমূলক রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

দুর্গাপুজো যে বাংলার বৃহত্তম সামাজিক উৎসব, তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, নির্বাচনী তহবিল তো আয়কর ছাড় পায়। তা হলে পুজো কমিটিগুলি আয়কর দেবে কেন? তিনি বলেন, ‘‘আমরা চার দিন যে দুর্গাপুজো করি, তা বিশ্বের মানুষের কাছে একটা বিস্ময়। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে যে-টাকা খরচ করে, তাতে, কর্পোরেট ফান্ডে ৮০জি আয়কর ছাড় আছে। পুজো কমিটিগুলো তো মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে উৎসব করে। তারা তো নিজস্ব আয় থেকে করে না। তা হলে পুজোগুলোর ক্ষেত্রে আয়কর ছাড় থাকবে না কেন?’’

মমতা জানান, পুজোয় চার দিনের উৎসবের পিছনে থাকে বিপুল মানুষের পরিশ্রম। বহু মানুষের জীবিকাও চলে পুজোকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, ‘‘পুজোয় কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়। পুজো কমার্শিয়াল (বাণিজ্যিক) নয়। এটা সামাজিক উৎসব। সরকার এদের থেকে আয়কর চাইতে পারে না। এরা সমাজকে আনন্দ দেয় এবং ধর্মীয় রীতি পালন করে। তাতে আয়কর দিতে যাবে কেন? এ তো মানুষের ট্যাক্সে পুজো। মানুষ তো ট্যাক্স দেয়, তারাই চাঁদা দেয়। একটা মানুষ কত বার ইনকাম ট্যাক্স দেবে? স্পনসর করা কোম্পানিও ইনকাম ট্যাক্স দেয়।’’

আয়কর দফতর গত বছরেও পুজো কমিটিগুলির কাছে নোটিস পাঠিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তখন প্রকাশ্যে পুজো কমিটিগুলিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তাঁরা যেন আয়কর দফতরের ‘চাপের’ সামনে মাথা নত না-করে। আয়কর না-দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন আয়কর নোটিস প্রসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে ফের বিভাজনমূলক রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচন এলে ওরা হিন্দু-মুসলমান করে। কখনও কখনও শিখ-খ্রিস্টান করে। কখনও আবার বাঙালি-অবাঙালিও করে। কখনও কখনও তো ও-পার বাংলা এ-পার বাংলাকে নিয়ে ভাগাভাগি করে। নির্বাচন চলে গেলে বড় বড় কথা! আয়কর দফতর ডাকে পুজো কমিটিগুলোকে।’’

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ বার দুর্গাপুজো কমিটিগুলির উপরে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় হিন্দুধর্ম। তার পরে বাংলার হিন্দুদের সব থেকে পবিত্র উৎসব দুর্গাপুজোয় আয়কর আদায় করা ঠিক হচ্ছে না। দেওয়াল, ইভিএম দখল করা যায়। হৃদয় দখল করা যায় কি? টাকা, সাইকেল, গাড়ি দিয়ে মাঝেমধ্যে অনেক কিছুই দখল করা যায়। কিন্তু মানুষের হৃদয় দখল করা যায় না। বিজেপি আগে মানুষের হৃদয় দখল করতে শিখুক।’’

জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো কারও জমিদারি নয়। রাজ্যের সামাজিক এবং রাজনৈতিক— সব স্তরেই বিজেপি ঢুকে পড়েছে। এ বার দুর্গাপুজোতেও ঢুকবে। তৃণমূল কি দুর্গাপুজোয় বিভাজনের রাজনীতি করে? তৃণমূলের ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন না-উঠলে বিজেপির ক্ষেত্রে তা উঠবে কেন?’’

পুজোকে অস্ত্র করে জনসংযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগে দিল্লিতে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুর্গাপুজোয় বিজেপির স্থানীয় নেতাদের সক্রিয় হতে হবে। এ ভাবেই ঢুকে পড়তে হবে ক্লাবগুলোতেও।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy