প্রতীকী চিত্র
উত্তরবঙ্গে পা দিয়েছে বর্ষা। হাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণবঙ্গে আসতে এখনও কিছু দিন দেরি আছে। কিন্তু তার মধ্যেই প্রায় প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ হালকা থেকে মাঝারি হলেও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বজ্রপাত। শুধুমাত্র সোমবার রাজ্যের ৫ জেলায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের।
কিন্তু কেন বজ্রপাতের পরিমাণ এত বাড়ছে? আবহাওয়ার কোনও বদল, না কি তার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে পরিবেশের কোনও বদলও?
সাধারণত কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়। সেই কারণে এই মেঘকে বজ্রগর্ভ মেঘও বলা হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে এপ্রিল-মে মাসে বাংলায় এই বজ্রগর্ভ মেঘের পরিমাণ বেড়েছে। তার একটা অন্যতম কারণ যেমন বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য, তেমনই আর একট কারণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত দূষণ। দূষণের মাত্রা যত বাড়ছে, গড় তাপমাত্রা তত বাড়ছে। ফলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হওয়ার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।
কিছু দিন আগেই ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়েছিল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তার প্রভাব সরাসরি পশ্চিমবঙ্গে ততটা না পড়লেও এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে রাজ্যে। সেই সঙ্গে মে মাস থেকেই বাংলায় তাপমাত্রা বেড়েছে। সকাল ও দুপুরের দিকে তীব্র গরম। সব মিলিয়ে স্থানীয় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হওয়ার আদর্শ পরিবেশ। আর তার ফলেই প্রায় প্রতিদিন বিকেলের পরে শুরু হচ্ছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাটমসফেরিক সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সুব্রত মিদ্যা বলেন, ''কিউমুলোনিম্বাস বা বজ্রগর্ভ মেঘ থেকেই সাধারণত বজ্রপাত হয়। পরিবেশে দূষণ বেড়ে যাওয়ায় তাপমাত্রা আগের থেকে অনেক বেশি থাকছে। ফলে বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ছে। এই বজ্রপাত সাধারণত অল্প জায়গায় মধ্যে 'ক্লাউড টু গ্রাউন্ড' অর্থাৎ মেঘ থেকে মাটির দিকে হচ্ছে।"
কিন্তু বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও কেন এত বাড়ছে? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেখা যাচ্ছে শহরের থেকে গ্রামীণ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। ফাঁকা মাঠে চাষের কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এর অন্যতম কারণ কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা উন্নত যন্ত্রপাতি। বর্তমানে চাষের কাজে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেশি হয়। আর এই সব যন্ত্রে বিদ্যুৎ আকর্ষিত হয়। সেই সঙ্গে ফাঁকা মাঠে কোনও উঁচু জায়গা না থাকায় মানুষের উপর বজ্রপাতের ঘটনা অনেক বেশি হচ্ছে।
মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হলে ফাঁকা মাঠে না গিয়ে বাড়িতেই থাকা, কিংবা বাইরে থাকলে কোনও বাড়ির নীচে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় বা বন্যার মতো বজ্রপাতের কোনও সতর্কবার্তা দেওয়া যায় কি না সে দিকেও জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy