রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন। তবে দেওয়া হতে পারে বেশ কিছু শর্তও। মস্কোর একাধিক সূত্র উল্লেখ করে এমনটাই জানাচ্ছে ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলি। গত মাসে আমেরিকার আধিকারিকদের সঙ্গে রুশ আধিকারিকদের এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেখানেই সাময়িক যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই যুদ্ধবিরতি আগামী দিনে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চূড়ান্ত শান্তি সমঝোতার পথ খুলে দিতে পারে। তিন বছর পর শান্তি ফিরতে পারে পূর্ব ইউরোপে।
আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার বার্তা দিয়েছেন ইউক্রেনকে। ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দেশকে এ বিষয়ে কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনড় মনোভাব শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি শান্তি চান। তবে ইউক্রেনের স্বাধীনতাকে তিনি খর্ব হতে দেবেন না। আমেরিকা এবং পশ্চিমি দুনিয়ার কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করেছে ইউক্রেন। সূত্রের খবর, ক্রেমলিনও সাময়িক বোঝাপড়ায় রাজি হয়েছে। তবে তাদের একাধিক শর্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন:
শুরু থেকেই রাশিয়ার প্রতি নরম-গরম নীতি নিয়েছেন ট্রাম্প। কখনও তিনি রাশিয়ার পণ্যে আরও শুল্ক আরোপ এবং আরও বিধিনিষেধের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কখনও আবার তাঁর মুখেই শোনা যাচ্ছে পুতিনের ভূয়সী প্রশংসা। শুক্রবারও (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউসে বসে ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুতিনকে তিনি বিশ্বাস করেন। পুতিন যুদ্ধ থামাতে আগ্রহী। এমনকি, ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনের চেয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করা তাঁর কাছে বেশি সহজ বলে মনে হচ্ছে। অনেকে বলছেন, রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ও, তারা একটি শান্তিরক্ষা মিশন স্থাপনের বিষয়ে জোর দেবে। সেই মিশনে কোন কোন দেশ থাকবে, তা-ও চুক্তির শর্তের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইতে পারে ক্রেমলিন।
ট্রাম্পের ‘রাশিয়া প্রীতি’ ইউক্রেন তো বটেই, ইউরোপের বন্ধু দেশগুলির মধ্যেও ভীতির সঞ্চার করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সেই কারণেই ওভাল অফিসে জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের প্রকাশ্য বিবাদের পর ইউরোপের বহু দেশ ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের আশঙ্কা, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করতে ইউক্রেনকে বাধ্য করবেন ট্রাম্প। তা ইউরোপের অধিকাংশ দেশ চাইবে না। জ়েলেনস্কির সঙ্গে বাদানুবাদের পর ইউক্রেনের সামরিক সাহায্য স্থগিত করে দিয়েছেন ট্রাম্প। সূত্রের খবর, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার উপর আমেরিকা যে যে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল, সেগুলি ক্রমে তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী মঙ্গলবার সৌদি আরবে মার্কিন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন ইউক্রেনের আধিকারিকেরা। জ়েলেনস্কি সৌদির রাজার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। তবে আমেরিকার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি থাকবেন না। তাঁর প্রতিনিধিরা থাকবেন।