কাটমানির বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ও বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র
নানা প্রকল্পের নামে নেওয়া ‘কাটমানি’র টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ওই ঘোষণার পরে জেলায় জেলায় তৃণমূলের কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছে ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে বিক্ষোভও শুরু হয়েছে। কিন্তু ‘কাটমানি’ বা তোলাবাজির টাকা উপরের স্তর থেকে বন্ধ করবে কে, সেই প্রশ্ন এ বার উঠতে শুরু করল শাসক দলের মধ্যে থেকেই। বিরোধীরাও প্রশ্ন তুলল, চুনো-পুঁটিদের তোলাবাজি আটকালেও রাঘব-বোয়ালদের বিচার করবে কে? তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীই তো আগে বলেছিলেন কর্মীরা যা টাকা তুলবেন, তার ৭৫% দলকে দিতে হবে!
বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কাটমানি’র পিছনে গোটা ‘চেন’কে ধরা সম্ভব কি? তাঁর কথায়, ‘‘আরও আগেই কাটমানি দেওয়া-নেওয়া বন্ধ করা উচিত ছিল। এখন হঠাৎ করে কাটমানি ফেরত দিতে বললেও সমস্যা। কারণ, কেউ তা ব্যাঙ্কে রেখে দেয় না! আর কাটমানির পিছনে চেনকে ধরা সম্ভব কি?’’ তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘ধরুন, সামনের যে এক বা দু’জন এক বা ২% কাটমানি নিয়েছিল। তার কাছ থেকে সেটা ফেরত নিয়ে হয়তো তাদের আটকানো হল। কিন্তু একদম উপরে বসে যে এত দিন ১০% কাটমানি নিচ্ছিল, সে এ বার পুরোটাই নিজে নেবে!’’ প্রশ্ন করা হলেও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
শতাব্দীর আশঙ্কা, ‘কাটমানি’ ফেরতের ঘোষণার ফলে বিরোধীরা সুযোগ পেয়ে যাবে আরও জলঘোলা করার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতারা নানা কাজের নামে অনেক দিন ধরেই যে তোলা তুলছেন, সেটা কি এখন জানা গেল? মুখ্যমন্ত্রীর দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এখন নাটক করে লাভ কী?’’ সিপিএম নেতারা আবার মুখ্যমন্ত্রীরই গত বছরের একটি সভার রেকর্ড দেখাচ্ছেন, যেখানে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের বলছেন ৭৫% টাকা দলকে দিতে হবে। তাঁদের অভিযোগ, ৭৫-২৫ বখরা ভাগাভাগির নিদান তৃণমূল নেত্রীই দিয়েছেন!
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি এক কোটি ৮৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি করাও তো এক ধরনের তোলাবাজি! তিনি কি টাকা ফেরত দেবেন? ভাইপোকে দিয়ে টাকা ফেরাবেন?’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলছেন, ‘‘টিভি ক্যামেরার সামনে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের কাটমানি নেওয়ার ছবি ধরা পড়েছিল নারদ-কাণ্ডে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আগে জানলে টিকিট দিতেন না। পরে আবার তাঁদেরই মন্ত্রী করেছেন! তা হলে মুখ্যমন্ত্রী সত্যিই এ সব বন্ধ করতে চান—মনে করব কী ভাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy