সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বিজেপির রাজ্য স্তরের প্রশিক্ষণ শিবির এই প্রথম।
বিজেপি নেতাদের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। আগামী ২৯ অগস্ট থেকে শুরু হবে প্রশিক্ষণ শিবির। কলকাতার বৈদিক ভিলেজে হবে শিবির। যোগ দেবেন সব রাজ্যনেতা। সেই সঙ্গে জেলা সভাপতি এবং জেলার ইনচার্জরাও থাকবেন শিবিরে। তিন দিন শিবিরে থাকতে হবে ১৬ সাংসদ এবং ৭০ বিধায়ককে। বিভিন্ন শাখা সংগঠনের প্রধান নেতাদেরও ডাকা হবে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা তো থাকবেনই। সেই সঙ্গে শিবিরে মূল প্রশিক্ষকের ভূমিকায় থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ।
বিজেপিতে এমন প্রশিক্ষণ শিবির অবশ্য নতুন নয়। মাস খানেক আগেই মহিলা মোর্চার এই ধরনের একটি শিবির হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে। তবে সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বিজেপির রাজ্য স্তরের প্রশিক্ষণ শিবির এই প্রথম। কিন্তু কী শেখানো হবে নেতাদের? কী কী বিষয় থাকবে প্রশিক্ষণে? অতীতে এমন শিবিরে যোগদানকারী রাজ্য বিজেপির এক নেতা জানান, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) ভাবধারায় চলে বিজেপি। একেবারে সঙ্ঘের শিবিরের মতো না হলেও তারই অনুকরণে হয় এই ধরনের শিবির। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঠাসা কর্মসূচি থাকে। একটার পর একটা বিষয়ভিত্তিক ক্লাস করতে হয় নেতাদের। তাতে যেমন রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ থাকে তেমনই বিজেপির আদর্শগত ভাবনার শিক্ষাও দেওয়া হয়।
এই প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রথম শর্ত হল, একান্ত অসুবিধা না থাকলে সকলকেই টানা ৭২ ঘণ্টা শিবিরে থাকতে হবে। রাতে বাড়ি ফেরার অনুমতি থাকে না। কেউ কোনও নিরাপত্তা কর্মী বা গাড়ি নিয়েও যেতে পারবেন না শিবিরে। যত বড় স্তরের নেতাই হোন না কেন, সকলকে একই ভাবে থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা থেকে নির্দিষ্ট সময়ে শুতে যাওয়ার নিয়ম মেনে চলতে হয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘বিজেপি সাধারণ রাজনৈতিক দল নয়। একটা আদর্শের ভিত্তিতে গোটা দেশে বিজেপি একই ভাবে চলে। সেই আদর্শের শিক্ষা নিতেই এমন শিবির হয়। সেখানে রাজনীতির পাঠও নিতে হয়। তবে সকলের আগে একজন ভাল মানুষ হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’’ কী কী শেখানো হয়? দিলীপ বলেন, ‘‘নানা কার্যক্রম থাকে। কিন্তু মূল শিক্ষা একটাই— সবার আগে রাষ্ট্র। তার পরে দল। তার পরে ব্যক্তি। এটাই বিজেপির মূলমন্ত্র।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা শিবিরে যোগ দেবেন, তাঁদের সকালে ঘুম থেকে উঠে যোগাভ্যাস করতে হবে। সেই সঙ্গে দেশাত্মবোধক গান একসঙ্গে গাইতে হবে। এর পরে বিভিন্ন স্তর ও বিষয় অনুযায়ী ভাগে ভাগে হবে বৈঠক। সেখানে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হবে, তেমনই বুথ স্তরে সংগঠন বাড়ানোর জন্য কী ভাবে কাজ করতে হবে, সেই প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। কর্মীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে, নেতাদের সেই প্রশিক্ষণও যেমন দেওয়া হবে, তেমনই শেখানো হবে কী ভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা আদায় করে নিতে হবে। আদর্শ নেতা হওয়ার গুণাবলির পাঠ নিতে হবে। সেই সঙ্গে জানতে হবে দলের ইতিহাস। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, দীনদয়াল উপাধ্যায় থেকে অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো দলের ‘প্রেরণাপুরুষ’-দের জীবনগাথা।
শুধু লেখাপড়া নয়, বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে খাওয়াদাওয়ার নিয়মেও রয়েছে বিশেষত্ব। জানা গিয়েছে, সকলকে ‘ভোজনমন্ত্র’ উচ্চারণের পরেই খেতে হবে। আবার প্রতি সন্ধ্যাতেই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে শিবিরে যোগ দেওয়া নেতানেত্রীদেরই অংশগ্রহণ করতে হয়। শেষ দিনে হয় শপথগ্রহণ। সকলকে দলের জন্য কোমর বেঁধে কাজ করা এবং ‘তন-মন-ধন’ দিয়ে দেশের কাজে লাগার শপথ নিতে হয়। বিজেপি সূত্রের দাবি, গোটা দেশেই একই পদ্ধতিতে একই নিয়ম এমন প্রশিক্ষণ শিবির হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy