—প্রতীকী ছবি।
সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুমড়ে যাওয়া গাড়িটার ছবি দেখেই চমকে উঠেছিলেন রাজেন গুপ্ত। আসানসোলের পদ্মপুকুর লাগোয়া নামোপাড়ার বাসিন্দা রাজেনবাবুর মনে পড়েছিল, এই গাড়িটাতে চড়েই তো রবিবার বিকেলে এলাকার পাঁচ জন পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন। সঙ্গে-সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁক-ডাক করে প্রতিবেশীদের জড়ো করেন তিনি। খোঁজখবর শুরু হয়। সকাল ৮টা নাগাদ দুঃসংবাদটা এসে পৌঁছয়, পুরুলিয়ায় বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। বাকি দু’জন গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পদ্মপুকুর লাগোয়া এলাকায় পাশাপাশি তিনটি পাড়ার বাসিন্দা ওই পাঁচ জন হরিহর আত্মা। তাঁরা আগেও এক সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছেন। এ দিন খবর পাওয়ার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত চিরঞ্জিত কুণ্ডুর প্রতিবেশী মায়া গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘চিরঞ্জিত পরিবারের একমাত্র সন্তান। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। কী ভাবে সংসার চলবে জানি না!’’ ওষুধ দোকানের কর্মী চিরঞ্জিতের বাড়ির লোকজন দুর্ঘটনার খবর পেয়েই পুরুলিয়া রওনা হয়ে যান।
ছেলের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর থেকে ধরে রাখা যাচ্ছিল না সুজিত মণ্ডলের মা ছবিদেবীকে। তাঁর আর্তনাদ ছড়িয়ে পড়ছিল গোটা এলাকায়। কাকা আশু মণ্ডল বলেন, ‘‘সুজিত অন্যের গাড়ি চালাত। বাইরে ওরা সব সময় পাঁচ বন্ধু মিলেই যেত। কিন্তু এমন ঘটে যাবে, কে জানত!’’ সুজিতের বন্ধু মিলন ঘোষ বলেন, ‘‘অন্যের আপদে বিপদে সব সময় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ত ও।’’ প্রতিবেশীদের কাছেই দুর্ঘটনার খবরটা পেয়েছিলেন মৃত তপন ভট্টাচার্যের ভাই দিলীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘সকালে অনেকে দাদার কথা জিজ্ঞাসা করায় সন্দেহ হচ্ছিল। তার পরেই খারাপ খবরটা পাই।’’ সোমবার দুপুরে পদ্মপুকুর এলাকার মোড়ে-মোড়ে ছিল বাসিন্দাদের জটলা। সবার মুখে শোকের ছায়া। তাঁরা জানান, এ বার আর এলাকায় দীপাবলির প্রদীপ জ্বলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy